২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত মোটা হবেন ৪০০ কোটি মানুষ
২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বা মোটা হবেন বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ। সংখ্যার বিচারে যা
সারাবিশ্বে করোনা মহামারি নিয়ে উৎকণ্ঠা, ভয় শেষ না হতেই সেকেন্ড ওয়েভ বা দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে। কেবল পশ্চিমা দেশেই নয়, বাংলাদেশেও দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকেও। কোভিট-১৯ বা নভেল করোনাভাইরাস, করোনার জেরে গোটা দেশ গৃহ বন্দী। ৩১ ডিসেম্বর পযন্ত সারা বিশ্বে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৮,৩০,৬৬,৬৫৯ জনের বেশী । মৃত্যুর সংখ্যা ১৮,১২,১৮৮ জনের বেশি। আর বাংলাদেশে আক্রান্ত ৫১২৪৬৯ জন, মৃত্যুর সংখ্যা ৭৫৩১ জন। আসলেই কি দ্বিতীয় একটা ঢেউ চলছে? দ্বিতীয় ঢেউ আসলে কী? তার প্রস্তুতিইবা কেমন হওয়া উচিত? ভাইরাসটির দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রমণ বেড়ে নতুন রোগীর সংখ্যা বিশ্ব জুড়ে হুহু করে বাড়ছে। এ সময় সংক্রমণ বৃদ্ধি নিয়ে সচেতন মহলে আশঙ্কা সৃষ্টি হলেও বেশির ভাগ মানুষ কম গুরুত্ব দিচ্ছেন। লম্বা লকডাউন উঠে যেতেই অনেকেই বেড়াতে গিয়েছেন। এ কারণে নতুন করে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। আমাদের দেশেও একই অবস্থা। করোনা সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। অথচ এর মধ্যেও শহর ও গ্রামে মানুষ নির্ভয়ে চলাফেরা করছে, অনেকেই অপ্রয়োজনে এবং স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই ঘুরে বেড়াচ্ছেন। স্কুল না খুললেও শিশুদের নিয়ে মা-বাবারা বাইরে যাচ্ছেন।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভাইরাসের মিউটেশন (পরিবর্তন) ঘটে। স্প্যানিশ ফ্লুর বেলায়ও দ্বিতীয় সংক্রমণ ঢেউয়ে পরিবর্তিত ভাইরাসের শক্তি ছিল বেশি। উনিশ শতকের গোড়ার দিকে স্প্যানিশ ফ্লুর মোট তিনটি ঢেউ দেখা গিয়েছিল। এর মধ্যে দ্বিতীয় ঢেউটা ছিল প্রথমটির তুলনায় মারাত্মক। তাই পুরোপুরি নিশ্চিন্ত বসে থাকার কোনো উপায় নেই। ইতিমধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নতুন করে সংক্রমণের হার বাড়ছে। করোনার নতুন ভাইরাসের প্রকোপও বাড়তে দেখা যাচ্ছে। যা আগের চেয়ে ৭০ গুণ বেশি শক্তিশালী বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। করোনার পরিবর্তিত ভাইরাস অনেক শক্তিশালী হয়ে সংক্রমিত হতে শুরু করেছে। এ পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে থামবে তা বলা যাচ্ছে না। যেহেতু টিকা এখনো সবাই পায়নি, তাই স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলাই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে ভালো প্রস্তুতি। সবকিছু স্বাভাবিকভাবে আগের মতো চলছে, তার মানে এই নয় যে, করোনা সংক্রমণ শেষ হয়ে গেছে। সামাজিক-অর্থনৈতিক কারণে, জীবন-জীবিকার কারণে সব খুলে দেওয়া হয়েছে, মহামারি শেষ হয়ে গেছে বলে নয়। এখনো বেড়ানো, উৎসব, সামাজিকতা, জনসমাগম করার মতো স্বাভাবিকতা আসেনি, একথা আমাদের মনে রাখা দরকার। মৃত্যুহার কিন্তু আবার বাড়তে শুরু করেছে। পরিবারের বয়স্ক ব্যক্তি বা এমন কেউ যার ডায়াবেটিস, হৃদেরাগ, কিডনি রোগ বা জটিল সমস্যা আছে তাদের সচেতন থাকতে হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানাচ্ছে, মানুষ যেভাবে বাঁচতে ভালোবাসে, করোনার তা পছন্দ। সাধারণ মানুষ যত একসঙ্গে থাকার চেষ্টা করবেন, বেড়াতে যাবেন, আরো বেশি লোকের সঙ্গে মিশবেন, করোনারও ছড়াতে তত সুবিধা হবে। এ সময়টা তাই সবাইকে স্বাভাবিক জীবনযাপন পরিত্যাগ করতেই হবে। করোনার প্রকোপ না কমে যাওয়া পর্যন্ত নিয়ম মেনে চলতেই হবে। কারণ করোনা যায়নি এবং কখন যাবে একথা নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারে না। সারা বিশ্বের মতো এদেশেও করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে। কিন্তু এ ভাইরাস নিয়ে মানুষের মধ্যে নেই কোনো ভীতি-উদ্বেগ। সরকার ‘নো মাস্ক, নো সার্ভিস’ ঘোষণা করেছে, স্বাস্থ্যবিধি মানা ও সামাজিক দূরত্ব রক্ষার প্রচারণা চালাচ্ছে। অথচ সেদিকে কারোই ভ্রুক্ষেপ নেই। গণপরিবহন, হাটবাজার, বিপণিবিতান, মার্কেট, লঞ্চ-স্টিমার কোথাও স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। মাস্ক পরতে মানুষকে বাধ্য করতে ভ্রাম্যমাণ আদালত মাঠে নেমেছে, তবুও সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।
কিছু আজানা তথ্য জানুন, করোনা ভাইরাস বাচ্চাদের শরীরেও ভালো প্রভাব ফেলে। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে খুব সামান্য লক্ষন দেখতে পাওয়া যায়। তাই একটু সমস্যায় পরতে হয়। করোনা ভাইরাসে সব থেকে বেশি ভয় বৃদ্ধদের। কারন মানুষের বয়স বাড়ার সাথে সাথে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে আসে, ফলে এই ভাইরাস জেঁকে বসে। তবে কোনো ব্যাক্তির শরীরে যদি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশ ভালো হয় তাহলে সে নিজে থেকেই সুস্থ্য হয়ে উঠবে। তাই সবসময় সচেতন থাকুন ও বাড়ির বাচ্চাদের খেয়াল রাখুন এবং যত্ন নিন।
প্রকৃত অর্থে ১৯৬০ সালের দিকে মুরগীর সংক্রামক রোগের ভাইরাস হিসেবে করোনাভাইরাসের উৎপত্তি হয়েছিল। তবে এরপর মানবদেহে হওয়া সাধারণ সর্দি কাশিতেও করোনাভাইরাসের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। মানবদেহে পাওয়া সাতটি করোনাভাইরাস হচ্ছে, হিউম্যান করোনাভাইরাস ২২৯ই এবং হিউম্যান করোনাভাইরাস ওসি৪৩, এনএল ৬৩, এইচকিউ ওয়ান, সার্স, মার্স, এবং নভেল করোনাভাইরাস, করোনাভাইরাসগুলোর মধ্যে প্রথম তিনটি মারাত্মক না হলেও পরের চারটি মানুষের জন্য গুরুতর পরিণতি বয়ে আনছে। করোনা নিয়ে বিশ্বজুড়ে চলছে তান্ডব। প্রতিদিনই লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। স¤প্রতি বিশ্বজুড়ে বিপুল আতঙ্ক তৈরি করেছে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস। জীবনের এ সফলতার পিছনে ছুটতে আপনার প্রথম শক্তি হচ্ছে স্বাস্থ্য। প্রবাদে আছে ‘স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল।
করোনা ভাইরাস একটি সংক্রামক ভাইরাস। এটির সংক্রমনে জ্বর, কাশি, শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যা দেখা দেয়। অবস্থা মারাত্মক হলে নিউমোনিয়া দেখা দিতে পারে, এমনকি শ্বাস প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে রোগী মারা যেতে পারে।
তবে কম বয়সীদের মধ্যে এর আক্রমন তেমন হয় না। বয়স্ক রোগী যারা ইতিমধ্যে ডায়াবেটিস, হাঁপানী, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারী ডিজিজ, ইমফাইসেমা ইত্যাদি রোগে আক্রান্ত তাদের মধ্যে মৃত্যু ঝুঁকি বেশি, যে সব লোক মারা গেছে তারা এসব রোগে আক্রান্ত ছিল।
* লক্ষণঃ-জ্বর, কাশি,শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যাই মূলত প্রধান লক্ষণ। সাধারণত শুষ্ক কাশি ও জ্বরের মাধ্যমেই শুরু হয়। পরে শ্বাস প্রশ্বাসে সমস্যা দেখা দেয়। সাধারণত রোগের উপসর্গগুলো প্রকাশ পেতে গড়ে পাঁচ দিন সময় লাগে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, ভাইরাসটির ইনকিউবেশন পিরিয়ড ১৪দিন পর্যন্ত স্থায়ী থাকে।
★পরামর্শঃ-
* মাঝে মাঝে সাবান-পানি বা স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধোয়া* হাত না ধুয়ে মুখ, চোখ ও নাক স্পর্শ না করা।
* হাঁচি কাশি দেওয়ার সময় মুখ ঢেকে রাখা* ঠান্ডা বা ফ্লু আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে না মেশা। *মাংস ও ডিম খুব ভালোভাবে রান্না করা। * বন্য জীবজন্তু কিংবা গৃহপালিত পশুকে খালি হাতে স্পর্শ না করা।
★হোমিওপরামর্শঃ-
সকল রেজিস্টার্ড হোমিও চিকিৎসকগন করোনা রোগীর রোগের লক্ষণের চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে। অনুরূপ লক্ষণে- একোনাইট ন্যাপ, ইনফ্লুয়েঞ্জিনাম, আর্সেনিক এ্যালবাম, বেলাডোনা, ব্রাইয়োনিয়া, জেলসিমিয়াম, ড্রসেরা, কার্বোভেজ, সহ আরো অনেক ঔষধ রোগীর রোগের লক্ষণের উপর আসতে পারে। তাই ঔষধ নিজে নিজে ব্যবহার না করে অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। পরিশেষে এই শীতে আমাদের ঘোরাঘুরি, উৎসব, অনুষ্ঠান বেড়ে যায়। কিন্তু এবার শীতে যেকোনো রকম জনসমাগম, উৎসব, অনুষ্ঠান, ভিড় এড়িয়ে চলুন। উৎসব অনুষ্ঠান করতেই হলে সীমিত পরিসরে অল্পসংখ্যক মানুষ নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে করতে হবে।
ডাঃ মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ
স্বাস্থ্য বিষয়ক উপদেষ্টা, হিউম্যান রাইটস রিভিউ সোসাইটি কেন্দ্রীয় কমিটি
কো-চেয়ারম্যান হোমিওবিজ্ঞান গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র
ইমেইল: [email protected]
মোবাইল: ০১৮২২-৮৬৯৩৮৯।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।