পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
শান্তিপূর্ণভাবেই ভারতের কেন্দ্র শাসিত রাজ্য জম্মু-কাশ্মীরে শেষ হল জেলা উন্নয়ন পরিষদের ভোটগ্রহণ পর্ব। প্রথম দফায় মোট ৪৩ আসনে ভোটগ্রহণ হয়। গত বছর জম্মু-কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের পর শনিবারই প্রথম সেখানে নির্বাচন হয়। প্রথম দফায় এদিন ‘ডিডিসি’ নির্বাচনের ৪৩ আসনে ভোট গ্রহণ হয়। এর মধ্যে ২৫টি আসন ছিল কাশ্মীর উপত্যকায়। বাকি ১৮টি আসন জম্মু অঞ্চলে। মোট ২৯৬ জন প্রার্থী লড়াই করেছেন। কোভিড-১৯ স্বাস্থ্যবিধি মেনেই সকাল ৭টা থেকে শুরু হয় এই ভোটগ্রহণ পর্ব। কোন বিরতি ছাড়াই তা চলে দুপুর ২টা পর্যন্ত। প্রত্যেক ভোটার ও ভোটকর্মীদের মাস্ক পরা বাধ্যতাম‚লক করা হয়েছিল। ভোট কেন্দ্রে প্রবেশের আগে ভোটারদের থার্মাল স্ক্রিনিং করা হয়। সকাল ১১টা নাগাদ ভোটের শতকরা হার ছিল ২২.১২ শতাংশ। এই নির্বাচনে মূলত ত্রিমুখী লড়াই হয়। এই তিনটি দল হল ‘পিপলস অ্যালায়েন্স ফর গুপকর ডিক্লারেশন’ (পিডিপি, ন্যাশনাল কনফারেন্সসহ মোট ছয়টি আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের জোট) বিজেপি এবং সাবেক অর্থমন্ত্রী আলতাফ বুখারির ‘আপনি পার্টি’। ডিডিসি নির্বাচনের পাশাপাশি এদিন বেশ কিছু পঞ্চায়েতের খালি আসনেও উপ-নির্বাচন নেওয়া হয়। যদিও পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি (পিডিপি) সভাপতি তথা জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি অভিযোগ করেছিলেন যে ‘গুপকার অ্যালায়েন্স’এর জোট প্রার্থীদের কাশ্মীর উপত্যকায় নির্বাচনী প্রচারে অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হয়নি। তবে মেহবুবার সেই অভিযোগ খারিজ করে রাজ্যটির মুখ্য নির্বাচন কমিশনার কে.কে.শর্মা জানিয়েছেন, এমন কিছু স্পর্শকাতর এলাকা আছে যেখানে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা না নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা করাটা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। তাই সেখানে বিধিনিষেধ ছিল। এদিকে ডিডিসি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কায় থাকায় গোটা জম্মু-কাশ্মীর জড়ে নিরপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছিল। পাকিস্তান সীমান্তবর্তী ‘লাইন অব কন্ট্রোল’ (এলওসি) এবং আন্তর্জাতিক সীমান্ত বরাবর কঠোর নজরদারি ছিল। রাজ্যটির একাধিক গুরুত্বপ‚র্ণ স্থানগুলোকেও নিরাপত্তা বলয়ে মুড়ে ফেলা হয়েছিল। এ ব্যাপারে রাজ্য পুলিশের আইজি (জম্মু অঞ্চল) মুকেশ সিং জানান, ‘স্থানীয় নির্বাচন হলেও লোকসভা ও বিধানসভার নির্বাচনের মতোই নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। সহিংসতা-মুক্ত নির্বাচন করতে প্রতিটি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রগুলির সামনে রাজ্য পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছিল। এর পাশাপাশি জঙ্গি হামলা ঠেকাতে প্রস্তত রাখা হয়েছিল কুইক রেসপন্ন টিম (কিউআরটি) বাহিনীকেও।’ এদিনে জম্মু ডিভিশনাল কমিশনার সঞ্জীব ভার্মা জানান, ‘প্রথম দফার ভোট গ্রহণের জন্য সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। ডিডিসি নির্বাচনকে ঐতিহাসিক বলেও বর্ণনা করেন তিনি। বন্দিপোরা জেলার এক ভোটার জানান, ‘মানুষের মধ্যে অনেক প্রত্যাশা আছে যে এবার হয়তো কিছু উন্নয়নের কাজ হবে তাই এই নির্বাচন খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমি সকালেই আমার ভোট দান করেছি।’ মোট আটটি পর্বে জম্মু-কাশ্মীরের ২৮০ আসনে এই ‘জেলা উন্নয়ন পরিষদ’এর নির্বাচন হবে। কেন্দ্র শাসিত এই রাজ্যটির ২০টি জেলার প্রত্যেকটিতে ১৪ জন করে নির্বাচিত হবেন। শেষ দফার নির্বাচন আগামী ১৯ ডিসেম্বর। গণনা ২২ ডিসেম্বর। নির্বাচনে প্রতিটি আসনে একদিকে আছে বিজেপি, অন্যদিকে বিরোধী জোট, যার মধ্যে ওমর আবদুল্লার ন্যাশনাল কনফারেন্স, মেহবুবা মুফতির পিডিপি এবং কাশ্মীরের অন্য দলগুলি আছে। কংগ্রেস তাদের সঙ্গে আসন সমঝোতা করেছে। গুপকর জোটের ঘোষিত অবস্থান হলো, তারা ৩৭০ ধারা বিলোপের বিরোধী। এবারের এই নির্বাচন শুধু যে ৩৭০ ধারা বিলোপের পর প্রথম নির্বাচন তাই নয়, আরো কিছু দিক থেকে এই নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ। ৩৭০ ধারা বিলোপর পর কাশ্মীরের নেতাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ফারুক আবদুল্লা, ওমর আবদুল্লা, মেহবুবা মুফতিরা কেউ প্রায় এক বছর, কেউ তারও বেশি সময় ধরে বন্দি অবস্থায় কাটিয়েছেন। মুক্তি পাওয়ার পর তারা একজোট হয়েছেন। এই প্রথমবার হাত মিলিয়েছেন ওমর আবদুল্লা ও মেহবুবা মুফতি। তাঁদের জোটে সিপিএমও আছে। তারা ৩৭০ ধারা বিলোপের বিরুদ্ধে এবং জম্মু ও কাশ্মীরকে দুইটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার বিরোধী। জেলার নির্বাচন হলেও সেই বিষয়গুলিই তারা তুলবেন। এনডিটিভি, আল-জাজিরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।