Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভারতীয় চালে সর্বনাশ সিন্ডিকেটের পকেটে লাভের টাকা

সরকার আদম আলী, নরসিংদী থেকে | প্রকাশের সময় : ২৯ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:৪৩ এএম

চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে ভারত থেকে আমদানি করে দেশের কোন উপকার হচ্ছে না। প্রচুর পরিমাণে ভারতীয় চাল আমদানি হয়েছে। কিন্ত বাজার মূল্যের ওপর কোন প্রভাব পড়েনি। গত মাসাধিককালে চালের বাড়তি মূল্য কমেনি। আমদানিকৃত ভারতীয় চালও ঊর্ধ্ব মূল্যেই বিক্রি হচ্ছে। এতে স্থানীয় ক্রেতারা পড়েছেন বিপাকে।

বর্তমান বাজারে দেশীয় নাজিরশাইল চাল বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৬৮ টাকা, বাংলামতি চাল ৬৮ টাকা, মিনিকেট ৬০ টাকা, কাজললতা ৫৬ টাকা, ২৮ ও ২৯ ভ্যারাইটির চাল বিক্রি হচ্ছে ৫২ টাকা, ৪৯ ভ্যারাইটির চাল বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা। চালের এই মূল্য স্বাভাবিক থেকে কেজিপ্রতি ৩১ টাকা বেশি। আর ভারত থেকে বাহারি রঙের পলিব্যাগে আমদানিকৃত চাল বিক্রি হচ্ছে ৬৪ টাকা কেজি দরে। এক্ষেত্রে ভারত থেকে চাল আমদানি করে লাভ হয়েছে শুধু আমদানিকারক, আড়তদার এবং পাইকারি ব্যবসায়ী বা চাল সিন্ডিকেটের।
একদিকে আমদানিকারকরা সরকারের ছাড় দেয়া আমদানি শুল্কের ৩৭ শতাংশ সুবিধাও ভোগ করছে অপরদিকে আমদানিকৃত চাল বাড়তি মূল্যে বিক্রি করে পকেট ভর্তি করছে। চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের প্রচেষ্টা কোন কার্যকর ভ‚মিকা রাখতে পারছে না। চাল নিয়ে চালবাজি বন্ধ করতে পারছে না সরকার। ভারত থেকে চাল কেনা হয়েছে ৩৪ টাকা কেজি দরে আর বাংলাদেশের বাজারে সে চাল বিক্রি হচ্ছে ৬৪ টাকা কেজি দরে। দেশের চাল সিন্ডিকেট বাজারে চালের মূল্য বাড়িয়ে সাধারণ মানুষের পকেট থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। আবার ভারত থেকে চাল আমদানির সুবিধা নিয়েও একই পরিমাণ মুনাফা লুটে নিচ্ছে। দেশে চালের উৎপাদন ঘাটতির সুযোগ চাল সিন্ডিকেট বছরের পর বছর ধরে মুনাফাখোরী করে চলছে।

জানা গেছে, ২০১৯ সালের আমন ধান কাটার মৌসুম থেকে চালের মূল্য বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। এরপর ২০২০ সালের বোরো মৌসুমে ধান কাটার সময়ও চালের মূল্য বৃদ্ধি অব্যাহত থাকে। সেই ধারাবাহিকতায় গত আমন মৌসুমেও চালের মূল্য বৃদ্ধি পায়। এমনিভাবে দুই টাকা তিন টাকা করে চালের মূল্য বাড়তে বাড়তে এক বছরে ১৮ দফা বৃদ্ধি পেয়ে চালের মূল্য অস্বাভাবিক পর্যায়ে চলে যায়। ২৯ টাকা কেজির চাল বর্তমান বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৬৮ টাকা কেজি। নরসিংদী বাজারসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে আড়ৎগুলোতে রঙবেরঙের ভারতীয় চালের পলিব্যাগে সয়লাব হয়ে যাচ্ছে। ভারতীয় চালের বস্তাগুলোতে চালের ভ্যারাইটির নাম উল্লেখ নেই। বস্তার ওপরে স্ট্রবেরি ফলের ছবি দিয়ে লেখা স্ট্রবেরি মার্কা। প্রতি কেজি চাল বিক্রি হচ্ছে ৬৪ টাকা দরে।

ক্রেতাসাধারণ বলছেন, এ বছর ভারতে চালের উৎপাদন ভালো হয়েছে। যার কারণে ভারত চালের রফতানি মূল্য কমিয়ে দিয়েছে কেজিপ্রতি ৭/৮ টাকা। ভারতের বাজারে ১ কেজি চাল বিক্রি হচ্ছে ৩৪ টাকা দরে। আমদানিকারকরা সেই ৩৪ টাকা কেজির চাল এনে বিক্রি করছে ৬৪ টাকা কেজি দরে। এতে সরকারের চাল আমদানির উদ্দেশ্য সফল হচ্ছে না। সবই চলে যাচ্ছে সিন্ডিকেটের পেটে। গত নভেম্বর ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত চালের মূল্য অস্বাভাবিক বেড়ে বর্তমানে স্থিতাবস্থায় রয়েছে। কিন্তু মূল্য কমে আসার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। ভারত থেকে চাল আমদানি করে ও যদি চালের মূল্য কমানো না যায় তবে সরকারের বাজার নিয়ন্ত্রণ প্রচেষ্টা সবদিক থেকেই ব্যর্থ হবে বলে আশঙ্কা করছেন ভোক্তারা।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ