Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

১১ মাসে কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত সাড়ে ৩ হাজার

হাসপাতালে রোগীর ভিড়

সরকারের আদম আলী, নরসিংদী থেকে : | প্রকাশের সময় : ২৩ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম

নরসিংদীতে কুকুরের উপদ্রব ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। হিংস্র কুকুর পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে বেড়াচ্ছে আর মানুষকে কামড়াচ্ছে। প্রতিদিন কুকুরের কামড়ানো রোগী নরসিংদী সদর হাসপাতালে ভ্যাকসিনের জন্য ভিড় জমাচ্ছে। গত সাড়ে এগার মাসে নরসিংদীতে ৩ হাজার ৫০০ মানুষকে কুকুর কামড়িয়েছে। অবশ্য তার মধ্যে শিয়াল ও বিড়ালের কামড়ের রোগীও রয়েছে।
এরমধ্যে জানুয়ারি মাসে ৪২৫, ফেব্রæয়ারি মাসে ৩৫৫, মার্চ মাসে ৩৫০, এপ্রিল মাসে ১৩০, মে ১৭৯, জুন মাসে ১৭৫, জুলাই মাসে ১৮০, আগস্ট মাসে ২৪০, সেপ্টেম্বর মাসে ২৯০, অক্টোবর মাসে ৪৫০, নভেম্বর মাসে ৫৬০ জন ডিসেম্বর মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত ২০০ জনকে ১৪০০০ ডোজ ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে। আগে দেশে সরকারের বেওয়ারিশ কুকুর নিধন কর্মসূচি ছিল। দেশের সিটি কর্পোরেশন এবং পৌরসভাগুলো সরকারি কর্মসূচি অনুযায়ী কুকুর নিধন করতো। বর্তমানে কুকুর নিধনের পর হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা থাকার কারণে কুকুর নিধন কর্মসূচি বন্ধ রয়েছে। প্রতিদিন কুকুরের দল শহর ও গ্রামের রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। প্রতিটি দলে ১০ থেকে ১৫টি করে কুকুর থাকে। শহরের ডাস্টবিনগুলোর সামনেও কুকুরের দল রাস্তা দখল করে শুয়ে থাকে। রাতে মানুষ রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে গেলে কুকুররা আক্রমণ চালায়। কুকুরদের এই উপদ্রবের কারণে দেশের মানুষের দাবি হল কুকুর নিধন করা। কুকুরের কামড়ে জলাতঙ্ক হয় বিধায় মানুষ কুকুরকে যমের মত ভয় পায়। তারা মনে করে কুকুরের হাত থেকে বাঁচতে হলে কুকুর নিধন ছাড়া অন্য কোন পথ নেই। কিন্তু দেশের প্রাণীপ্রেমী পরিবেশবাদীরা বলছেন ভিন্ন কথা। তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, পুরনো প্রস্তর যুগে গৃহপালিত পশুদের মধ্যে মানুষ প্রথম কুকুরকেই পোষ মানিয়ে ছিল। তখন মানুষেরা কুকুরকে শিকারের কাজে ব্যবহার করতো। সেই থেকে মানুষ কুকুরের প্রভু বনে যায়। কুকুর হয়ে যায় প্রভুভক্ত। তখনকার যুগে কুকুর মানুষকে কামড়াতো না। কুকুররা মানুষের কাছ থেকে খাবার পেত, পেত আদর স্নেহ। রাস্তাঘাটে, বাড়ির আঙিনায়, জঙ্গলে কুকুরের খাবার ছিল প্রচুর। তখন কুকুরদের ক্ষুধার্ত থাকতে হতো না। এখন হাঁস-মুরগি ছাগল ভেড়া গরু-মহিষের ভুঁড়ি, অন্ডকোষ পেনিস ইত্যাদি এখন মানুষরাই খেয়ে ফেলে। হাঁস-মুরগি গরু ছাগল ভেড়া মারা গেলে মানুষ এখন মাটির নিচে পুঁতে ফেলে। কুকুরের খাবার মানুষ খেয়ে ফেলে। কুকুর থাকে ক্ষুধার্ত। ক্ষুধার কারণে কুকুর হিংস্র হয়ে ওঠে। রাগে মানুষকে কামড়ায়। এছাড়া মানুষ কুকুর দেখলে ঢিল ছোড়ে, লাথি মারে, ধুর ধুর করে, লাঠি দিয়ে আঘাত করে। কুকুর নিয়মিত খাবার পেলে খাবার খেয়ে দিনে ঘুমায় রাত জেগে পাহারা দেয়। চোর-ডাকাত দেখলে ঘেউ ঘেউ করে এলাকাবাসীকে জাগিয়ে তোলে। কুকুর মানুষের উপকারী প্রাণী। কুকুর নিধন অমানবিক।
কুকুরকে যদি মানুষ আদর করে তবে কুকুর মানুষের আপন হয়ে যায়। কুকুরকে খাবার দিলে কুকুর মানুষকে প্রভু হিসেবে মেনে নেয়। কুকুররা খাবার পেলে কখনোই মানুষকে কামড়াবে না। সরকার যদি কুকুর নিধন না করে, এদেরকে ভ্যাকসিন দেয়, তবে কুকুর কামড়ালেও জলাতঙ্ক হবে না। সরকারের উচিত কুকুর নিধন না করে কুকুরকে নিয়মিত ভ্যাকসিনেট করে কুকুর বন্ধাকরণ কর্মসূচি গ্রহণ করে তবে কুকুরের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ সহজতর হবে।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কুকুর

১৫ জুলাই, ২০২২
২০ নভেম্বর, ২০২১
১৫ নভেম্বর, ২০২১
২৯ অক্টোবর, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ