Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভারতীয় দূতাবাসের সামনে ফেলানীর ভাস্কর্য নির্মাণ করতে হবে

সীমান্ত আগ্রাসন বিরোধী কনভেনশনে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৯ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:০১ এএম

ভারতীয় দূতাবাসের সামনের রাস্তায় ফেলানীর ভাস্কর্য স্থাপন এবং রাস্তার নাম ফেলানী সড়ক করার কথা বলেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। গতকাল শিশুকল্যাণ মিলনায়তনে বাংলাদেশ লেবার পার্টির উদ্যোগে ফেলানী হত্যা দিবসে সীমান্ত আগ্রাসন বিরোধী কনভেনশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। গতকাল বিএসএফের গুলিতে ফেলানী হত্যার ১০ বছর প‚র্তি হয়েছে।

২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে নিহত হয় বাংলাদেশি কিশোরী ফেলানী। এ ঘটনায় বিশ্বব্যাপী তোলপাড় শুরু হলে ২০১৩ সালের ১৩ আগস্ট ভারতের কোচবিহার জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্সেস কোর্টে হত্যা মামলার বিচার শুরু হয়। বিএসএফের কোর্টে সাক্ষ্য দেন ফেলানীর বাবা নূর ইসলাম ও মামা হানিফ। একই বছরের ৬ সেপ্টেম্বর আসামি বিএসএফ জোয়ান অমিয় ঘোষকে খালাস দেয় বিশেষ কোর্ট। রায় প্রত্যাখ্যান করে পুনর্বিচারের দাবি জানায় ফেলানীর পরিবার। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর পুনর্বিচার শুরু হলে ১৭ নভেম্বর আবারও আদালতে সাক্ষ্য দেন ফেলানীর বাবা। ২০১৫ সালের ২ জুলাই আদালতে ফের আত্মস্বীকৃত আসামি অমিয় ঘোষ পুনরায় খালাস পান। রায়ের পর একই বছর ১৪ জুলাই ভারতের মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চ (মাসুম) ফেলানীর বাবার পক্ষে দেশটির সুপ্রিম কোর্টে একটি রিট পিটিশন করে। ওই বছরের ৬ অক্টোবর রিট শুনানি শুরু হয়। এরপর ২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত দফায় দফায় শুনানির দিন ধার্য হয়। কিন্তু হয়নি শুনানি। গত বছরের ১৮ মার্চ সর্বশেষ শুনানির তারিখ নির্ধারণ হলেও করোনার কারণে তা আর হয়নি।

বিএসএফের গুলিতে ফেলানী হত্যার ১০ বছর প‚র্তির দিনে ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ফেলানী হত্যা দিবস আমাদের নিজেদের স্বার্থে দুটি কাজ করতে হবে। দুইটা ভাস্কর্য করতে হবে। একটা কুড়িগ্রামের সীমান্তে, যেখানে তাকে হত্যা করা হয়েছে। আর একটা বাংলাদেশে অবস্থিত ভারতীয় দ‚তাবাসের সামনের রাস্তায়। এটার উদ্বোধন করার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ডাকতে হবে। তাহলে বোঝা যাবে ওনার (শেখ হাসিনার) দেশের প্রতি কতটা দরদ আছে। বোঝা যাবে উনি কি সত্যিকার অর্থে শেখ মুজিবুর রহমানের স্পিডের কন্যা নাকি ভারত সরকারের পুতুল কন্যা। আর ভারতীয় দ‚তাবাসের সামনে রাস্তার নাম হওয়া উচিত ফেলানী।’

ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, আমরা কথায় কথায় বলি এটা মুসলমানদের দেশ। আলেম সমাজের প্রতি আমার একটাই অনুরোধ। তারা গান-বাজনা শুনলে বিয়ে পড়াবেন না, জানাজা পড়াবেন না। এইসব দিকে সময় ব্যয় না করে জনগণের অধিকার আন্দোলনের জন্য সোচ্চার হোন।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা বলেন, বাংলাদেশ একটি প্রতারণার স্বর্গরাজ্য, বাংলাদেশ লুটপাটের স্বর্গরাজ্য। করোনার প্রতিষেধক ভ্যাকসিন ইউরোপে যেখানে ২ ডলার, আমাদের এখানে সাড়ে ৪ ডালার বা ৫ ডলার। ভ্যাকসিন উৎপাদনে ব্যয় খুব কম। যদি এক ডলার দাম হয় তাহলে ৪০ টাকা লাভ হবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের যদি ভ্যাকসিনের দাম দুই টাকা হয় তাহলে আমাদের এখানে ৫ ডলার কেন? কারণ আমরা চুরি করি, দুর্নীতি করি, সেই কারণে ভ্যাকসিনের দাম বাড়ছে।

ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, আজ সবাইকে উপলব্ধি করতে হবে কেন আমি ভোট দেবো? কেন আমার ভোট চাই? এই দেশের মালিক আমরা। আমরা সবাই মিলে এই দেশের মালিক। তাই যদি হয় তাহলে দেশের পরিচালনায়, শাসনে আমাদের বক্তব্য রাখার অধিকার থাকতে হবে। সমালোচনা করার অধিকার থাকতে হবে। জবাবদিহি করার অধিকার থাকতে হবে।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা বলেন, বাংলাদেশকে দখল করা ছাড়াই ভারতের সিকিম রাজ্যে পরিণত হবে। আমাদের সংগ্রাম অব্যাহত করা ছাড়া মুক্তির উপায় নাই। বাংলাদেশের গণতন্ত্র না আসার একমাত্র কারণ আওয়ামী লীগ নয় বিরোধী দলও সমভাবে দায়ী।


লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর, এনডিএম’র চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা এলভার্ড পি কষ্টা, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও এর সভাপতি একেএম রাকিবুল ইসলাম রিপন, কৃষক দলের কেন্দ্রীয় নেতা মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার প্রমুখ।



 

Show all comments
  • Alayer Khan ৮ জানুয়ারি, ২০২১, ৫:৫৫ এএম says : 0
    আর কিছু দেশ প্রেমিক দরকার আছে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ