Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সিংড়ায় ‘বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে’ নেই বঙ্গবন্ধু নাম!

সিংড়া,(নাটোর) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৮ জানুয়ারি, ২০২৩, ৫:২২ পিএম

১৯৭৪সালে নাটোরের সিংড়া উপজেলার চৌগ্রাম ইউপির ক্ষিদ্রবড়িয়া গ্রামে ‘ক্ষিদ্রবড়িয়া বঙ্গবন্ধু নি¤œ মাধ্যমিক’ বিদ্যালয়ে নেই বঙ্গবন্ধুর নাম। ১৯৭৫সালে শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে হত্যার পরে দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ১৯৭৫সালে মঞ্জুরী কমিশন এবং ১৯৮৫সালে ‘ক্ষিদ্রবড়িয়া বঙ্গবন্ধু নি¤œ মাধ্যমিক’ বিদ্যালয় নাম বাদ দিয়ে ‘ক্ষিদ্রবড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়’ নামে নামকরণ করে বিদ্যালয়টি এমপিওভূক্ত করা হয়।
তবে বিদ্যালয়টির বরাদ্দকৃত জমির দলিল ও খতিয়ানে ‘বঙ্গবন্ধু নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নামেই খাজনা-খারিজ চলমান রয়েছে। সম্প্রত্তি ‘ক্ষিদ্রবড়িয়া বঙ্গবন্ধু নি¤œ মাধ্যমিক’ বিদ্যালয়ের নামে বরাদ্দকৃত জমিদাতা ও শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসীরা ‘বঙ্গবন্ধু নি¤œ মাধ্যমিক’ বিদ্যালয় নামকরণের দাবী জানিয়েছেন।
ক্ষিদ্রবড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শাহাদত হোসেন, সাবেক প্রধান শিক্ষক মো. আতাউর রহমান, বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য আলহাজ্ব নওশের আলী, অধ্যাপক মো. মকবুল হোসেন, জমিদাতার ছেলে মো.শাহজাহান আলী ও ক্ষিদ্রবড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন অফিস সহকারী মো. জিয়া উদ্দিন জানান, ক্ষিদ্রবড়িয়াসহ পাশের ৯টি গ্রামের ছেলে-মেয়েদের শিক্ষা অর্জনের লক্ষ্যে ১৯৭৪ সালে ‘ক্ষিদ্রবড়িয়া বঙ্গবন্ধু নি¤œ মাধ্যমিক’ নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করা হয়। বঙ্গবন্ধুর নামে নামকরণের এই স্কুলের জন্য ৭৪শতাংশ জমি দান করেন কান্তনগর গ্রামের মরহুম রফাতুল্লাহ প্রামাণিক। ১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বপরিবারে হত্যা হলে দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরির্বতন হয়। পরে রাজশাহী বিভাগীয় উপ-পরিচালকের কার্যালয়ে বিদ্যালয়টি ‘মঞ্জুরী’ করতে গেলে বঙ্গবন্ধুর নাম বাদ দিতে বলেন। পরে বঙ্গবন্ধুর নাম বাদ দিয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিলে ক্ষিদ্রবড়িয়া নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয় নামে মঞ্জুরী পায় এবং ১৯৮৫ সালে বিদ্যালয়টি এমপিওভূক্ত করা হয়। তারা এখন বঙ্গবন্ধুর নাম বহাল রাখার দাবি জানাচ্ছেন। ক্ষিদ্রবড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের নাম সংশোধন করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নাম পূর্ণবহাল রেখে নামকরণ করার এই দাবি দীর্ঘদিন পর হলেও এলাকার সাধারণ মানুষের কাছে এখন সময়ের দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে। ক্ষিদ্রবড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোছা. ছাফিরিন খাতুন,মিথিলা ইয়াসমিন, রানী খাতুন ও মো. নাদিম মাহমুদরা জানান, বাবা ও দাদার কাছে শুনেছি,বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে বঙ্গবন্ধুর নামে নামকরণ করা হয়েছিল। কান্তনগর গ্রামের মো.আরিফুল ইসলাম ও মো.দাউদার রহমান জানান, ক্ষিদ্রবড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের নাম সংশোধন করে বঙ্গবন্ধুর নামে নামকরণ করা হলে এলাকার মানুষ খুশি হবে, এটা এখন আমাদের প্রাণের দাবি। পাশাপাশি জরাজীর্ন স্কুলের একটা নতুন ভবনেরও দাবি করছি। ক্ষিদ্রবড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ২০১২সালে যোগদানের পরে বিদ্যালয়ের দলিল ও অন্যান্য কাগজপত্রে বঙ্গবন্ধুর নামে পেয়েছি, ম্যানেজিং কমিটির সভায় আলোচনা করে বঙ্গবন্ধুর নাম পূর্ণবহালের জন্য আবেদন করা হবে। বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির বর্তমান সভাপতি ও স্থানীয় চৌগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জাহেদুল ইসলাম ভোলা বলেন, ‘আমি সভাপতির দায়িত্ব পাওয়া পরে বিদ্যালয়ের দলিল ও অন্যান্য কাগজপত্রে বঙ্গবন্ধুর নাম পাই। সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র উপস্থাপন করবো যাতে বঙ্গবন্ধুর নাম বহাল থাকে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আমিনুর রহমান বলেন, ‘ক্ষিদ্রবড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দলিলপত্র নজরে এসেছে। ম্যানেজিং কমিটি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করলে পূর্ণবহাল সম্ভব। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এম এম সামিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ক্ষিদ্রবড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দলিল ও অন্যান্য কাগজপত্রে বঙ্গবন্ধুর নাম পেয়েছি। ক্ষিদ্রবড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটিসহ এলাকাবাসীরা চাইলে নাম সংশোধনের জন্য প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বঙ্গবন্ধু

৮ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ