Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

টিকাদান কর্মসূচির দু’দিনের মহড়া হল ভারতে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩০ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০২ এএম

করোনাভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচির প্রস্তুতি শুরু করেছে ভারত। চার রাজ্যে গত দু’দিনে অনুষ্ঠিত হয়েছে এ কর্মসূচির মহড়া। মহড়ায় দেখে নেয়া হয়েছে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো।
এখন পর্যন্ত সরকারের ইঙ্গিত, জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে করোনা ভ্যাকসিন দেয়া শুরু হয়ে যাবে। কাদের কখন দেয়া হবে, সেই তালিকাও তৈরি। অক্সফোর্ডের টিকাও তৈরি। ভারত বায়োটেক ও ফাইজারও অনুমতি চেয়েছে। এখন শুধু চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষা। তার আগে সোম ও মঙ্গলবার অন্ধ্র প্রদেশ, গুজরাট, আসাম ও পাঞ্জাবে টিকাদান কর্মসূচির মহড়া অনুষ্ঠিত হল।
মহড়া মানে শুধু টিকাটা দেয়া হয়নি। বাকি সব কিছু দেখা হয়েছে। টিকা যারা দেবেন, তারা কতটা প্রস্তুত, যে কোল্ড স্টোরেজে টিকা রাখা হবে তার অবস্থা কেমন, সেখান থেকে টিকা দেয়ার কেন্দ্রে কীভাবে ভ্যাকসিন যাবে তার ব্যবস্থা, কিভাবে দেয়া হবে, কাদের দেয়া হবে, সব দেখে নেয়া হল। অর্থাৎ, প্রস্তুতির মধ্যে কোনও ফাঁক আছে কি না, সেটা খতিয়ে দেখাই মহড়ার উদ্দেশ্য।
ভ্যাকসিন দেয়া যখন শুরু হবে, তখন যেন কোনও গোলমাল না হয়, সমালোচনার জায়গা না থাকে, সেটিই নিশ্চিত করতে এ উদ্যোগ কর্তৃপক্ষের। দিল্লি এ মহড়ার তালিকায় না থাকলেও সেখানে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সিনিয়র সিটিজেনদের তালিকা মিলিয়ে দেখা হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত দুই হাজার ৩৬০টি প্রশিক্ষণ শিবির হয়েছে। সাত হাজার পেশাদারকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। তারা বাকিদের শেখাচ্ছেন।
কোন ভ্যাকসিন দেয়া হবে?
ভারতে এটাই এখন সবচেয়ে আলোচিত প্রশ্ন। তিনটি ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান জরুরিভিত্তিতে টিকা দেয়ার অনুমতি চেয়ে আবেদন জানিয়েছে। অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন তৈরি করছে সেরাম ইনস্টিটিউট। তারা যাবতীয় কাগজপত্র জমা দিয়েছে বলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানাচ্ছে। কিন্তু ফাইজার-বায়োএনটেক-এর ক্ষেত্রে তা বলা যাচ্ছে না।
ভারতের নিজস্ব উদ্যোগ ভারত বায়োটেকের ভ্যাকসিনের চূড়াস্ত পর্যায়ের পরীক্ষা চলছে। সেদিক থেকে দেখতে গেলে অক্সফোর্ডের টিকার অনুমোদনের সম্ভাবনা বেশি। তবে পুরোটাই কর্তৃপক্ষের হাতে। তারা চাইলে বা দ্রুত সব তথ্য পেলে যে কোনও সময় তিনটি বা দুইটি ভ্যাকসিনের অনুমোদন দিতে পারে।
প্রবীণ সাংবাদিক অবন্তিকা ঘোষ ডয়চে ভেলে-কে জানিয়েছেন, ‘সেরামের কাছে চার কোটি ডোজ টিকা আছে। তারা ভ্যাকসিন উৎপাদনের গতি অনেকটাই বাড়াচ্ছে। ফেব্রুয়ারি থেকে তারা মাসে ১০ কোটি ভ্যাকসিন তৈরি করবে।’
এর সবটাই অবশ্য ভারত পাবে না। বাংলাদেশসহ অন্য দেশেও পাঠানো হবে। সেরাম আগেই জানিয়েছিল, তাদের ভ্যাকসিনের দুইটি ডোজের জন্য এক হাজার টাকার মতো লাগবে।
দেরি কেন?
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে এরইমধ্যে করোনাভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে। আরও কিছু দেশে ভ্যাকসিন চালু হয়ে গেছে। সেখানে ভারতে সবকিছু হাতের কাছে থাকলেও টিকাদান কর্মসূচি শুরু করতে দেরি হচ্ছে কেন?
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, তাড়াহুড়ো করা হচ্ছে না। সবকিছু নিশ্চিত করেই কাজে নামা হচ্ছে। ভারতে ইউনিভার্সাল ইমিউনাইজেশন প্রকল্প সাফল্যের সঙ্গে চলে। জাতীয় নির্বাচনের মতো বিশাল কর্মযজ্ঞও সাফল্যের সঙ্গে সামলানো হয়। কিন্তু করোনার ভ্যাকসিন সকলকে দেয়া তার চেয়ে অনেক বড় ও সময়সাপেক্ষ কাজ। সেজন্যই টিকাদান কর্মসূচি ভালো করে চালুর আগে সামগ্রিক পর্যালোচনা সেরে নেয়া হল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ভারত বায়োটেকের টিকাও যাতে একসঙ্গে চালু করা যায়, সেই বিষয়টি মথায় রাখা হচ্ছে। যদিও এই ধরনের কথা ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিচ্ছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আরেকটি সূত্র। তবে শেষ পর্যন্ত নতুন বছরের শুরুতেই ভারতের করোনাভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচি শুরু হবে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। সূত্র : ডিডব্লিউ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ