পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্বপ্নের পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। কিন্তু সেতুর সুবিধা দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার সাড়ে ৩ কোটি মানুষের কাছে পৌঁছতে সংযোগ সড়কগুলোর দ্রত উন্নয়নের কোন বিকল্প নেই। রাজধানী ঢাকা থেকে ৫৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে দুটি সার্ভিস লেনসহ ৬ লেনের এক্সপ্রেসওয়ে পদ্মা সেতু হয়ে ভাঙ্গা পর্যন্ত পৌঁছেছে। তবে সেখান থেকে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমের ২১ জেলার মহাসড়কগুলো ৪ বা ৬ লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের বাস্তব অগ্রগতি প্রায় শূন্য। পদ্মা সেতুসহ ভাঙ্গা পর্যন্ত এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ৫৫ হাজার কোটি টাকা।
ভাঙ্গা থেকে বরিশাল বিভাগের ৬টি, খুলনা বিভাগের ১০টি এবং ফরিদপুর অঞ্চলের ৫টি জেলার গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় মহাসড়কগুলোর উন্নয়ন পরিকল্পনা কাগুজে গন্ডি পের হতে পারেনি এখনো। দেশের ইতিহাসে সর্বাধিক ব্যয়বহুল সাড়ে ১১ হাজার কোটি টাকার ভাঙ্গা-মাওয়া-ঢাকা এক্সপ্রেসওয়ে গত ফেব্রুয়ারিতে উদ্বোধন হলেও তার সুবিধা ২১ জেলায় কবে পৌঁছবে তা কেউ বলতে পারছেন না। এক্সপ্রেসওয়ের শেষ প্রান্ত ভাঙ্গা থেকে ৯০ কিলোমিটার দক্ষিণে বরিশাল, ৯৩ কিলোমিটার পশ্চিমে যশোর, ১৩৪ কিলোমিটার পশ্চিমে বেনাপোল স্থলবন্দর, ১৯০ কিলোমিটার দক্ষিণে পায়রা ও ২০৩ কিলোমিটার দক্ষিণে কুয়াকাটায় যাওয়ার সড়ক-মহাসড়কের কোনটিই মানসম্মত নয়। এসব মহাসড়ক মাত্র ১৮ থেকে ২৪ ফুট প্রস্থ। ভাঙ্গা থেকে ১২৭ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে খুলনা ও ৬৭ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণে গোপালগঞ্জ মহাসড়কটিও ৩০ ফুট প্রস্থ। ২০০৫ সালে এ মহাসড়কটি নির্মিত হয়। ভাঙ্গা-ফরিদপুর ৩০ কিলোমিটার মহাসড়কটিও মাত্র ১৮-২৪ ফুট প্রস্থ। যশোর ও বেনাপোলকে সংযুক্তকারী ভাটিয়াপাড়া থেকে নড়াইল হয়ে যশোরের মহাসড়কটি মাত্র ১৮ ফুট প্রস্থ। বরিশালের লেবুখালী থেকে পটুয়াখালী হয়ে পায়রা বন্দর ও কুয়াকাটা মহাসড়কটিরও একই অবস্থা।
এসব মহাসড়ক উন্নয়নে একাধিক প্রকল্প গ্রহণ করা হলেও কোনটিই এখনো আলোর মুখ দেখেনি। ফরিদপুর-বরিশাল-পায়রা বন্দর-কুয়াকাটা মহাসড়কটি ৪ লেনে উন্নয়নের লক্ষ্যে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের সহায়তায় ইতোমধ্যে একটি সম্ভাব্যতা সমীক্ষাসহ বিস্তারিত নকশা প্রণয়ন হয়েছে। তবে গত তিন বছরেও ভ‚মি অধিগ্রহণ সম্পন্ন হয়নি। ভ‚মি অধিগ্রহণ গত জুনে সম্পন্ন হবার কথা থাকলেও আগামী জুনেও তা শেষ হবে কিনা সন্দেহ রয়েছে। প্রস্তাবিত মহাসড়কটিতে বরিশাল মহানগরীকে বাদ দিয়ে বাইপাস নির্মাণের সিদ্ধান্ত হলেও জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে ভাঙ্গা-বরিশাল রেলপথের এলাইনমেন্টের ওপর পরায়। প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়সাপেক্ষ এ প্রকল্পটির কোন দাতা না মেলায় প্রাথমিক পর্যায়ে ফরিদপুর থেকে বরিশাল পর্যন্ত ১২৪ কিলোমিটার মহাসড়কটি ৬ লেনে উন্নীতকরণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। কিন্তু পুরো প্রকল্পটিই এখনো অনেকটাই অন্ধকারে।
ভাঙ্গা থেকে ভাটিয়াপাড়া হয়ে যশোর-বেনাপোল পর্যন্ত মহাসড়কটি ৬ লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পটিও এখনো পরিকল্পনায় আবদ্ধ। তবে সড়ক অধিদফতরের দায়িত্বশীল সূত্র মতে, ইন্ডিয়ান লাইন অব ক্রেডিটের আওতায় বেনাপোল-যশোর-ভাটিয়াপাড়া-ভাঙ্গা অংশের মহাসড়কটি উন্নয়নে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা শেষ হয়েছে। বৈদেশিক অনুদান বা ঋণ নিশ্চিত হলেই সমীক্ষা ও পথ নকশা অনুযায়ী মহাসড়কটি করার সিদ্ধান্ত রয়েছে। এ মহাসড়ক উন্নয়নে ভারতীয় ঋণ পাওয়ার সম্ভাবনার কথাও জানিয়েছে সূত্রটি। কিন্তু কবে নাগাদ এ প্রকল্পের কাজ শুরু হবে তা বলতে পারছেন না কেউ। মহাসড়কের গোপালগঞ্জ ও নড়াইলের মধ্যবর্তী মধুমতি নদীর ওপর কালনায় জাপানি অর্থায়নে প্রায় ৯শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬ লেন সেতুর নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলছে।
অপরদিকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ভাটিয়াপাড়া-গোপালগঞ্জ-খুলনা অংশের প্রায় ৮৫ কিলোমিটার মহাসড়ক ৬ লেনে উন্নীত করার লক্ষ্যেও সম্ভাব্যতা সমীক্ষাসহ নকশা প্রণয়নের সিদ্ধান্ত হলেও কোন দাতা মেলেনি। খুব একটা অগ্রগতিও নেই। অথচ এ মহাসড়কটির ওপরই দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোংলা সমুদ্রবন্দর ও ভোমড়া স্থলবন্দরের সাথে রাজধানীসহ প্রায় সারা দেশেরই সড়ক যোগাযোগ নির্ভরশীল।
সড়ক অধিদফতরের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র ফরিদপুর-বরিশাল-পায়রা-কুয়াকাটা, নড়াইল-যশোর-বেনাপোল এবং গোপালগঞ্জ হয়ে মোংলা ও খুলনা পর্যন্ত মহাসড়কগুলো ৬ লেনে উন্নীতকরণে বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছেন। অন্যথায় পদ্মা সেতুসহ এক্সপ্রেসওয়ের সুফল দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় সাড়ে ৩ কোটি মানুষের ভাগ্যে নাও জুটতে পারে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।