পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সরকারি-বেসরকারি বেশ কয়েকটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের পর্যবেক্ষণ হচ্ছে করোনাকালে মানুষের ব্যয় বেড়েছে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে ব্যয় বাড়লেও মানুষ আগের চেয়ে সঞ্চয় করছে বেশি। দেখা যাচ্ছে, ব্যাংকে আমানতে সুদ কমে গেলেও মানুষ সঞ্চয়ের ক্ষেত্রে ব্যাংকেই পছন্দের তালিকায় প্রথমে রাখছে। টাকা রাখার ক্ষেত্রে দ্বিতীয় তালিকায় রয়েছে জাতীয় সঞ্চয়পত্র। এছাড়া শেয়ারবাজারেও মানুষ এখন বিনিয়োগ শুরু করেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, বিদায়ী ২০২০ সালের প্রথম নয় মাসে ব্যাংকগুলোতে আমানত বেড়েছে ৯৮ হাজার কোটি টাকা। অপরদিকে ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসেই (জুলাই থেকে নভেম্বর) মানুষ ১৯ হাজার ৪৪ কোটি ৯২ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র কিনেছেন। আর গত ছয় মাসে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ হয়েছে প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকা। গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে পাঁচ লাখ এক হাজার ৭০৯ কোটি টাকা। যদিও ছয় মাস আগে, অর্থাৎ জুলাই মাসের শুরুতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন ছিল তিন লাখ ১১ হাজার ৭৭৫ কোটি টাকা। শুধু তাই নয়, এই ছয় মাসে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের মাধ্যমে কালো টাকা সাদা করেছেন ২০৫ জন। তাদের কাছ থেকে সরকার কর পেয়েছে ২২ কোটি ৮৪ লাখ টাকা।
গত বছরের ১ এপ্রিল থেকে ঋণের সুদহার নয় শতাংশ বাস্তবায়ন করার পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংক আমানতের সুদ ছয় শতাংশের নিচে নামিয়ে এনেছে। অপরদিকে কিছু কিছু ব্যাংকের আমানতের সুদ দুই শতাংশ পর্যন্ত নেমেছে। তবুও প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ব্যাংকে প্রচুর পরিমাণ আমানত আসছে। তবে এখনও সঞ্চয়পত্রের সুদ ১২ শতাংশ হওয়ার কারণে ১০ শতাংশ ট্যাক্স দেওয়ার পরেও মানুষ সঞ্চয়পত্রের দিকেও ছুঁকছেন।
এ প্রসঙ্গে ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) সংগঠন এবিবি’র সাবেক চেয়ারম্যান ও মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, করোনায় বিনিয়োগ পরিস্থিতি ভালো নেই। যে কারণে ব্যাংক থেকে টাকা নেওয়ার আগ্রহ তো নেই-ই উল্টো ব্যাংকে টাকা রাখছেন অনেকে। আবার করোনায় খরচও কমেছে অনেকের। এ কারণে মানুষ এখন সঞ্চয়ের প্রতি মনযোগী। যার ফলে ব্যাংকে আমানত বাড়ছে। একই কারণে সঞ্চয়পত্রের বিক্রি ও শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ বাড়ছে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, করোনায় ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার চিন্তায় মানুষ টাকা জমানোর প্রতি গুরুত্ব দিয়েছে। করোনার কারণে অনেকেরই বাহুল্য খরচ কমেছে। এ কারণে টাকা জমানোর পরিমাণ বেড়েছে। এছাড়া এজেন্ট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং তথা ডিজিটাল পদ্ধতিতে টাকা জমা দেয়ার সুযোগ চালু হওয়ায় এর বড় প্রভাব পড়েছে।
এ প্রসঙ্গে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, করোনায় বিলাসিতা করার সুযোগ ছিল না। ফলে অনিশ্চয়তার চিন্তায় মানুষ টাকা জমানোর প্রতি গুরুত্ব দিয়েছে। তবে মানুষের সঞ্চয় বাড়ার প্রধান কারণ প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স। করোনাকালে গত কয়েক মাসে প্রবাসীদের রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় অতিরিক্ত অর্থ নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে প্রবাসীরা ব্যাংক, সঞ্চয়পত্র ও শেয়ারবাজারকে বেছে নিয়েছেন। এছাড়া বিনিয়োগ না থাকাও এর অন্যতম কারণ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নয় মাসে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাংক থেকে আমানত তুলে নিলেও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির আমানত রাখা বেড়েছে। পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের শেষে ব্যাংকগুলোতে মোট আমানতের পরিমাণ ছিল ১২ লাখ ১৪ হাজার ৪৫৫ কোটি টাকা, ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ লাখ ১২ হাজার ৬২৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নয় মাসে আমানত বেড়েছে ৯৮ হাজার ১৭৪ কোটি টাকা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।