পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নাটোরের বড়াইগ্রামের তরুণ নাইমুর রহমান শোভন (২৪)। বাবা-মায়ের অত্যন্ত আদরের ছোট সন্তান। লেখাপড়া শেষ না হতেই অসুস্থ বাবা-মায়ের দায়িত্ব নিতে নরসিংদীতে একটি বেসরকারী কোম্পানীতে বিক্রয় কর্মকর্তা হিসাবে চাকরি নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সংসারের হাল ধরার স্বপ্ন পূরণ হওয়ার আগেই চাকরি নেয়ার মাত্র দু’মাসের মাথায় দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে নির্মমভাবে প্রাণ দিতে হলো তাকে।
গতকাল সোমবার সকালে নরসিংদী শহরের ভেলানগরের চিনিশপুর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের সামনে থেকে তার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শোভন বড়াইগ্রাম উপজেলার তারানগর গ্রামের শফিকুর রহমান ওরফে বক্কার মুহুরীর ছেলে। তিনি নরসিংদীতে সেঞ্চুরি এগ্রো লিমিটেড নামের একটি ভেটেরিনারি ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ছুটি কাটিয়ে বাড়ি থেকে যাবার দুদিনের মাথায় এমন আকস্মিক মৃত্যু সংবাদে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন তার অসুস্থ বাবা-মাসহ স্বজনরা।
নিহতের স্বজনরা জানান, শোভন নাটোর এনএস সরকারি কলেজ থেকে অনার্স পাশ করে চাকরিতে যোগ দেন। তিনি নরসিংদী শহরের ভেলানগর এলাকার ঢাকা বাসস্ট্যান্ডের পেছনে একটি মেসে ভাড়া থাকতেন। গত শনিবার তিনি দুদিনের ছুটি কাটিয়ে বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলে নরসিংদী যান। এ সময় আশিক নামে এক বন্ধুও তার সঙ্গে যায়। গতকাল সোমবার ভোরে বন্ধুকে ঢাকায় যাবার ট্রেনে তুলে দিয়ে তিনি মোটরসাইকেলেই মেসে ফিরছিলেন। পথে অজ্ঞাত খুনীরা তাকে এলোপাথাড়ি ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে। স্থানীয়রা খবর দিলে ভেলানগরের চিনিশপুর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের সামনে থেকে তার রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নিহতের লাশ আনতে নরসিংদীতে থাকা চাচাতো ভাই বিপ্লব মোবাইলে জানান, সকালে খবর পেয়ে আমরা তার লাশ নিতে এসেছি। তার বুক, হাতসহ শরীরের পাঁচ জায়গায় ছুরিকাঘাত করেছে দুর্বৃত্তরা। লাশের পাশেই তার বাইকটি পড়ে ছিল। টাকা-পয়সা, মোবাইল সবই আছে-শুধু ভাই নেই। কি কারণে কারা তাকে হত্যা করেছে কিছুই বুঝতে পারছি না।
গতকাল সোমবার দুপুরে সরেজমিনে উপজেলার তারানগর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, স্বজনদের কান্নায় হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়েছে। এ সময় নিহত শোভনের বৃদ্ধা দাদী টুলু বেওয়া (৭৫) বুক চাপড়ে বিলাপ করতে করতে বলেন, আমার নাতি খুবই ভাল ছেলে। লেখাপড়া শেষ না হতেই চাকরি নিয়েছিল আমাদের জন্য। কিন্তু কারা আমার বুকের মানিককে কেড়ে নিলো, এ বিচার কার কাছে চাইবো। নিহতের মা ইতি বেগম কান্না চাপতে চাপতে বলেন, আমি চাইনি ছেলে এখনই এতো দূরে গিয়ে চাকরি করুক, কিন্তু বাবা অসুস্থ। সংসারের কথা ভেবে আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে চাকরিতে গিয়েছে। কাজের ব্যাঘাত ঘটে বলে এবার এসে মোটরসাইকেল নিয়ে গেলো। কিন্তু এভাবে খুনীরা আমার বুক খালি করে দিলো, এখন আমাদের কি হবে?
এ ব্যাপারে বড়াইগ্রাম থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আব্দুর রহিম জানান, নিহতের স্বজনরা লাশ আনতে নরসিংদী গিয়েছেন। আর যেহেতু ঘটনাস্থল নরসিংদী, তাই সেখানকার পুলিশ এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবে। নরসিংদী মডেল থানার ওসি বিপ্লব কুমার চৌধুরী মোবাইলে জানান, হত্যাকান্ডের ঘটনাটি ভোর পাঁচটার আগে ঘটেছে বলে মনে হচ্ছে। ভোরে হাঁটতে বের হওয়া স্থানীয় লোকজন খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশটি উদ্ধার করে। সেখান থেকে নিহত ব্যক্তির মোটরসাইকেলটিও উদ্ধার করা হয়েছে। কারা কী কারণে তাকে হত্যা করেছে, সে ব্যাপারে তদন্ত চলছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।