নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগই বলি কিংবা ইউরোপিয়ান ফুটবল- একে অপরের মুখোমুখি যখন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড এবং লিভারপুল, নির্দিধায় মৌসুমের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের ট্যাগ দিয়েই দেয়া যায় এটিকে। অ্যানফিল্ডে রেড ডেভিলদের সামনে যখন টেবিলের শীর্ষ স্থানটা পোক্ত হবার সুযোগ আর অল রেডদের কাছে মান বাঁচানোর- তখন ধ্রুপদী লড়াই না বলে কি উপায় থাকে? করোনা পরবর্তি নিয়মনীতি মেনে সীমিত হলেও লিগে দর্শক ফেরানোয় সমুদ্র না হলেও লাল দূর্গে পরিণত হতে বাধা থাকছে না আজ রাতে। আর তাতে জয়ের ঝান্ডা ওড়াতে প্রস্তুত দুদলই। তবে ঘরের মাঠের সুবিধা নিয়ে জয় দিয়েই নিজেদের টেবিলের টপারের জায়গাটা পুনরুদ্ধার করতে মরিয়া ক্লপ বাহিনী।
ইতিহাস বলি, আর ঐতিহ্যই- এ ম্যাচটার তুলনা শুধুই নিজেরা। এল ক্ল্যাসিকো কিংবা ক্ল্যাসিকো কোনোটার সঙ্গেই মেলানো যাবে না এর ধ্রুপদী দ্বন্দ্ব। ক্লাব ফুটবলের জমজমাট লড়াইয়ের তীর্থস্থান প্রিমিয়ার লিগের সবচেয়ে বড় ম্যাচের ইন্ডি লিভারপুল-ম্যানচেস্টার শহর ছাড়িয়েও যার প্রভাব পড়ে পুরো ফুটবল দুনিয়ায়। তবে সময়ের ফেরে কয়েক বছর ধরে অনেকটাই জৌলুস হারিয়েছিল লাল দুর্গের লড়াই। কিন্তু চলতি মৌসুমে আবারো টগবগিয়ে ফুটছে অ্যানফিল্ড। কারণটাও খুব পরিষ্কার। এটা যে টেবিল টপের লড়াই। জিতলেই, শিরোপার রেসে এগিয়ে যাওয়া যাবে অনেকটা।
৩০ বছর পর শিরোপা এসেছিল অলরেডদের ঘরে। যে কোনো মূল্যে এটাকে আটকাতে হবে। চাপটা তাই পাহাড়সম ইয়ুর্গেন ক্লপের। ফিফার সেরা কোচ হয়েছেন গত মৌসুমে। নিজের সম্মানটাও যে বাঁচাতে হবে এ জার্মানকে। তবে, প্রতিপক্ষ যখন রেড ডেভিল, বিষয়টা যে সহজ হবে না জানা আছে তার।
ইনজুরি কিছুটা চিন্তায় রেখেছে লিভারপুল শিবিরকে। কেইটা, ভার্জিল ভ্যান ডাইক, গোমেজ, দিয়েগো জোতারা থাকছেন না বাঁচা-মরার এ লড়াইয়ে। তবে, থিয়েগো আলকান্তারার অন্তর্ভুক্তি সাহস বাড়িয়েছে তাদের। সঙ্গে হেন্ডারসন, ফ্যাবিনহোকেও পাবেন ক্লপ। তবে, সাদিও মানে, ফিরমিনো এবং মোহাম্মদ সালাহ জ্বলে উঠলে অন্য কোনোকিছু নিয়েই আর ভাবতে হবে না অল রেডদের। লিভারপুল কোচ বলেন, ‘ম্যানচেস্টার কখনোই আন্ডারডগ নয়। কেউ যদি এটা ভেবে থাকে, সে বোকার স্বর্গে বাস করছে। ক্লাবটির কিছুটা বাজে সময় গিয়েছিল, এখন তারা ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আর এ ম্যাচ জিতলেও আপনি শিরোপা জিতে যাবেন না, আবার হারলেই সব শেষ হয়ে যাবে না। তবে, এটা আমাদের সম্মানের লড়াই। পয়েন্ট টেবিলের চেয়েও এটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এখানে কেউ হারতে চাইবে না। আমি ছেলেদের বলেছি, যে কোনো অবস্থাতেই জয় চাই।’
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের গল্পটা অবশ্য একটু আলাদা। শেষ কয়েকটা মৌসুম টেবিলের জায়গাটা হাতড়ে বেড়িয়েছে রেড ডেভিলরা। তবে, করোনা বাধা অতিক্রম করে নতুন মৌসুমে পা দিতেই বদলে যায় রাশফোর্ড-পগবাদের চাল চলন। প্রতিপক্ষদের ছিঁড়েখুঁড়ে জয় তুলে নিতে থাকে ওলে গানার বাহিনী। একটা সময় কিছুটা পিছিয়ে গেলেও, ঘুরে দাঁড়িয়েছে সঙ্গে সঙ্গেই। যার বড় প্রমাণ, ইপিএলের পয়েন্ট তালিকা। ১৭ রাউন্ড শেষে শীর্ষ স্থানটা দখল করে বসে আছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড।
এ ম্যাচে জিতলে, লিভারপুলের সঙ্গে ব্যবধানটা বেড়ে যাবে ডেভিলদের। শিরোপাটাও হাতছানি দেবে থিয়েটার অব ড্রিমের ক্লাবটাকে। কিন্তু লড়াইয়ের আগে দুশ্চিন্তায় ওলে গানার। ইনজুরি কেড়ে নিয়েছে তার উইলিয়ামস এবং জোনসকে। ম্যাচ ফিটনেস নিয়ে শঙ্কায় আছে মার্শিয়াল এবং মাতিচ। তবে, কাভানির ফিরে আসা অনেকটা চাঙ্গা করেছে ইউনাইটেডকে। সঙ্গে পগবা-রাশফোর্ডদের ফর্ম স্বপ্ন দেখাচ্ছে তাদের।
ইউনাইটেড কোচ ওলে গানার সুলশার জানান, প্রতিপক্ষ এমন শক্তিশালী হলে, ম্যাচ খেলতে সবসময় ভালো লাগে। প্রতি মুহ‚র্তে আপনাকে নতুন করে পরিকল্পনা করতে হয়। উত্তেজনা অনেক বেশি থাকে। লিভারপুলের সঙ্গে ম্যাচটা নিয়ে আমরা খুবই এক্সাইটেড। জিতলে টেবিলের লড়াইয়ে অনেকটা এগিয়ে যাব। তাই, দলও অনেক উজ্জীবিত। ছেলেদের ফর্মটাও ভালো আছে।
আবার লিভারপুলের মাঠ অ্যানফিল্ড স্টেডিয়ামে কেমন হবে মহারণটা? কেই-বা ফেভারিট? ইউনাটেড কোচ অবশ্য এগিয়ে রাখছেন প্রতিপক্ষকেই, ‘আমরা চ্যালেঞ্জার্স এবং তারা চ্যাম্পিয়ন। সময়ের পরিক্রমায় তাদের হারানোটা হবে বিস্ময়কর। ফেভারিট তারাই। আর খেলাটাও হচ্ছে তাদেরই মাঠে।’ ঠিক উল্টো দাবি করে বসলেন আবার লিভারপুল কোচ, ‘ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড কখনোই আন্ডারডগ নয়। ওরা লিগের ইতিহাসের সবচেয়ে সফল দল। এই মৌসুমে ওরা যেভাবে ফিরে এসেছে সেটা দুর্দান্ত। আমরা জানি ওরা এখন শীর্ষ দল। কাজেই কোনোভাবেই তারা হালকা নয়।’ আসলে বড় ম্যাচগুলোর বৈশিষ্ট্যই এমন। প্রত্যাশার চাপ কেউ নিতে চায় না। এ কারণেই ফেভারিটের তকমা লিভারপুলের কাঁধে চাপাচ্ছে ম্যানইউ। আর ম্যানইউর গায়ে তা আবার মেখে দিচ্ছে লিভারপুল! পরিসংখ্যান অবশ্য খুশি করবে না কাউকেই। সেখানে যে একচ্ছত্র আধিপত্য নেই কারোই। সব প্রতিযোগীতা মিলে দু’দল মুখোমুখি হয়েছে ২৩২টি ম্যাচ। যাতে ম্যানইউর ঝুলিতে জয় কিছুটা বেশি- ৮৮টি, লিভারপুল জিতেছে ৭৭ ম্যাচ আর বাকি ৬৭টি ম্যাচ হয়েয়ে নিষ্ফলা ড্র। শেষ দেখাটাও ম্যাড়ম্যাড়ে ড্র হওয়ায়, নিরুত্তাপ লড়াইয়েরও আশঙ্কা করছেন সমর্থকরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।