Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পুলিশকে পাহারা দিয়ে ছিনতাই!

জিসান হত্যায় গ্রেফতার ৯

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৮ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০৫ এএম

রাজধানীর উত্তরা, আব্দুল্লাহপুর ও টঙ্গি এলাকায় সক্রিয় হয়ে উঠেছে ছিনতাই চক্রের সদস্যরা। সর্বশেষ ওই চক্রের হাতে নিহত হয়েছেন জিসান হাবিব (১৮) নামের এক কলেজছাত্র। ইতোমধ্যে এ ঘটনার সাথে জড়িত ছিনতাই চক্রের নয় সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ছিনতাই চক্রের সদস্যরা পুলিশকে পাহারা দিয়ে ছিনতাই করে থাকে বলে জানিয়েছেন উত্তরা বিভাগের ডিসি মো. শহিদুল্লাহ।

গতকাল উত্তরা পূর্ব থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা একত্রে টঙ্গী ও আব্দুল্লাহপুর এলাকায় ছিনতাই করে থাকে। দলের একটি গ্রুপ বিভিন্ন স্থানে পাহারা দেয় আইশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোন সদস্যরা আশপাশে আসছে কিনা। গ্রুপের কোন একজন ধরা পড়লে গ্রুপের অন্য ৩ থেকে ৪ জন সদস্য মুরুব্বী সেজে ঘটনাস্থলে আসে এবং ‘কি হয়েছে, কি হয়ে ভাই’ ইত্যাদি কথা বলে আটক ছিনতাইকারীকে ছাড়িয়ে নেয়ার চেষ্টা করে।

তিনি জানান, উত্তরা আব্দুল্লাহপুর এলাকায় ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে কলেজছাত্র জিসান হাবিব (১৮) হত্যা মামলার ঘটনায় ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- সুন্দরী সুমন, স্বপন, মো. বিপ্লব, তৈয়ব আলী ওরফে উজ্জল ওরফে তবলা ওরফে বাবলা, মো. জাহাঙ্গীর ব্যাপারী ওরফে হৃদয়, মো. তানভীর রহমান নেহাল, মো. জিহাদ, নূরুল ইসলাম রাব্বি ও মো. রাকিব।

পুলিশের ওই কর্মকর্তা জানান, জিসান নোয়াখালী সোনাইমুড়ী খলিলুর রহমান ডিগ্রি কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র। গত ২৮ নভেম্বর জিসান নোয়াখালী থেকে ধামরাইয়ে আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে আসেন। ৯ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় জিসান এক আত্মীয়কে বিমানবন্দরে পৌঁছে দিতে যান। সেখান থেকে রুহুল আমিন নামের এক আত্মীয়ের সঙ্গে ক্লাসিক পরিবহনের একটি বাস যোগে নবীনগর ফিরছিলেন। তাদের বহনকৃত বাসটি আব্দুল্লাহপুর এলাকায় আসলে জানালা দিয়ে এক ছিনতাইকারী জিসানের মোবাইল ফোনটি ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। দ্রুত বাস থেকে নেমে দৌঁড়ে ছিনতাইকারীকে ধরে ফেলেন তিনি। এ সময় রুহুলও বাস থেকে নেমে সেখানে যান। এরপর তারা দুজন ছিনতাইকারীর কাছ থেকে মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করতে গেলে পেছন থেকে অপর দুইজন ছিনতাইকারী এসে জিসান ও রুহুলকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে। তাদেরকে আহত অবস্থায় ফেলে রেখে ফোনটি ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা। পরে আহত জিসান ও রুহুলকে চিকিৎসার জন্য শহীদ মনসুর আলী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক জিসানকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।

উত্তরা বিভাগের ডিসি বলেন, তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় এ ঘটনায় জড়িত অভিযুক্তদের সনাক্ত করে গত ১২ ডিসেম্বর উত্তরা ও টঙ্গী এলাকা থেকে সুন্দরী সুমন ও স্বপনকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে তাদের কাছ থেকে সহযোগীদের সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে নরসিংদীর রায়পুরা থানার বাঘাইকান্দী চর এলাকায় অভিযান চালিয়ে ঘটনার সাথে জড়িত মো. বিপ্লব ও তৈয়ব আলীকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর উত্তরা ও টঙ্গী এলাকা থেকে মো. জাহাঙ্গীর ব্যাপারী, মো. তানভীর রহমান নেহাল, মো. জিহাদ, নূরুল ইসলাম রাব্বি ও মো. রাকিবকে গ্রেফতার করা হয়।

তিনি আরো বলেন, গ্রেফতারকৃতরাসহ পলতাক অভিযুক্ত কবির ও নাতি সোহাগ আব্দুল্লাহপুরসহ উওরা এলাকায় ছিনতাই করে। ঘটনার দিন জিসানের মোবাইল ছিনতাই করে পালানোর সময় জিসান ও রুহুল বাস থেকে নেমে ছিনতাইকারী হৃদয়কে ধরে ফেললে দলের গ্রেফতারকৃত অন্য সদস্যরা হৃদয়কে ছাড়ানোর জন্য আসে। এ সময় ছিনতাইকারীরা এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে জিসান ও রুহুল আমিনকে রক্তাক্ত জখম করে পালিয়ে যায়। জড়িত ছিনতাইকারী চক্রটির প্রায় সকল সদস্যের বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় চুরি, মাদক ও ছিনতাইসহ একাধিক মামলা রয়েছে। পলাতকদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান পুলিশের ওই কর্মকর্তা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পুলিশ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ