পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে সকল সহায় সম্বল ও ভিটে মাটি বিক্রি করে ২০০০ সালে স্বামী হাসান সিকদার পাড়ি জমায় আরব দেশে। কিন্তু বিধি বাম, সেখানে দূরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায় সে। একমাত্র কন্যা ফারজানাকে নিয়ে বেঁচে থাকার তাগিদে দিশেহারা হয়ে পড়ে বিধবা খাদিজা খানম বিউটি। একদিকে অভাব আর অন্যদিকে পাওনাদারদের জ্বালাতনে অতিষ্ঠ হয়ে শিশু কন্যাকে নিয়ে স্বামীর বাড়ি মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার গোপালপুর এলাকার পূর্ববনগ্রাম থেকে পিত্রালয় একই এলাকার মজিদবাড়ি গ্রামে চলে আসেন তিনি। জীবন জীবিকার জন্য কয়েক বছর এনজিওতে চাকরিও করেছেন। কিন্তু এনজিও’র খারাপ সময় আসলে অন্য সহকর্মীদের সাথে তাকেও চাকরি থেকে বাদ দেয়া হয়। দরিদ্র পিতার সংসারে মেয়েকে নিয়ে অনাহারে-অর্ধাহারে থেকে দিনাতিপাত করছিলেন।
অভাবের তাড়নায় দিশেহারা খাদিজা খানম বিউটি একটি কাজের জন্য ছুটেছেন মানুষের দ্বারে দ্বারে। তখন তার বাল্যকালের বান্ধবী উপজেলার নারী উদ্যোক্তা কোহিনুর সুলতানা হাঁস-মুরগি পালনের পরামর্শ দেয়। কিন্তু সেখানেও বাধা হয়ে দাঁড়ায় তার বয়স। কেননা এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিতে উপজেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরে গেলে তারা খাদিজা খানম বিউটির বয়স বেশি বলে প্রশিক্ষণে সংযুক্ত হতে দেয়নি। কিন্তু জীবনযুদ্ধে হাল না ছারা খাদিজা খানম বিউটি তখন কৌশল হিসেবে মেয়ে ফারজানাকে প্রশিক্ষণে ভর্তি করে দেন এবং মেয়ের প্রশিক্ষণ শেষে তার কাছ থেকে নিজে প্রশিক্ষণ নেয়। পরে বান্ধবী কোহিনুর সুলতানার সহযোগিতায় শুরুতে ৫০টি হাঁস দিয়ে খাদিজা খানম বিউটি গড়ে তোলেন একটি হাঁসের খামার। নিজের শ্রমের বিনিময়ে ধরা দেয় সাফল্য। ৫০টি দিয়ে শুরু করা হাঁসের খামার বড় করে শতাধিক এবং তা আরো বৃদ্ধি করে বর্তমানে তার খামারে ৮ শতাধিক হাঁস রয়েছে। অন্য খামারে ৩ শতাধিক দেশীয় মুরগি দিয়ে শুরু করেন মুরগির খামার। আর ২টি ছাগল দিয়ে আরো একটি ছাগলের খামারও শুরু করেন নারী উদ্যোক্তা খাদিজা খানম বিউটি।
হাঁস, মুরগি ও ছাগলের খামার করে নিজের বেকারত্ব ঘোঁচাতে পারলেও বর্তমানে চরম অর্থনৈতিক সঙ্কটে পড়ে হতাশ হয়ে পড়ছেন তিনি। নিজের শ্রম আর কষ্টে গড়ে তোলা খামারে হাঁস-মুরগি ও ছাগলের খাবার কেনার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের যোগানে লোনের জন্য ছুটছেন কৃষি ব্যাংকসহ অন্যান্য ব্যাংকে। কিন্তু ব্যাংক তাকে সহজ শর্তে লোন দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করে নারী উদ্যোক্তা খাদিজা খানম বিউটি বলেন, ‘ব্যাংকের কাছে লোন চাইতে গেলে তারা যেসব কাগজপত্র চায় তা জোগাড় করা আমার মতো দরিদ্র মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। আর তার ওপরে তারা লোনের জামানতকারী হিসেবে সরকারি চাকরিজীবীদের নিয়ে আসতে বলে যা আমার নেই। আমার দাবি, আমাদের মতো অসহায় নারী উদ্যোক্তাদের সহজ শর্তে লোন দেয়া হলে দেশে বেকার সমস্যার সমাধান হবে। আমরা এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আর্কষণ করছি। যাতে তার সহযোগিতায় আমরা যারা অসহায় নারী এবং নারী উদ্যোক্তা তারা যেন সহজ শর্তে ব্যাংক লোন পাই।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।