Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২২ কার্তিক ১৪৩১, ০৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নাগর্নো-কারাবাখ আজারবাইজানের অবিচ্ছেদ্য অংশ : পুতিন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৯ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদেমির পুতিন বলেছেন, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী নাগর্নো-কারাবাখ অঞ্চলটি আজারবাইজানের অবিচ্ছেদ্য অংশ। বৃহস্পতিবার ওই অঞ্চলের যুদ্ববিরতির বিষয়ে রাশিয়ার অবস্থান ব্যাখ্যা করতে গিয়ে এ কথা বলেন পুতিন।

মস্কোর একটি বার্ষিক সংবাদ সম্মেলনে পুতিন বলেন, ‘আন্তর্জাতিক আইনের দৃষ্টিতে এই অঞ্চলগুলো আজারবাইজান প্রজাতন্ত্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ। রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্সের সমন্বয়ে গঠিত মিনস্ক গ্রুপে এভাবেই আমাদের অবস্থান গঠিত হয়েছে। অনেক বছর ধরে আমরা সব সময় এটা মনে করেছি নাগর্নো-কারবাখের আশেপাশের সাতটি অধিষ্ঠিত অঞ্চলকে আজারবাইজানের কাছে ফিরিয়ে দেয়া উচিত।’ তিনি বলেন, ‘আর্মেনিয়া ও নাগর্নো-কারাবাখের মধ্যে একটি যোগাযোগ চ্যানেল বিনির্মাণের বাধ্যতামূলক শর্তে নাগর্নো- কারাবাখের বর্তমান অবস্থা অপরিবর্তিত থাকা উচিত। নাগর্নো-কারাবাখ এবং আর্মেনিয়াকে সংযুক্তকারী লাচিন করিডোর এজন্যই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।’ ‘নাগর্নো-কারাখারে বর্তমান অবস্থা সমাধান করা উচিত’ উল্লেখ করে পুতিন জোর দিয়ে বলেন, ‘নাগর্নো-কারাবাখের অবস্থা ভবিষ্যতের কাছে হস্তান্তর কারা উচিত।’

এই সংঘাতে তুরস্কের অবস্থান সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে পুতিন নাম ধরে বলেন, ‘১৯৯০ এর দশকের সংঘাতের সময় দখল হয়ে যাওয়া অঞ্চলগুলোকে ফিরে পেতে। তুরস্ক যেভাবে বিশ্বাস করে সেভাবে তারা আজারবাইজানের ন্যায্য অধিকার রক্ষা করেছে।’ তবে কারবাখের সর্বশেষ সংঘাতের বাহ্যিক কারণগুলো সম্পর্কে কোনো ধারণা করতে তিনি অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে বলেন, এই উত্তেজনা অনেক বছরের। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি না এটা কোনো বহিরাগত হস্তক্ষেপের কারণে হয়েছে। সেখানে উত্তেজনা ছিল, সংঘাত ছিল এবং কিছ‚ গোলগুলি হয়েছে। যার ফলে এটা সংঘাতে পরিণত হয়েছিল।’

পুতিন উল্লেখ করেন, যুদ্ধ বিরতি চুক্তি হওয়ার পর রাশিয়া, আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজানের মধ্যে সম্পাদিত ত্রি-পক্ষীয় চুক্তি সংঘাতে জড়িত পক্ষগুলোকে তাদের অঞ্চলে সুরক্ষিত করেছে। তিনি বলেছেন, ‘সহিংসতা বন্ধের এই চুক্তিটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি রক্তপাত বন্ধ করেছে, বেসামরিক মানুষের মৃত্যু বন্ধ হয়েছে। এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং এটিই মৌলিক। বাকী সবকিছু গৌণ। মানুষের জীবন ও স্বাস্থ্য বাঁচানো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ ‘যেটা আমরা সমাধান করেছি।’ সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে পুতিন আশা প্রকাশ করেনে যে, এটি আর কখনো হবে না। এই অঞ্চলে রাশিয়ান শান্তিরক্ষী বাহিনীর সংখ্যা বাড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, সব পক্ষের অনুমোদন নিয়েই কেবল এটি করা সম্ভব। কারণ যুদ্ধবিরতি চুক্তির খসড়া তৈরির সময় এই বাহিনীর আকার নিয়ে আলোচনা ও মতৈক্য হয়েছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘সবাই যদি এই সিদ্ধান্তে পৌঁছে যে শান্তিরক্ষী বাহিনীর সংখ্যা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন, তবে আমরা বাড়াবো, নয়তো বাড়াবো না।’

১৯৯১ সালে আর্মেনিয়ার সামরিক বাহিনী আজারবাইজানের অংশ হিসাবে স্বীকৃত অঞ্চল নাগারনো-কারাবাখ ও পার্শ্ববর্তী আরো সাতটি অঞ্চল দখল করার পর থেকেই সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্র আজারবাইজান এবং আর্মেনিয়ার মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। নতুন করে গত ২৭ সেপ্টেম্বর সংঘর্ষ শুরু হলে আর্মেনিয়া সেনাবাহিনী বেসামরিক লোকজন ও আজারবাইজানীয় বাহিনীর উপর আক্রমণ শুরু করে এবং বেশ কয়েকটি মানবিক যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে। ৪৪ দিনের সংঘর্ষে, আর্মেনিয়ার দখল থেকে বেশ কয়েকটি শহর এবং প্রায় ৩০০ টি জনবসতি ও গ্রাম মুক্ত করে আজারবাইজান। ১০ নভেম্বর, যুদ্ধের অবসান ঘটাতে এবং একটি বৃহত্তর সমাধানের লক্ষ্যে কাজ করতে রাশিয়ার মধ্যস্থতায় দেশ দু’টি একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। এই শান্তিচুক্তিটিকে আজারবাইজানের জয় এবং আর্মেনিয়ার পরাজয় হিসাবে দেখা হচ্ছে। কারণ চুক্তির সাথে সামঞ্জস্য রেখে আর্মেনিয়ার সশস্ত্র বাহিনীকে সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। সূত্র : ডেইলি সাবাহ।



 

Show all comments
  • Fatema akhter ২০ ডিসেম্বর, ২০২০, ৬:৪১ এএম says : 0
    THANK YOU SIR.
    Total Reply(0) Reply
  • Fatema akhter ২০ ডিসেম্বর, ২০২০, ৬:৪২ এএম says : 0
    Thank you sir.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নাগর্নো-কারাবাখ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ