পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশের শুদ্ধি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। মাদক সেবনের অভিযোগে এবার ডিএমপির ১০ পুলিশকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এমন অভিযানের প্রশংসা করেছেন বিশেষজ্ঞরা। এ অভিযানে এখন পর্যন্ত ৬৮ জনের মাদক নেয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে সাতজন এসআই, একজন সার্জেন্ট, পাঁচজন এএসআই, পাঁচজন নায়েক এবং ৫০ জন কনস্টেবল। তাদের মধ্যে ৪৩ জনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা এবং ১৮ জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। মামলা নিষ্পত্তি শেষে ওই ১৮ জনের মধ্যে ১০ জনকে চাকরিচ্যুত করা হয়। ডিএমপি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক খন্দকার ফারজানা রহমান দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, অনেক দিন আগে থেকেই কিছু পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মাদক সেবনের অভিযোগ ছিল। আবার কিছু পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে কারো কারো বিরুদ্ধে মাদকের মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ ছিল। তবে কেউই আইনের ঊর্ধ্বে না। তাই পুলিশের বিরুদ্ধে মাদকবিরোধী অভিযান শুরু হয়েছে। এটা খুবই পজেটিভ। এই অভিযানকে সাধুবাদ জানাই। তিনি আরো বলেন, ইতোমধ্যে ১০ পুলিশ সদস্যকে চাকরি থেকে বাদ দেয়া হয়েছে; বিষয়টি খুবই ভালো উদ্যোগ। মাদকের সাথে যেসব পুলিশ সদস্য জড়িত তাদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন হলে কেউ এ ধরনের অপরাধ করবে না। তবে এ ধরনের অপরাধীদের চিহিৃত করে শাস্তি দেয়া উচিৎ। আর এ ধরনের সংবাদ বেশি করে প্রচার করা প্রয়োজন জানিয়ে তিনি বলেন, পুলিশের বিরুদ্ধে শাস্তি হয় না; এমন ধারণা ছিল সাধারণ মানুষের মধ্যে। তবে ১০ পুলিশ সদস্যকে চাকরিচ্যুত করায় মানুষের ধারণার কিছুটা পরিবর্তন হবে বলে মনে করেন তিনি।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, পুলিশ মহাপরিদর্শক ড. বেনজীর আহমেদ দায়িত্ব নেয়ার পর পাঁচটি বিষয়ে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। এর মধ্যে একটি হলো মাদক নির্মূল করা। পুলিশ মাদক থেকে দূরে থাকবে, আবার মাদক কারবারিদেরও রুখে দেবে। মাদকের অভিশাপ থেকে দেশকে মুক্ত করার বিষয়টি পুলিশ অগ্রাধিকার দিতে চায়। তবে ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় নানা সময়ে পুলিশের অসাধু সদস্যদের নাম উঠে আসে, যারা মাদক সিন্ডিকেটে নানাভাবে যুক্ত।
এদিকে, ঢাকা মহানগর পুলিশের বর্তমান কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম গতবছর সেপ্টেম্বরে দায়িত্ব নেয়ার পর পুলিশ সদস্যদের ডোপ টেস্ট করার ঘোষণা দেন। এরপর শুরু হয় মাদকের বিরুদ্ধে শুদ্ধি অভিযান। এ অভিযানে এখন পর্যন্ত ৬৮ জনের মাদক নেয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। মাদক সেবন ছাড়াও তারা এ কারবারে জড়িত, মাদক দিয়ে কাউকে ফাঁসানো, উদ্ধার করা মাদক জব্দ তালিকায় কম দেখানোর মতো অভিযোগও রয়েছে কয়েকজন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে।
সূত্রমতে, ডিএমপিতে পুলিশ সদস্যদের ডোপ টেস্ট অব্যাহত থাকবে। পরীক্ষায় পজেটিভ হলেই তাকে শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের এমন প্রক্রিয়ায় ডোপ টেস্ট করার ঘটনা নজিরবিহীন। এর আগে বিভিন্ন সময় দু-একজন সদস্য মাদক সেবন বা মাদক বিক্রির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বিচ্ছিন্নভাবে শাস্তির মুখোমুখি হয়েছেন।
তবে এভাবে শুদ্ধি অভিযান চালিয়ে মাদকাসক্ত সদস্যদের শনাক্ত করার পরিকল্পিত প্রয়াস অতীতে দেখা যায়নি। বাহিনীর মাদকাসক্ত সদস্যদের কঠোর বার্তা দিতে চায় পুলিশ প্রশাসন। পাশাপাশি অন্যান্য পেশার মাদকাসক্তদেরও শোধরাতে হবে। নতুবা কাউকে ছাড় দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
গতকাল ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের ডিসি মো. ওয়ালিদ হোসেন দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। মাদকের ব্যাপারে আমরা জিরো টলারেন্স নীতি নিয়ে চলি। এখানে কাউকে ছাড় দেয়ার সুযোগ নেই।
পুলিশের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলছেন, নানা কারণে পুলিশের এসব সদস্য মাদকাসক্ত হন। তা হলো- সঙ্গদোষ, পারিবারিক অশান্তি, অনেক আগে থেকে মাদকের সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে সম্পৃক্ত হওয়া।
ডিএমপি সূত্রে জানা যায়, মাদকের ব্যাপারে শুদ্ধি অভিযানের ব্যাপারে পুলিশের হাইকমান্ড থেকে একাধিকবার বার্তা পাওয়ার পর তা মাঠ পর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের জানানো হয়। বারবার সতর্ক করার পরও যারা মাদকের পথ থেকে নিজেদের সরিয়ে নিচ্ছে না, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়। এমন কঠোর বার্তা পাওয়ায় অনেকে নিজে নিজেই মাদক থেকে দূরে চলে এসেছেন বলেও জানা গেছে।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে উত্তরায় র্যাবের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে নির্দেশ দেন। এরপর থেকেই মাদকবিরোধী অভিযান শুরু করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তবে এখনও মাদক কারবার চলছে। করোনা মহামারির মধ্যেও ইয়াবাসহ মাদক কারবারিরা সক্রিয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।