Inqilab Logo

বুধবার, ০৫ জুন ২০২৪, ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২৭ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

রামগতিতে পাউবোর জমি দখল করে ৫ শতাধিক স্থাপনাঃ জড়িত সংঘবদ্ধ চক্র

রামগতি (লক্ষ্মীপুর) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৯ ডিসেম্বর, ২০২০, ৪:০২ পিএম

লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার রামগতি বাজার থেকে তোরাবগন্জ পর্যন্ত ওয়াপদা বেঁড়ীর দু পাশে 

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) প্রায় একশ কোটি টাকার জায়গা অবৈধ দখল করে দোকান ঘর নির্মাণ করছে প্রায় ৫ শতাধিক দখলবাজ।অধিকাংশ জায়গা এরই মধ্যে দখলবাজদের দখলে চলে গেছে। সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গা দখল করে দখলস্বত্ব হস্তান্তর করছে চড়ামূল্যে। প্রতি শতক জায়গা বিক্রি হচ্ছে ৫ থেকে ৭ লাখ টাকায়। এতে প্রায় একশো কোটি টাকার ভূমি ৩০ বছর ধরে দখলে নিয়েছে প্রভাবশালী সংঘবদ্ধ ৫ শতাধিক দখলবাজ। ভূমি দখল করে এরই মধ্যে গড়ে উঠেছে শত শত দোকান ও নানা স্থাপনা। যে হারে দখল হচ্ছে, আগামী দু-এক বছরের মধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নামে কোন জায়গার অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে না এ অঞ্চলে। প্রভাবশালী ভূমিদস্যুরা দিনেদুপুরে জায়গা ভরাট করে দখল করে নেন।আবার কেউ কেউ রাতারাতি বিশাল পাকা স্থাপনাও গড়ে তুলছে। পাকা স্থাপনা করে চড়ামূল্যে অন্যের কাছে বিক্রিও করছে।ওয়ান ইলেভেনের সময় লক্ষ্মীপুরের তোরাবগন্জ থেকে রামগতি বাজার পর্যন্ত ওয়াপদা বেঁড়ীর দুপাশের পানি উন্নয়ন বোর্ডের অবৈধ দখলকৃত সম্পত্তি উদ্ধার করতে এ ভূমির ওপর প্রতিষ্ঠিত সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে বিস্তীর্ণ জায়গা উদ্ধার করা হয়। এরপর সরকার পরিবর্তনের পর নতুন উদ্যোগে সংঘবদ্ধ ভূমিদস্যু রাজনৈতিক প্রভাবে বেপরোয়াভাবে কোটি কোটি টাকার সরকারি ওয়াপদা বেঁড়ীর জমি দখল প্রক্রিয়া শুরু করে এবং অবৈধভাবে নির্মাণ করছে বাড়িঘর, দোকানপাট, ও বিভিন্ন সংগঠনের কার্যালয়সহ নানা অবৈধ স্থাপনা। বাণ্যিজিক ভাবে ২০-২৫ টি পুকুর দখল করে তাতে নানা প্রজাতির মাছ চাষ করছে বছরের পর বছর এসব অবৈধ দখলদাররা।পানি উন্নয়ন বোর্ড সুত্রে জানাযায়, এসব জায়গা উদ্ধার করতে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার জন্য একটি তালিকা প্রস্তুত করা হয়। উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার উদ্যোগ নেওয়া হলেও রহস্যময় কারনে প্রভাবশালী শক্তির প্রভাবে এ উচ্ছেদের ফাইলও চাপা দিয়ে রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে। আবার একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট পুরো জায়গাটি সরকার থেকে লিজ নিয়ে ভোগ করার নামে পজিশন বিক্রি করে জিরু থেকে হিরো বনে যান। এইসব দখলবাজদের নিকট যেন কর্মকর্তারাও অসহায় হয়ে পড়েছে।সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,তোরাবগন্জ থেকে মৌলভীরহাট,রববাজার এলাকা,
ইসলামগন্জ,রহিমগন্জ,ফজুমিয়ারহাট,
কেরামতিয়া,হাজিগন্জ,বাঁধেরহাট, চৌধুরী বাজার,কারিগো গোজা হয়ে রামগতি বাজার পর্যন্ত ১৫ থেকে ১৮ টি ছোট বড় বাজার রয়েছে। এই সব বাজারগুলোতে বেঁড়ীর দুপাশে প্রায় ৫ শতাধিক দোকান ঘর গড়ে তুলেছেন কতিপয় ভূমিদস্যুরা।পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গায় দখল করে দোকান ঘর নির্মাণম প্রসঙ্গে রহিমগন্জ এলাকার নুর মোহাম্মাদ,কেরামতিয়ার জাকের হোসেন,হাজিগন্জের নুরুল আলম,বান্দেরহাটের ইসমাইল ও কারিগো গোজার শামছু বলেন এই সব দোকান গুলো করতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অসাধু গুটিকয়েক কর্মচারী এসে মাসোয়ারা নিয়ে চলে যান। টাকা দিলে পানি উন্নয়ন বোর্ডে সব কিছুই সম্ভাব।এই ভাবে প্রতিদিন বিস্তৃত ভাবে সরকারি জায়গা দখল হচ্ছে। সংশ্নিষ্ট বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চোখের সামনে ভূমিদস্যুরা প্রভাব খাটিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গা দখল করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত।প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের সদস্যরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসব জায়গায় বিশাল বিশাল স্থাপনা তৈরী করে রাখেন।বর্তমানে কিছু জায়গা দখলমুক্ত থাকলেও প্রতিদিনই দখল প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকায় আর কতদিন অবশিষ্ট জায়গা দখলমুক্ত থাকবে এটাও অনিশ্চিত। দুই যুগ ধরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১ শ কোটি টাকা মূল্যের পুরো সরকারি জায়গা অবৈধ দখলে নিয়ে চড়ামূল্যে একে অন্যের কাছে দখলস্বত্ব বিক্রি করছে অহরহ।

চরবাদাম ইউপি চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন জসিম বলেন, বেপোরায়া দখল বন্ধ না করলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অস্তিস্ব খুঁজে পাওয়া যাবে না।

উপজেলা নর্বাহী কর্মকর্তা মোঃ কামরুজজামান বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের দখলকৃত এসব জায়গা উদ্ধারের প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য সংশ্নিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। শিগগির উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে সরকারি সম্পত্তি উদ্ধার করা হবে।

লক্ষ্মীপুর পাউবো সহকারী প্রকৌশলী আবু বকর ছিদ্দিক জানান, আমরা অনেক আগ থেকেই চেষ্টা করেছি সরকারি জায়গা নিয়ন্ত্রণে রাখার। এলাকার প্রভাবশালী চক্রের কারণে এ মূল্যবান সম্পত্তি বেদখল হয়ে যাচ্ছে। আমরা অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদের তালিকা করে সংশ্নিষ্ট প্রশাসনের কাছে প্রেরণ করেছি। ফের উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সব জায়গা দখল মুক্ত করা হবে বলে জানান তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জমি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ