নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
জনপ্রিয় ব্যান্ডতারকা জেমস তার খুবই প্রিয়। তাইতো গুরুর ‘বাবা’ গানটি ধরেছিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। পাশ থেকে সুরে সুর মেলালেন পঞ্চপান্ডবের বাকি তিন সদস্য তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম ও সাকিব আল হাসান। খানিক বাদেই সাকিবের অনুরোধ, ‘এ গানটা আর পারি না। যেটা পারি সেটা গান।’ দীর্ঘদিনের সতীর্থ মাশরাফি হয়তো জানেন সাকিবের পছন্দ। এবার মাইক হাতে দেশসেরা অধিনায়ক শুরু করলেন, ‘বাবা তোমার দরবারে সব পাগলের মেলা। হরেকরকমের পাগল দিয়ে মিলাই ছ মেলা...।’ ব্যাস সাকিব খোলস থেকে বের হয়ে যান। মাথা নাড়িয়ে, চুল ঝাকিয়ে, শরীর দুলিয়ে উন্মাতাল সাকিব। ঠিক যেমন একটা শর্ট বল মিড উইকেট দিয়ে ছক্কা মারার আনন্দ। শুধু কি সাকিব, হোটেল সোনারগাঁওয়ের সুইমিংপুল জোনে যারা উপস্থিত ছিলেন প্রত্যেকে আনন্দ উৎসবে মেতে উঠে।
দেশের শীর্ষ ক্রিকেটাররা এখন জৈব সুরক্ষা বলয়ে। তারা খেলছেন পাঁচ দলের টুর্নামেন্ট ‘বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপ’। খেলা না থাকলে এসব সময়ে হোটেল ছেড়ে পরিবারের কাছে চলে যান ক্রিকেটাররা। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে সে উপায় নেই। অবশ্য হোটেলবন্দি সময়টা আরও আনন্দ মুখর করে রাখলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। এক হোটেলে থাকায় ডিনার কিংবা ব্রেকফাস্ট বা কোন চা চক্রে প্রত্যেকের সবার সঙ্গে দেখা হচ্ছিল। শুক্রবার বিসিবি থেকে আয়োজন করা হয়েছিল ‘বারবিকিউ নাইট’। সঙ্গে গান নাচের আয়োজনও ছিল। জানা গেছে সিনিয়র ক্রিকেটাররা এ প্রোগ্রামের উদ্যোগ নেন।
রুবেল হোসেনের পোস্ট করা ভিডিওতে মাশরাফিকে দেখা যায় মুখ্য ভোকালের ভ‚মিকায়। আয়োজনে এক পর্যায়ে মঞ্চে আসেন বাংলাদেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় আরো চার নাম- সাকিব, তামিম, মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহরা। নাচ-গানে আনন্দে মাততে দেখা গেছে যুববিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটার আকবর আলিদেরও। বাদ যাননি কোচেরা। মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, সারওয়ার ইমরানরা মিলেয়েছেন তাল।
বাংলাদেশের প্রথম টেস্টের কোচ সারোয়ার ইমরান গান গেয়ে শোনান। খালেদ মাহমুদ সুজন ও মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বেছে নেন নাচ। এরপর প্রায় সব ক্রিকেটার, অফিসিয়ালরা নাচ ও গানে উৎসব করেন। বিশেষ করে মাশরাফিকে যুব বিশ্বকাপজয়ী দলের সঙ্গে নাচতে দেখা গেছে। মাহমুদউল্লাহ উপস্থাপকের পাশাপাশি গান গেয়ে শোনান। সবার অনুরোধে রুবেল হোসেনের কন্ঠে ছিল আইয়ুব বাচ্চুর গান। এছাড়া আজম খানের সালকে মালেকা, পাপড়ি ও বাংলাদেশ গান গেয়ে শোনান রাজশাহীর সহকারী কোচ আশিকুর রহমান।
ক্রিকেটাররা জানান সন্ধ্যা ৭টার দিকে শুরু হয় আনন্দঘন এই আয়োজন। শেষ হয় রাত ১০টায়। পুরোটা সময় প্রাণখোলা হাসি, গানে মাতোয়ারা ছিলেন তারা। পরে নিজের ফেসবুকেও সেই রেশ রেখছেন মাশরাফি। বাংলাদেশের অনেক সাফল্যের কান্ডারি ভালোবাসা জানিয়েছেন সবাইকে, ‘ভালো লাগা ভালোবাসা এক না...রিয়াদ- খেলা হবে! কোচ, ফিজিও, ট্রেনার, কম্পিউটার স্পেশালিস্ট, ম্যানেজার, টিমবয়, ম্যাসিওর এবং সব খেলোয়াড়...অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ী দল, বাংলাদেশের অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ। ভালোবাসা।’
ঘরোয়া ক্রিকেট চলাকালীন এরকম আয়োজনের সুযোগ হয় না। দলগুলো একেক হোটেলে থাকায় মাঠ ছাড়া দেখা হতো কম। এবার সেই সুযোগটি কাজে লাগিয়ে আনন্দময় এক রাত কাটালো স্বপ্নসারথিরা।
পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর বাইরে অবশ্য বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের অবসর বিনোদন সীমিত। জৈব সুরক্ষা বলয়ের মধ্যে ক্রিকেটারদের সময়টা অন্যরকম করার চেষ্টা করতে দেখা গেছে আগেও। হোটেলে ফিরে বিভিন্ন রকমের ইভেন্ট করে সময়টা পার করতে চেয়েছেন তারা। এই সুরক্ষা বলয় সেদিক থেকে তাদের কাছে একটা আশীর্বাদও হতে পারে। একসঙ্গে দেশের শীর্ষ ক্রিকেটারদের এমন নিখাদ আনন্দ আড্ডা হয়ত খুব সহসা আর নাও হতে পারে। বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে গতকালই হয়ে গেছে লিগ পর্বের শেষ দুই ম্যাচ। যেকোনো একদল টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেবে, এটা নিশ্চিতই ছিল। এরপরই প্লে অফ রাউন্ড। সেখানে তিন ম্যাচের পর বাকি থাকছে কেবল ফাইনাল। তার আগেই তাই সবাই মিলে একটা জম্পেশ মেলবন্ধনের সুযোগ ছিল এটি। তাদের সেই আনন্দঘন সময়ের ছবি, ভিডিও ঘুরছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সেই সুযোগে ক্রিকেটারদের বন্ধনও দেখার সুযোগ পেল ক্রিকেটপ্রেমীরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।