Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বঙ্গবন্ধুর সামরিক ভাবনা ও বাস্তবায়ন

মুহাম্মদ ফারুক খান এমপি | প্রকাশের সময় : ১৬ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভালোবাসা, মানবিকতাবোধ, প্রাণশক্তি, বুদ্ধিমত্তা, বিচক্ষণতা, দূরদর্শী চিন্তা, সাংগঠনিক দক্ষতা আর নেতৃত্বের গুণাবলী দিয়ে মানুষকে মুগ্ধ করেছিলেন। স্বাধীন বাংলাদেশকে জন্ম দিয়ে তিনি ‘জাতির জনকের’ সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। এদেশের মানুষকে ভালোবেসে তিনি উপাধি পেয়েছেন ‘বঙ্গবন্ধু’। বিবিসি’র জরিপ অনুযায়ী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি। তিনি বাঙালির হাজার বছরের স্বপ্নের এবং অন্তরের অন্তস্থলে গুমরে মরা স্বাধীনতার আকাক্সক্ষার বিষ্ফোরণ ঘটিয়েছিলেন। পৃথিবীর ইতিহাসে আর কোনো নেতা রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকা অস্ত্রধারী, নিষ্ঠুর শাসকের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে অকুতোভয়ে স্বাধীনতার কথা উচ্চারণের সাহস দেখায়নি।

বিশাল ব্যক্তিত্বের অধিকারী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একজন সুপুরুষ ছিলেন। যদিও বছর হিসাবে তার জীবনের ব্যপ্তি মাত্র ৫৫ বছর। কিন্তু কর্মকান্ড বিবেচনায় তা ছিল শত বছরেরও বেশি। বঙ্গবন্ধু ছোট কাল থেকেই উপলদ্ধি করেছিলেন যে, সম্মানের সঙ্গে বেঁচে থাকতে হলে নিজের জন্য, মানুষের অধিকারের জন্য দৃঢ়ভাবে দাঁড়াতে হবে, প্রয়োজনে প্রতিবাদ করতে হবে। বঙ্গবন্ধু বুঝেছিলেন দেশের স্বাধীনতাই মূল লক্ষ্য। এ চিন্তার আলোকেই ক্রমশ তিনি নিজেকে প্রস্তুত করেছিলেন। সম্ভবত বঙ্গবন্ধু দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ এবং পূর্বেকার সময়কার যারা এ অঞ্চলে যুদ্ধ করেছিলেন যেমন তিতুমীর, হাজী শরিয়তউল্লাহ, বিভিন্ন সামরিক নেতা, ফিল্ড মার্শাল স্লিম, সুভাষ চন্দ্র বোসদের জীবন চরিত্র, চিন্তা ও কৌশলগুলো আত্মস্ত করেছিলেন।
গোপালগঞ্জের নিভৃত গ্রাম টুঙ্গীপাড়ার হাটে, মাঠে, নদী ও খালে তিনি নিজেকে একজন সাহসী, শারীরিক ও মানসিকভাবে শক্তিশালী এবং বন্ধুবৎসল যুবক হিসেবে গড়ে তোলেন। বঙ্গবন্ধু নিজের মানুষের অধিকার নিয়ে সবসময় সোচ্চার ছিলেন। তার প্রমাণ আমরা বিভিন্ন সময়ে স্কুল পরিদর্শকের কাছে, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে, সাধারণ মানুষের স্বার্থরক্ষার জন্য প্রতিবাদের ঘটনাগুলো থেকে পাই। ‘সাহসী নেতৃত্বই’ বঙ্গবন্ধুর অন্যতম চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। ছোটকালের ছোট ছোট প্রতিবাদ, দুরন্তপনা, সহমর্মিতা, বন্ধু বৎসলতা বঙ্গবন্ধুকে একজন সাহসী ও বুদ্ধিমান নেতা হিসেবে গড়ে তোলে। সাধারণত সামরিক একাডেমিতে প্রশিক্ষনের মাধ্যমে সশস্ত্রবাহিনীর ক্যাডেটদের মাঝে আমরা এসব চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলোই গড়ে তুলি। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর জন্য নেতৃত্ব ছিল সহজাত। পরবর্তিতে, পাকিস্তানের রাজনীতিতে ভাষা আন্দোলন, সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন, শিক্ষা আন্দোলন ইত্যাদিতে সাহসী এবং বিচক্ষণ নেতৃত্বের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু তৎকালীন পাকিস্তান তথা পূর্ব পাকিস্তানের সবথেকে সাহসী এবং ভরসাপূর্ণ নেতা হিসেবে জনগণের আস্থা অর্জন করেছিলেন।

১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধ বঙ্গবন্ধু খুবই সূক্ষ্মভাবে পর্যালোচনা করেছেন, যার পরিপ্রেক্ষিতেই উত্থাপিত হয় ঐতিহাসিক ‘৬ দফা’। এ ৬ দফা দাবির মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু যেমন কৌশলগতভাবে পূর্ব পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার দুর্বলতা তুলে ধরেন এবং একই সময় স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিরক্ষার পরিকল্পনাগুলোও একে একে নির্ধারণ করেন। তিনি অনুধাবন করেছিলেন, নদী মাতৃক বাংলাদেশের প্রতিরক্ষার মূল কৌশল হতে হবে নৌযুদ্ধ (Naval Oriented warfare) এবং এজন্যই তিনি ৬ দফার রাজনৈতিক দাবির সাথে এ অঞ্চলের প্রতিরক্ষার জন্য আধা সামরিক বাহিনী গঠন, অস্ত্র কারখানা স্থাপন এবং পাকিস্তানের নৌ সদর দপ্তর পূর্ব পাকিস্তানে স্থাপনের দাবি জানান। এইভাবে Strategic পরিকল্পনা ও রাজনৈতিক দাবির মাধ্যমেই তিনি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান অর্থাৎ বাংলাদেশের মানুষকে স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুতির স্পষ্ট সংকেত প্রদান করেন। এরই ফলে ৬ দফার আন্দোলন সর্বোচ্চ জনসম্পক্তৃতা লাভ করে আর তাই ৬ দফাকে ‘বাংলার মুক্তির সনদ’ বলা হয়। আগরতলা মামলা, ৬৯-এর গণআন্দোলন, ৭০-এর নির্বাচনে বিপুল বিজয়ের পথ ধরে বঙ্গবন্ধুর নেতৃতেই বাঙালি জাতি এক সফল ‘স্বাধীনতার সংগ্রামের’ মাধ্যমে বীরত্বপূর্ণ মুক্তিযুদ্ধের জন্য তৈরি হয়।

৭১ এর ৭ মার্চের ভাষণ আজ UNESCOকর্তৃক নির্বাচিত বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ। ৭ মার্চের ভাষণের পূর্বেই বঙ্গবন্ধু তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা এবং সামরিক কৌশলগত বিবেচনায় বুঝেছিলেন যে, বাঙালি জাতি মুক্তিযুদ্ধের জন্য প্রস্তুত। আর তাই ঐতিহাসিক এই ভাষণে বঙ্গবন্ধু স্পষ্টভাবে মুক্তিযুদ্ধের কৌশল (Strategy) এবং যুদ্ধের পদ্ধতি (Tactic) বলে দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু নির্দেশে মুক্তিযুদ্ধের কৌশল হবে ‘গেরিলা যুদ্ধ’ এবং পদ্ধতি হবে Hit and Run।
৭ মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেন ‘প্রত্যেক ঘরে ঘরে দূর্গ গড়ে তোলো।
তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রæর মোকাবেলা করতে হবে। প্রত্যেক গ্রামে, প্রত্যেক মহল্লায় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সংগ্রাম পরিষদ গড়ে তোলো।’ এ নির্দেশের মাধ্যমে তিনি গেরিলা যুদ্ধের জন্য অপরিহার্য রাজনৈতিক নেতৃত্ব, সামরিক নেতৃত্ব এবং গেরিলা এবং জনগণের মধ্যে সমন্বয়ের নির্দেশ দেন।
ঞধপঃরপং এর অংশ হিসেবে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ ‘জীবনের তরে রাস্তা-ঘাট যা যা আছে সবকিছু আমি যদি হুকুম দিবার নাও পারি, তোমরা বন্ধ করে দেবে, আমরা ভাতে মারব, আমরা পানিতে মারব’ বঙ্গবন্ধুর এই নির্দেশগুলোই আমরা দেখেছি আমাদের এবং বিশ্বের অন্যান্য সকল সফল গেরিলা যুদ্ধে ব্যবহৃত হয়েছে। সম্ভবত বঙ্গবন্ধু তার চীন সফরের সময় সে দেশের গেরিলা যুদ্ধ সম্পর্কে বিশদ জ্ঞান অর্জন করেন এবং আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে সে জ্ঞানের স্বার্থক এবং সফল প্রয়োগ করেন।

নেতৃত্ব বা Leadership এর একটি আধুনিক সংজ্ঞা হচ্ছে Leadership is about making others better as a result of your presence and making sure, that impact lasts in your absence too. মুক্তিযুদ্ধের সময় বঙ্গবন্ধু কারাগারে থাকলেও তার নির্দেশিত পথেই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সফলভাবে রাজনৈতিক এবং সামরিক নেতৃত্বে এবং সকল গেরিলা এবং জনগণের সমন্বয়ে বিপুল বিজয় অর্জন করে মাত্র নয় মাসে। এখানে উল্লেখ্য, বঙ্গবন্ধুর দুইপুত্র শেখ কামাল এবং শেখ জামালও প্রত্যক্ষভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। বিশ্বের সামরিক ইতিহাসে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ এক গৌরবোজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। আজও বিশ্বের বিভিন্ন সামরিক একাডেমি এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এর চর্চা হয় এবং শিক্ষা গ্রহণ করা হয়।

মুক্তিযুদ্ধের পরেই বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবসনের সাথে সাথে যুদ্ধ বিধ্বস্থ বাংলাদেশের পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর পুনর্গঠনের দিকে মনোযোগী হন। ১৯৭২-৭৫ অর্থাৎ মাত্র সাড়ে তিন বছরে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীকে একটি আধুনিক, শক্তিশালী এবং পেশাগত জ্ঞানসম্পন্ন বাহিনীতে রূপান্তরের লক্ষ্যে আধুনিক যুদ্ধ ট্যাংক টি-৪৪, যুদ্ধ বিমান মিগ-২১ এবং যুদ্ধ জাহাজসহ বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা, বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিসহ প্রশিক্ষণ স্থাপনা এবং লজিস্টিক ইউনিট গঠন করেন।

বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমির প্রথম পাসিং আউট প্যারেড অনুষ্ঠিত হয় ১৯৭৫ এর ১১ জানুয়ারি। বঙ্গবন্ধু এ প্যারেড পরিদর্শন করেন এবং বাংলাদেশের সামরিক অফিসারদের প্রথম ব্যাচের উদ্দেশ্যে এক ঐতিহাসিক ভাষণে একটি স্বাধীন দেশের সশস্ত্র বাহিনীর অফিসারদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে পথ প্রদর্শনমূলক ভাষণ দেন, যা আজও আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর জন্য অনুসরণীয়। এ ভাষণে বঙ্গবন্ধু সশস্ত্র বাহিনীর অফিসারদের কমান্ড অনুসরণের গুরুত্ব, দেশপ্রেম, অধীনস্তদের প্রতি দায়িত্ব ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নির্দেশনা দেন। বঙ্গবন্ধু স্নেহভরে বলেন, ‘আমি তোমাদের ভালবাসি, তোমরা সৎ থেকো, মাতৃভূমিকে ভালবেসো।’ বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনার আলোকে আজ আমাদের মিলিটারি একাডেমি বিশ্বের অন্যতম একটি একাডেমিতে রূপান্তরিত হয়েছে, যেখানে আজ দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন দেশের ক্যাডেটরা প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছে এবং আজ পর্যন্ত প্রায় দশ হাজার দেশি এবং বিদেশি ক্যাডেট প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে অফিসার হয়েছে।

আজ বাংলাদেশ বিশ্ব শান্তিরক্ষায় (UN Peacekeeping) একটি প্রধানতম দেশ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিশ্ব শান্তিরক্ষায় আজ বাংলাদেশ এক নম্বর অবস্থানে আছে। আজ পর্যন্ত আমাদের সশস্ত্র বাহিনী এবং পুলিশসহ প্রায় ১,৫৫,০০০ জন বাংলাদেশি নারী ও পুরুষ বিশ্ব শান্তিরক্ষায় অংশ নিয়ে দেশের জন্য প্রভূত সুনাম বয়ে এনেছে। বাংলাদেশের অনেকেই জানে না, বঙ্গবন্ধুই প্রথম ১৯৭৩ এর আরব-ইসরাইল যুদ্ধের পর মিসর এবং সিরিয়ায় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর মেডিকেল টিম এবং চা সহ চিকিৎসা সামগ্রী প্রেরণ করেছিলেন। এ মেডিকেল টিম আরব দেশসমূহসহ বিশ্বে প্রভূত সুনাম অর্জন করে। এ মানবিক কার্যক্রমের কারণেই ১৯৭৪ এ বাংলাদেশ ওআইসি শীর্ষ সম্মেলনে সদস্য হওয়ার আমন্ত্রণ পেয়েছিলো এবং বঙ্গবন্ধু হজে অংশগ্রহণসহ বাংলাদেশের জন্য বিভিন্ন সুবিধা এবং স্বীকৃতি অর্জন করেন।

১৯৭২-৭৩ সালে এ দেশের অনেকেই মনে করতেন, আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর প্রয়োজন নাই। বঙ্গবন্ধু তার সুদূরপ্রসারী চিন্তাধারা এবং দৃঢ়চেতা মনোভাবের কারণেই মুক্তিযুদ্ধের পর পরই একটি শক্তিশালী সশস্ত্র বাহিনী গঠনে মনোযোগী হয়েছিলেন। তবে তিনি শুধু একটি বাহিনী গঠনই করেননি, বরং আন্তর্জাতিক মানের একটি সশস্ত্র বাহিনী গঠনের সুদূর প্রসারী পরিকল্পনাও করেছিলেন। শত প্রতিকুলতা, বিরোধিতা এবং অর্থনৈতিক চাপ থাকা সত্তে¡ও স্বাধীনচেতা এবং গৌরবদীপ্ত মানুষ হিসেবে বঙ্গবন্ধু মাত্র তিন বছরের মধ্যেই ১৯৭৪ সালে ‘প্রতিরক্ষা নীতিমালা’ (Defence Policy) প্রণয়ন করেন এবং শক্তিশালী সশস্ত্র বাহিনী গঠন করে আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব এবং সম্মান নিশ্চিত করেছেন।

এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য, বঙ্গবন্ধু স্বাধীনচেতা এবং দৃঢ়চেতা মনোভাবের কারণেই স্বাধীনতা অর্জনের মাত্র তিন মাসের মধ্যে মিত্র বাহিনী (Allied Force ) অর্থাৎ ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর ইউনিটসমূহ বাংলদেশ ত্যাগ করে। এখানে মনে রাখতে হবে, দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় গর্বিত Allied Force এর ব্রিটিশ এবং আমেরিকার বাহিনী পঁচাত্তর বছর পরও এখনো জার্মানি ত্যাগ করেনি, আমেরিকান বিমান ঘাঁটি এখনও জাপানের ওকিনাওয়া দ্বীপে আছে।

আমাদের জন্য দুঃখজনক, ৭৫’-এ বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যা করার পরই হত্যা, ক্যু এবং ষড়যন্ত্রের কারণে, ৭৫-৯৬ পর্যন্ত আমাদের সশস্ত্র বাহিনী দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং শত শত চৌকস অফিসার এবং সদস্যকে হত্যা এবং চাকরিচ্যুৎ করে এ বাহিনীকে দুর্বল করা হয়েছে।

বঙ্গবন্ধুর সামরিক চিন্তা এবং ভাবনার উন্নত ধারক এবং বাহক আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী, বঙ্গবন্ধু কন্যা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। তিনি তার সাহসী নেতৃত্ব এবং দূরদর্শী চিন্তাধারায় বঙ্গবন্ধু প্রণীত প্রতিরক্ষা নীতিকে যুগপোযোগী করে প্রতিরক্ষা নীতি-২০১৮ প্রণয়ন করেছেন। Forces Goal-2030 প্রণীত হয়েছে এবং বাস্তবায়িত হচ্ছে। এর ফলে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ এবং আমাদের সশস্ত্র বাহিনী অতুলনীয় এবং অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করে চলেছে, যা আজ বিশ্ব কর্তৃক স্বীকৃত। এ ধারা অব্যাহত থাকলে অচিরেই আমাদের সশস্ত্র বাহিনী বিশ্বের একটি অন্যতম, পেশাগত জ্ঞান সম্পন্ন, সুশৃঙ্খল এবং শক্তিশালী মনোবলের অধিকারী বাহিনী হিসেবে যোগ্য স্থান করে নেবে, যার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন এক শক্তিশালী ‘সোনার বাংলা’ বাস্তবায়িত হবে।

আমরা বাঙালি জাতি বঙ্গবন্ধুর সাহসী নেতৃত্বে একটি রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং বীরত্বপূর্ণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিকে ঔপনিবেশিক পাকহানাদার মুক্ত করেছি। দেশকে আমরা সকলে মিলে স্বাধীন করেছি। একটি গর্বিত বীরের জাতি হিসেবে আমরা মাথা উঁচু করে বিশ্বের দরবারে নিজেদের অর্জিত গৌরব, সম্মান, মর্যাদা ও স্বাধীনতার চেতনাকে লালন-পালন ও সংরক্ষণ করে বিশ্বের দরবারে সমুন্নত রাখব, ইনশাল্লাহ। আমাদের গৌরবান্বিত পদচারণায় থাকবে ’৭১-এর গর্বিত বীরের চির উন্নত শিরের শক্তি ও সাহস এবং চিন্তা-চেতনায় বঙ্গবন্ধুর আদর্শ। স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের গর্বিত নাগরিক হিসেবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রণীত জাতীয় প্রতিরক্ষা নীতির এটাই মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।

লেখক: সভাপতিমন্ডলীর সদস্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, সাবেক মন্ত্রী বাণিজ্য ও বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বঙ্গবন্ধু

৮ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন