Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রামগতির-কমলনগর নিখোঁজ ১৯ জেলের সন্ধান মেলেনি ২৩ দিনেও

সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়ে

রামগতি (লক্ষ্মীপুর) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৯ ডিসেম্বর, ২০২০, ১১:২১ এএম

লক্ষ্মীপুরের কমলনগর-রামগতি উপজেলার ১৯ জেলে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়ে ২৩ দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। গত ১৫ নভেম্বর কক্সবাজার থেকে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে যাওয়ার পর থেকে তাদের আর সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। নিখোঁজ জেলেদের মধ্যে কমলনগর উপজেলার ১২ ও রামগতি উপজেলার সাতজন জেলে রয়েছেন।

এ দিকে নিখোঁজ ওই জেলেদের পরিবারে এখন কান্নার রোল চলছে। প্রিয়জনকে হারিয়ে আহাজারি করছেন পরিবারের সদস্যরা। কেউ আদরের সন্তানকে হারিয়ে, আবার কেউবা প্রিয় স্বামী বা বাবাকে হারিয়ে নির্বাক হয়ে পড়ছেন। তাদের প্রতিদিনের বুকফাটা কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে পরিবেশ। শোকার্ত ওই পরিবারগুলোর পাশাপাশি মর্মাহত তাদের প্রতিবেশীরাও।জানা গেছে, কক্সবাজার এলাকার নজির হোসেন কোম্পানির এফভি রানা’ নামের ট্রলার নিয়ে মঞ্জুর মাঝি ১৮ জন জেলেসহ গত ১৫ নভেম্বর দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকারে যান। ওই দিন ট্রলার মালিকসহ স্বজনদের সাথে জেলেদের মুঠোফোনে কথা হলেও পর দিন থেকে তারা নেটওয়ার্কের বাইরে চলে যান। কিন্তু মাছ শিকার শেষে আট থেকে ১০ দিনের মধ্যে সাগর থেকে তারা ফেরত আসার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত তারা ফেরেননি। তাদের কারো কোনো খোঁজও পাওয়া যাচ্ছে না। নিখোঁজ জেলেদের কয়েকজন হচ্ছেন লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার বাংলাবাজার এলাকার মঞ্জুর মাঝি, কমলনগর উপজেলার চরফলকন এলাকার মো: মোক্তার, একই এলাকার জাহাঙ্গীর আলম, সাদ্দাম হোসেন, জসিম উদ্দিন, মো: জাফর, তাজল ইসলাম ও শাহে আলম। অপর জেলেদের নাম-পরিচয় নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়নি।কমলনগর উপজেলার চরফলকন এলাকার নিখোঁজ জেলে তাজল ইসলামের বাবা আবদুল খালেক কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, তাজল ইসলামই তার পরিবারের উপার্জনের একমাত্র উৎস ছিল। এখন সেই ছেলেরই কোনো সন্ধান নেই। তার এ নিখোঁজ হওয়ার খবর শুনার পর থেকে পরিবারের সদস্যরা শুধু আহাজারি করছেন।একই এলাকার নিখোঁজ জেলে জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে মুরাদ হোসেন বলেন,সাগরে যাওয়ার পর ১৫ নভেম্বর বাবার সাথে কথা হয়েছে। তারপর অনেকবার চেষ্টা করেও তার সাথে কথা বলতে পারছি না। তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।ট্রলার মালিক নজির হোসেন কোম্পানি জানান, প্রায় এক কোটি ১০ লাখ টাকা মূল্যের এফভি রানা’ নামের ওই ট্রলারটি নিয়ে ১৯ জন জেলে ১৫ নভেম্বর সকালে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে যান। তিনি বলেন,সাধারণত মাছ শিকার শেষে আট থেকে ১০ দিনের মধ্যে সাগর থেকে জেলেরা ফেরত আসার কথা। কিন্তু এখন পর্যন্ত তাদের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। এ ঘটনায় গত ৩ ডিসেম্বর কক্সবাজার সদর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। কক্সবাজার ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আহম্মদ জানান, ট্রলারের ইঞ্জিন বিকল বা দিক হারিয়ে বাংলাদেশি জলসীমা অতিক্রম করে ওই জেলেরা ভারত, মিয়ানমার অথবা শ্রীলঙ্কার সীমানায় ঢুকে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অথবা কোনো জাহাজের সাথে ধাক্কা লেগে ট্রলারটি ডুবেও যেতে পারে।

তিনি বলেন,সমুদ্র থেকে ফিরে আসা বিভিন্ন জেলেদের কাছ থেকে নিখোঁজ জেলেদের খোঁজ নেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। পাশাপাশি নিখোঁজ ট্রলার ও জেলেদের সন্ধান পেতে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী ও পুলিশ প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নিখোঁজ

৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
১৩ অক্টোবর, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ