Inqilab Logo

শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২২ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ঘন কুয়াশায় যানবাহন লঞ্চ ও ট্রেন চলাচল ব্যাহত

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১২ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:৫৭ পিএম

শীতের সকালে কুয়াশার ঘনঘটা। সড়ক মহাসড়ক ও রেললাইন ঢেকে গেছে ঝাপসা আবরণে। মহাসড়ক গুলোতে একটু পর পর চলছে গাড়ি। ঘন কুয়াশার কারণে বিঘিœত হচ্ছে যানচলাচল। অন্যদিকে, রেললাইনেও ঘন কুয়াশার আবরণে ঢেকে আছে। চালকরা ট্রেনের সামনে ঠিকভাবে দেখতে পারছেন না। এমনকি সিগনালও দেখা যাচ্ছে না। চালকরা জানান, রেললাইনের দুপাশেও কিছুই দেখা যাচ্ছে না। এতে করে নির্ধারিত গতিতে ট্রেন চালানো সম্ভব হচ্ছে না। তাতে প্রতিটি ট্রেনই সঠিক সময়ে গন্তব্যে পৌঁছতে পারছে না। এসব কারণে দুর্ঘটনার শঙ্কা নিয়েই গন্তব্যে যাওয়ার চেষ্টা করছে সাধারণ যাত্রী ও চালকরা। একই অবস্থা লঞ্চ ও ফেরির ক্ষেত্রেও। রাতে নদীর উপর আলো পড়লেও কিছুই দেখা যায় না বলে জানিয়েছেন লঞ্চের চালকরা। আর ফেরিগুলোর ফগলাইট কাজ না করায় সহসায় চরে আটকে যাচ্ছে। উত্তর ও দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ৩৭ টি জেলার মানুষ ঢাকায় যাতায়াত করেন ঢাকা-আরিচা, নবীনগর-চন্দ্রা ও টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড মহাসড়ক দিয়ে। আর এই সড়কগুলো বিকেল থেকেই ঢাকা শুরু হয় কুয়াশায়। সকালে কুয়াশার ঘনত্ব আরও বেড়ে যায়। ফলে দুর্ঘটনার আতঙ্ক নিয়েই চালক চালাতে থাকে গাড়ি। যাত্রীরাও আতঙ্কে ঘাপটি মেরে বসে থাকে সিটেই।
শনিবার (১২ ডিসেম্বর) সকালে সাভারের ঢাকা-আরিচা, নবীনগর-চন্দ্রা ও টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড মহাসড়ক ঘুরে দেখা যায়, কুয়াশার চাদরে মোড়া মহাসড়কসহ পুরো এলাকা। সড়কে সামনে হালকা দেখা গেলেও আনুমানিক ১০ মিটার পরেই কুয়াশায় হারিয়ে যায় সড়ক। এতে চরম আতঙ্ক উৎকণ্ঠা নিয়ে ধীরে ধীরে গাড়ি চালাচ্ছেন চালকরা। যাত্রীরাও রয়েছেন ভয়ে।উত্তরবঙ্গের গাইবান্ধা থেকে ছেড়ে আসা শ্যামলী পরিবহনের চালক আশরাফুল বলেন, গাড়ি চালাতে খুব সতর্কতা অবলম্বন করতে হচ্ছে। কুয়াশার কারণে খুব বেশি দূর দেখা যাচ্ছে না। কাজ হচ্ছে না ফগলাইটের আলোয়। তাই আস্তে আস্তে ১ ঘণ্টার পথ দুই ঘণ্টায় যেতে হচ্ছে।মানিকগঞ্জ থেকে ঢাকামুখী যাওয়া সৌদিয়া পরিবহনের চালক হান্নানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, এবার একটু আগেভাগেই জেঁকে বসেছে শীত। কুয়াশাও রেকর্ড ভাঙতে পারে এবার। এই কুয়াশায় দুর্ঘটনার কবলে পড়ার আশঙ্কা থাকে। এ কারণে যাত্রীও কমে গেছে। শীতে আমাদের মতো গাড়ি চালকের ক্ষতিই হবে বেশি। করোনার থাবার ক্ষত না শুকাতেই আবার বাগড়া দিচ্ছে শীত। এরকম কয়েক দিন থাকলে সন্তানদের একটা শীতের পোশাকও কিনে দিতে পারবো না।
আশুলিয়া ক্ল্যাসিক পরিবহনের যাত্রী আয়েশা বলেন, কর্মজীবী মানুষ হিসেবে বাসায় বসে থাকার কোন সুযোগ নেই। জীবিকার তাগিদে জীবন শঙ্কা থাকলেও বেরিয়ে পড়তে হয় ঘর থেকে। সঠিক সময়ে কর্মস্থলে পৌঁছতে স্বাভাবিক নিয়মের চেয়ে আগে বের হতে হয়। কুয়াশায় সড়কে গাড়ির গতি কমিয়ে দিয়েছে কয়েক গুণ। তাই সঠিক সময়ে পৌঁছতে বাসা থেকে ১ ঘণ্টা আগেই বের হতে হলো। জীবন ও জীবিকার তাগিদে অতিরিক্ত কুয়াশায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়েই চলছি শীতের পথ।বগুড়া থেকে আসা শাহ-ফতেহ আলী গাড়ির যাত্রী তানিয়া বলেন, আমি কাল রাতে গাড়িতে উঠেছি। বগুড়া থেকে বাইপাইল আসতে স্বাভাবিক সময় লাগে ৪ থেকে সাড়ে ৪ ঘণ্টা। আজ তো প্রায় ৭ ঘণ্টা লেগেছে। চালক অত্যন্ত দক্ষ হওয়ায় বেঁচে গেছি দুর্ঘটনা থেকে। শীত যতো দিন থাকবে আর রাতে কখনও গাড়িতে উঠবো না। খুব ভয় নিয়ে বাইপাইল পৌঁছলাম।পঞ্চগড় থেকে ঢাকামুখি একতা এক্সপ্রেসের চালক ইনকিলাবকে জানান, রাতে ঘন কুয়াশায় রেললাইনও ঠিকমতো দেখা যায় না। আন্দাজের উপর ট্রেন চালাতে হচ্ছে। প্রতিটি স্টেশনের আগে আউটার সিগনাল লাইটও ৫০ গঝ দূরে থেকে দেখা যায় না। সে কারণে ট্রেনের গতি কমিয়ে ধীরে ধীরে চলতে হচ্ছে। এতে করে অনেক সময় নষ্ট হয়েছে।
নিরাপদ সড়ক চাই ধামরাইয়ের সভাপতি নাহিদ বলেন, শীতে কুয়াশা প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়ম। যেহেতু কুয়ার ঘনত্ব বেশি, গাড়ির গতি কম রেখে ফগলাইট ব্যবহার করে চালকের গাড়ি চালানো উচিত। একই সাথে গাড়ি চালনায় অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। এসময় চোখে ঘুম নিয়ে চালকদের গাড়ি না চালানোর অনুরোধ জানান তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কুয়াশা

২৬ ডিসেম্বর, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ