Inqilab Logo

বুধবার ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

করোনা কেড়ে নিলো বাংলাদেশ ক্রিকেট পুরোধা রাইসউদ্দিনকেও

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২০ জানুয়ারি, ২০২১, ৩:৪২ পিএম

 

এই প্রজন্মের ক্রিকেটপ্রেমীরা বাংলাদেশ ক্রিকেটের রমরমা দেখে অভ্যস্ত। কিন্তু স্বাধীনতার পর ব্যাপারটা ছিল ঠিক উল্টো। ক্রিকেটকে তখন শুরু করতে হয়েছিল একেবারে শূন্য থেকেই। অর্থ নেই, স্বীকৃতি নেই—কঠিন পরিস্থিতি। সেই সময় যে কজন ক্রিকেট সংগঠক দেশের ক্রিকেটকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছিলেন, যাঁদের হাত ধরে বাংলাদেশের ক্রিকেটের যাত্রা শুরু, তিনি রাইসউদ্দিন আহমেদ।

চলে যাওয়ার জন্য এমন একটা দিন বেছে নিলেন তিনি! করোনার কারণে ১০ মাস আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বাইরে ছিল বাংলাদেশ। সেই মার্চ মাসের পর আজই প্রথম ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে ম্যাচ দিয়ে বৈশ্বিক ক্রিকেটে ফিরল বাংলাদেশ। আর এদিনই চলে গেলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটের শুরুর দিনগুলোর অন্যতম পুরোধা রাইসউদ্দিন। ৮২ বছর বয়সে মারা গেছেন বিশিষ্ট এই ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।

নিজেদের সাংগঠনিক দক্ষতা দিয়ে রাইসউদ্দিন আহমেদরাই দেশের ক্রিকেটকে নিয়ে গেছেন বিশ্বদরবারে। আইসিসির সহযোগী সদস্যপদ লাভ, বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের যাত্রা শুরু, বিদেশি দলের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ—দেশের ক্রিকেটের শুরুর গল্পে এক বড় জায়গা জুড়েই আছেন রাইসউদ্দিন আহমেদ।

বাংলাদেশ বিমানের চিফ অব অ্যাডমিন ছিলেন তিনি। সেই সুবাদে লন্ডন যাওয়া হতো তার প্রায়ই। এমসিসিতে (মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাব) তার যাতায়াত ছিল নিয়মিত। সেই সম্পর্ক থেকেই তিনি এমসিসি দলকে আমন্ত্রণ জানান বাংলাদেশে। ১৯৭৭ সালে সফরে আসে অভিজাত এই ক্লাব। বাংলাদেশ বিমান থেকে টিকেটের ব্যবস্থাও করেছিলেন তারা। বাংলাদেশ ক্রিকেটে স্পন্সর প্রথাও শুরু হয় তখন থেকে।

সেই সফর থেকে ফিরে এমসিসি দল ইতিবাচক রিপোর্ট দেওয়ার পরই বাংলাদেশের আইসিসি সহযোগী সদস্যপদ হওয়ার পথ খুলে যায়। এই যাত্রাপথে সঙ্গী হিসেবে পেয়েছিলেন নির্মাণের জনক কে জেড ইসলাম, বাহাউদ্দিন আহমেদ ও রেজা-ই-করিমদের মতো যোগ্য সংগঠকদের। যাদের হাত ধরে আজকের বাংলাদেশের ক্রিকেট মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে বিশ্ব দরবারে।

শুধু ক্রিকেটই নয়, ঐতিহ্যবাহী সেন্ট গ্রেগরিজ স্কুলের ছাত্র থাকা অবস্থাতেই তিনি জড়িয়ে পড়েন বিভিন্ন খেলার আয়োজনে, সংগঠনে। ফুটবল, ক্রিকেট, হকি, স্কোয়াশ—সব জায়গায় ছিল তাঁর বিচরণ। ওই বয়সেই তিনি পূর্ব পাকিস্তান স্পোর্টস ফেডারেশনের গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হন। পাকিস্তান বাস্কেটবল ফেডারেশনের সহসভাপতির পদও অর্জন করেন তিনি।

এমন একজন ক্রীড়া সংগঠককে হারিয়ে কাতর বাংলাদেশের ক্রিকেট, কাতর দেশের ক্রীড়াঙ্গণও। গভীর শোক ও শ্রদ্ধা ভরে তাকে স্মরণ করেছে বাংলাদেশ ক্রিবেট বোর্ড, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন, হকি ফেডারেশনসহ সকল ক্লাব ও সংগঠকেরা। শোক জানিয়েছে তারই যোগ্য সন্তান আশফাক আহমেদের প্রতিষ্ঠান কে-স্পোর্টসও।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ