বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে সরকারি ঘরের তালিকা করার নামে এক ইউপি চেয়ারম্যান পকেট ভারী করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার চরবাদাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শাখাওয়াত হোসেন জসিমের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে। জমি আছে, ঘর নেই-এমন ৭১৩ দরিদ্র পরিবারের কাছ থেকে এক থেকে ১০ হাজার টাকা করে নিয়েছেন। সম্প্রতি ইউপি সদস্য ও তার অনুসারীদের মাধ্যমে ইউপি চেয়ারম্যান অন্তত ১৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। ইউপি চেয়ারম্যান বলেছেন, মেম্বাররা ইন্টারনেটের খরচের জন্য সামান্য কিছু খরচাপাতি নিয়েছেন। তবে ইউএনও বলছেন, অভিযোগটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা পরিষদ ও সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মুজিবশতবর্ষ উপলক্ষে জমি আছে, ঘর নেই -এমন কিছু ব্যক্তিকে বিনা খরচে ঘর করে দেয়ার উদ্যোগ নেয় সরকার। এজন্য ইউপি চেয়ারম্যানদের কাছে নামের তালিকা চাওয়া হয়। এতে চরবাদাম ইউপি চেয়ারম্যান জসিম অতিউৎসাহী হয়ে পরিষদের সদস্য ও অনুসারীদের দিয়ে ইউনিয়নব্যাপী তালিকা করান। পরে তা উপজেলা ভ‚মি কর্মকর্তার কার্যালয়ে দাখিল করা হয়। এতে ৭১৩ জনের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তালিকায় নাম উঠাতে প্রত্যেকের কাছ থেকে এক হাজার থেকে ১০ হাজার করে টাকা নেয়া হয়।
স্থানীয় একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, ঘরের তালিকা করার নামে ইউপি চেয়ারম্যান অন্তত ১৫ লাখ টাকা বাণিজ্য করেছেন। ওই ইউনিয়নের চর কলাকোপা, কারামতিয়া ও চরসীতা গ্রামের অন্তত ১৮ জনের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি জানা গেছে।
পূর্ব চরসীতা গ্রামের দিনমজুর মো. শহিদ ও গৃহবধূ মনোয়ারা বেগম জানান, ঘর দেয়ার কথা বলে তাদের কাছ থেকে স্থানীয় মেম্বার টাকা নিয়েছেন। ওই গ্রামের আরও ৪০-৫০ জনের কাছ থেকে বিভিন্ন অঙ্কের টাকা নিয়েছেন। ইউপি চেয়ারম্যান মেম্বারকে টাকা উত্তোলনের দায়িত্ব দিয়েছেন।
পূর্ব চরসীতা গ্রামের রাশেদা বেগম বলেন, তিন মাস আগে আমার ঘরের ছবি ও জাতীয় পরিচয়পত্র নেয়া হয়। কিন্তু এখনো ঘর করে দেয়ার কোনো খবর নেই। কারো কাছে এ বিষয়ে কথা না বলার জন্য বলা হয়েছে। কয়েকদিন আগে মেম্বারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেছেন, আমি যোগ্য নয়। এজন্য ঘর দেয়া হবে না। তবে আগে আমার টাকা নিল কেন? এমন প্রশ্ন রাখেন তিনি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন স্কুল শিক্ষক বলেন, চরবাদাম ইউনিয়নের মানুষ দরিদ্র। তাদের বেশিরভাগই মেঘনা নদী ভাঙনের শিকার। আমরা অর্থনৈতিক সঙ্কটে মানবেতর দিনাতিপাত করছি। কিন্তু চেয়ারম্যান খামখেয়ালি মতো একটি তালিকা করে অন্তত ১৫-২০ লাখ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন। টাকার কথা জানাজানি করলে ঘর দেয়া হবে না বলে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান শাখাওয়াত হোসেন জসিম বলেন, ঘর দেয়ার কথা বলে কোনো টাকা নেয়া হয়নি। মেম্বাররা ইন্টারনেটের খরছের জন্য সামান্য কিছু খরচাপাতি নিয়েছেন। আমার বিরুদ্ধে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে একপক্ষ লেগেছে।
এ ব্যাপারে রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবদুল মোমিন বলেন, আমরা এখন শুধু ভূমিহীনদের নিয়ে কাজ করছি। ইউপি চেয়ারম্যানের এমন তালিকা করার বিষয়টি আমার জানা নেই। যদি নিয়ে থাকে তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।