মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
এসেছে নতুন বছর ২০২১। নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে অস্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত সিডনিতে এবারও আতবাজির ঝলকানি দেখা গেছে। কিন্তু সেখানে ছিল না মানুষের উল্লাসধ্বনি আর হইহুল্লোড়। বর্ষবরণের জন্য বিখ্যাত নিউ ইয়র্কের বিখ্যাত টাইমস স্কয়ারও ছিল মরুভূমির ন্যায়। একইরকম ছিল লন্ডনের বিখ্যাত ট্রাফালগার স্কয়ার। বেইজিংয়ে অন্যান্যবারের মতো এবার আর লাইট শো দেখা যায়নি। এই দৃশ্য কেবল সিডনি, নিউ ইয়র্ক, লন্ডন কিংবা বেইজিংয়ে নয়, গোটা বিশ্বেই। মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে আতশবাজি আকাশ রাঙালেও সেটার নিচে ছিল না উল্লাসমুখর মানুষের ভিড়। বিশ্বব্যাপী এ যেন এক নীরব বর্ষবরণ। খ্রিস্টীয় নর্ববর্ষ ২০২১ উদযাপন করতে গিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অন্তত ১১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এসময় আহত হয়েছেন অনেকে। শুক্রবার এ খবর জানায় কাতারভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল-জাজিরা।
নতুনকে বরণ করে নিতে বিশ্বব্যাপী নানা উৎসব-আয়োজনে মুখর ছিল চারিদিক। যদিও এ বছর করোনা মহামারির কারণে আগের সব বছরের মতো উৎসবের সুযোগ মেলেনি। তবে বাড়িতে বসেও লোকজনের আনন্দ-উৎসব ছিল চোখে পড়ার মতো। অনেক দেশেই এ বছর বড় পরিসরে নিউ ইয়ারের উৎসব পালনের অনুমতি দেওয়া হয়নি। আবার অনেক দেশেই স্বাভাবিকভাবেই সবকিছু হয়েছে। শুক্রবার পুলিশ জানিয়েছে, নববর্ষ উদযাপনের সময় শুধু দক্ষিণ-পশ্চিম বসনিয়া অ্যান্ড হার্জগোভিনার একটি কটেজে আটজন নারী-পুরুষ কার্বন মনোঅক্সাইড বিষক্রিয়ায় মারা যান বলে জানিয়েছে দেশটির পুলিশ। নিহতরা সবাই স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী। মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে এবার সবখানেই জনসমাগম ছিল নিষিদ্ধ। সে কারণে অন্যান্যবারের মতো বর্ষবরণে যে জনস্রোত দেখা যায়, আতশবাজির ঝলকানির সঙ্গে যে উল্লাসরত মানুষের মিলন মেলা হয়, সেটি হয়নি। বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের নতুন নতুন ঢেউ নতুন বছরেও মানুষকে রেখেছে গৃহবন্দি করে। তাইতো আতশবাজির সঙ্গে উন্মুক্ত আকাশের নিচের উৎসবমুখর পরিবেশ ছিল না। নিজ নিজ বাসা কিংবা বাসার ছাদেই বন্দি থাকতে হয়েছে বর্ষবরণের উৎসব হৃদয়ের কোণে চেপে রেখে। কেননা মহামারি করোনাভাইরাসে বিশ্বব্যাপী ১৭ লক্ষের বেশি মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। সংক্রমণের সুনামি বইয়ে দিয়ে আক্রান্ত করেছে ৮ কোটি ২০ লাখ মানুষকে। প্রতিনিয়ত লাখ লাখ মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। সামিল হচ্ছে মৃত্যুর মিছিলে। অপরদিকে, ইংরেজি নববর্ষের প্রথম দিনে পৃথিবীজুড়ে প্রায় ৩ লাখ ৭১ হাজার ৫০৪ জন শিশুর জন্ম হয়েছে। কেবল বাংলাদেশে এ সংখ্যাটা ৯ হাজার ২৩৬ জন। শুক্রবার জাতিসংঘের শিশু উন্নয়ন বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ তাদের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নববর্ষের দিন পৃথিবীজুড়ে জন্ম নেয়া নবজাতকের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি মাত্র ১০টি দেশে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি জন্ম নিয়েছে ভারতে। সেখানে এ সংখ্যাটা ৫৯ হাজার ৯৯৫ জন। তালিকায় থাকা অন্য দেশগুলো হলো- নাইজেরিয়া (২১ হাজার ৪৩৯ জন), পাকিস্তান (১৪ হাজার ১৬১), ইন্দোনেশিয়া (১২ হাজার ৩৩৬), ইথিওপিয়া (১২ হাজার ৬), যুক্তরাষ্ট্র (১০ হাজার ৩১২), মিশর (৯ হাজার ৪৫৫), বাংলাদেশ (৯ হাজার ২৩৬) ও গণপ্রজাতন্ত্রী কঙ্গো (৮ হাজার ৬৪০ জন)। ইউনিসেফের ধারণা, ২০২১ সালে দুনিয়াজুড়ে আনুমানিক ১৪ কোটি নবজাতক জন্ম নেবে এবং তাদের গড় আয়ু হবে ৮৪ বছর। ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোর গতকাল বলেছেন, ‘আজ জন্ম নেওয়া শিশুরা এমন বিশ্বের নাগরিক হবে, তাদের জন্য সেটি গড়ে তুলতে আমরা এখন কাজ করে যাচ্ছি। আরও স্বাস্থ্যকর, আরও নিরাপদ বিশ্ব আমরা তাকে দিতে চাই।’ ২০২১ সাল ইউনিসেফের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। বছরজুড়ে ইউনিসেফ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তা উদ্যাপন করবে। হেনরিয়েটা ফোর বলেন, ‘আজ বিশ্ব মহামারি, অর্থনৈতিক মন্দা, ক্রমবর্ধমান দারিদ্র্য এবং বৈষম্যের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ইউনিসেফের আগের মতোই দুর্দান্তভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ইউনিসেফ গত ৭৫ বছর ধরে বাস্তুচ্যুতি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও নানা সংকটের মধ্যে বিশ্বের শিশুদের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। নতুন বছরের সঙ্গে সঙ্গে শিশুদের সুরক্ষা, তাদের অধিকারের পক্ষে কথা বলা এবং তারা যেখানেই থাকুক না কেন, তাদের কণ্ঠস্বর যেন শুনতে পাওয়া যায়, এ জন্য আমরা প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করছি।’ বিবিসি, রয়টার্স, এএফপি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।