পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
কাশ্মীরে স্বাধীনতাকামীদের বিক্ষোভ দমাতে ভারতীয় বাহিনীর নির্মমতা
ইনকিলাব ডেস্ক : ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরে সাম্প্রতিক সময়ে স্বাধীনতাকামী বিক্ষোভ দমাতে আধা সামরিক বাহিনী এক মাসে প্রায় সাড়ে ১৩ লাখ ছররা গুলি ব্যবহার করেছে। একই সময়ের মধ্যে সাড়ে আট হাজার কাঁদানে গ্যাসের শেলও নিক্ষেপ করা হয়েছে। আধা সামরিক বাহিনীর ছোড়া ছররা গুলি ও কাঁদানে গ্যাসে বিগত ৪২ দিনে ৬৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন। বহুসংখ্যক মানুষ আহত হয়েছেন। অনেকে অন্ধ হয়ে গেছেন। সম্প্রতি আদালতে দায়েরকৃত এক মামলার জবাবে ভারতের কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ বাহিনী এই হিসাব দাখিল করেছে। তারা বলছে, ছররা গুলি ব্যবহার না করে যদি তারা গুলি ব্যবহার করতেন, তাতে অনেক বেশি মানুষের মৃত্যু হতে পারত। ভারত শাসিত জম্মু ও কাশ্মীরের স্বাধীনতাকামী নেতা বুরহান ওয়ানির নিরাপত্তারক্ষীদের গুলিতে মৃত্যুর পর থেকেই সেখানে চলছে ব্যাপক বিক্ষোভ। ওই বিক্ষোভ দমনে পুলিশ এবং আধা সামরিক বাহিনী ব্যাপক হারে ছররা গুলি ব্যবহার করে। গত ৮ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ওই বিক্ষোভে এখনো পর্যন্ত অন্তত ৬৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন। কিন্তু মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ছররা গুলিতে। আদালতে দায়ের করা একটি জনস্বার্থ মামলার জবাব দিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ বাহিনী জানিয়েছে, তারা ১১ অগাস্ট পর্যন্ত বিক্ষোভ শুরুর ৩৪তম দিন পর্যন্ত তিন হাজার ছররা গুলির কার্তুজ ছুঁড়েছে, অর্থাৎ প্রায় সাড়ে ১৩ লাখ ছররা ছোড়া হয়েছে। একই সময়ে সাড়ে আট হাজার কাঁদানে গ্যাসও নিক্ষেপ করা হয়েছে। কাশ্মীরের হাসপাতাল প্রশাসন বলছে, এখনো পর্যন্ত ছররায় আহত ৬০০ মানুষের অপারেশন করা হয়েছে যাদের মধ্যে ১১২ জনের চোখে ছররা লেগেছে। আহতদের অনেকের পরিবার বলছে, অপারেশনের পরেও আহতরা চোখে দেখতে পাচ্ছেন না। চিকিৎসকরা বলছেন, অনেক ক্ষেত্রেই ছররা গুলি বন্দুকের গুলির থেকেও মারাত্মক এবং প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে। রাজা হরি সিং হাসপাতালের শল্য চিকিৎসক ড. জাভেদ বলেন, গুলির আঘাত শুধুমাত্র একটি-ই হয়, কিন্তু ছররা মানুষের শরীরে একইসঙ্গে অনেকগুলো আঘাত বা ছিদ্র তৈরি করে দেয়। অপারেশনের সময়ে দেহে থেকে যাওয়া সবগুলো ছররার সন্ধান পাওয়াও কঠিন। এর ফলে আহতের মৃত্যুও হতে পারে। একসময় শিকার করার জন্য ছররা গুলি ব্যবহার করা হতো। ছোট ছোট ধাতব বলের ভেতরে বারুদ ভরে তারপরে প্লাস্টিকের আচ্ছাদন দিয়ে একেকটি ছররা তৈরি হয়। একেকটি কার্তুজে সাড়ে ৪০০ ছররা থাকেÑ যেটা বন্দুক থেকে ছোড়া হলে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে বিক্ষোভকারীদের আহত করে। এই একই ছররা বিএসএফ বেশ কয়েক বছর ধরেই ব্যবহার করছে সীমান্তে। এই ছররা গুলি দেয়া হচ্ছে সীমান্তরক্ষীদের। এর আঘাতে সীমান্তে গত কয়েক বছরে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে। বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।