Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

‘আউট অব দ্য বক্স’ ক্রিকেটই বরিশালের ভরসা

বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপ, পিএসএলে খেলায় বাড়তি সুবিধা দেখছেন তামিম

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২২ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

বিসিবি প্রেসিডেন্ট’স কাপের পর তামিম ইকবাল উড়ে গিয়েছিলেন পাকিস্তানে। দেশটির ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক টি-টোয়েন্টি আসর পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) খেলেছেন তিনটি ম্যাচ। সেখানে মোহাম্মদ আমিরসহ ভালো মানের বোলারদের মুখোমুখি হওয়ার অভিজ্ঞতা হয়েছে তার। ব্যাট হাতেও একেবারে খারাপ করেননি। সবমিলিয়ে খেলার মধ্যে থাকায় আসন্ন বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে ভালো করার প্রত্যাশায় আছেন বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক। টুর্নামেন্টটি মাঠে গড়াবে আগামী ২৪ নভেম্বর। আসরে তামিম নেতৃত্ব দেবেন ফরচুন বরিশালকে। প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে সাকিব আল হাসানের জেমকন খুলনার বিপক্ষে লড়বে তার দল।
গতকাল মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে বাঁহাতি ওপেনিং ব্যাটসম্যান তামিম বলেছেন, দল বানাতে বিসিবির বেঁধে দেওয়া বাজেটের থেকেও অতিরিক্ত খরচ হয়েছে বরিশালের। তবে তা করেও খাতায়-কলমে সেরাদের কাতারে নাম উঠছে না তাদের। খোদ অধিনায়ক তামিম বলছেন, তাদের ভুল হয়েছে প্লেয়ার্স ড্রাফটে! তাই কেবল ‘আউট অব দ্য বক্স’ খেললেই আসতে পারে সাফল্য।
শুরুতেই তাকে বলতে হলো পিএসএলের অভিজ্ঞতা নিয়ে। বঙ্গবন্ধু কাপের মধ্যে নানারকম ভিন্নতা থাকলেও ধারাবাহিক ক্রিকেট খেলার বিষয়টি (পিএসএলে) কাজে দেবে, ‘দুইটা দুইরকম খেলা। তবে একটা ভালো জিনিস হয়েছে। ভালো দলের সঙ্গে তিন ম্যাচ খেলেছি। এমনিতে তো অতো খেলা হচ্ছে না। ওইটাই সাহায্য করবে যে, আমি ম্যাচের মধ্যেই আছি। আর আশা করি, টুর্নামেন্ট ভালো হবে, ক্রিকেট ভালো হবে।’ পিএসএলে তিন ম্যাচেই ভালো শুরু পেয়েছিলেন তামিম। কিন্তু ইনিংস বড় করতে পারেননি। তার ব্যাট থেকে এসেছিল যথাক্রমে ১৮, ৩০ ও ৩৫ রান। তাতে কিছুটা আক্ষেপ থাকলেও ইতিবাচক দিক দেখছেন তিনি, ‘আমার কাছে মনে হয়, তিনটা ম্যাচেই আমি যেভাবে শুরু করেছিলাম, খুবই ইতিবাচক ছিল। আমি যে পরিকল্পনা করে ব্যাট করছিলাম, আমি সফল হচ্ছিলাম। কিন্তু সেটা ছোট সময়ের জন্য। তো এটাই একটা ধরতে হয় যে, ওই শুরুর পর আমার অন্তত ৫০-৬০ করা উচিত ছিল। যা আমি পারিনি। কিন্তু আমি খুশি যেভাবে আমি বল মারতে পেরেছি।’
আগের ম্যাচ বা টুর্নামেন্ট যতই ভালো বা খারাপ কাটুক না কেন, নতুন দিনে সাজাতে হয় নতুন পরিকল্পনা। তাই সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বাইরে খেলার সুবিধা নিয়ে বঙ্গবন্ধু কাপে দারুণ শুরু চান তামিম, ‘তিনটা ম্যাচ খেলা মানসম্পন্ন বোলিংয়ের বিপক্ষে। অবশ্যই বাড়তি পাওয়া। যেটা হলো, তিন ম্যাচ খেলেন বা পাঁচ ম্যাচ খেলেন, নতুন টুর্নামেন্টে শুরু করতে হবে ভালোভাবে। আমি খেলার মধ্যে আছি। অন্যদের এই সুবিধা ছিল না। আমি আশা করি, ভালো হবে।’

জাতীয় দলের তারকা
সব সংস্করণ মিলিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে জাতীয় দলে খেলে থাকেন বা বিবেচনায় আছেন এমন খেলোয়াড় বরিশালের আছে পাঁচজন- তামিম ইকবাল, আফিফ হোসেন, তাসকিন আহমেদ, মেহেদী হাসান মিরাজ ও আবু জায়েদ চৌধুরী রাহি। তবে যদি টি-টোয়েন্টির হিসাব করা হয়, তবে কেবল অধিনায়ক তামিম আর অলরাউন্ডার আফিফই পান বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দলে জায়গা।

উঠতি তারকা
এক্ষেত্রে প্রথমেই নাম আসবে ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমনের। তামিমের সঙ্গে ইনিংস ওপেন করার সুযোগ পাবেন তিনি। বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান পরিস্থিতি বিচার করে খেলার সামর্থ্য রাখেন। তৌহিদ হৃদয় সবশেষ বিসিবি প্রেসিডেন্ট’স কাপে আলো ছড়িয়েছেন। তবে সেটা ছিল ৫০ ওভারের ম্যাচ। থিতু হতে কিছুটা সময় লাগে তার। টি-টোয়েন্টিতে সেই সময়টা নিশ্চিতভাবেই পাবেন না তিনি।

শক্তি-দুর্বলতা
বরিশালের শক্তির জায়গা ধরা যেতে পারে তাদের ছন্দে থাকা পেস আক্রমণকে। তাসকিন বেশ কিছু দিন ধরেই আছেন সেরা অবস্থায়। ধারাবাহিকভাবে ভালো করা এই পেসারের কাছ থেকে এই টুর্নামেন্টেও বড় ঝলক মিলতে পারে। প্রেসিডেন্ট’স কাপে নিজেকে চিনিয়ে আলোয় এসেছেন তরুণ সুমন খান। খুব গতিময় না হলেও উইকেট এনে দিতে পারেন। এই দুজনের সঙ্গে দুইদিকে স্যুয়িংয়ে ওস্তাদ অভিজ্ঞ আবু জায়েদের সমন্বয় বেশ ভালো। আছেন ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত পারফর্মার কামরুল ইসলাম রাব্বিও।
এই দলের দুর্বলতা হয়ে দেখা দিতে পারে ব্যাটিং। বিশেষ করে, টপ অর্ডারে তামিম ও আফিফকে রাখলে মিডল অর্ডার বেশ দুর্বল। ইরফান শুক্কুরকে উপরের দিকে খেলালে শেষ দিকের ঝড়ের জন্য কেউ নেই। ফলে হৃদয়ের উপর মিডল অর্ডারে ভালো করার অনেক চাপ থাকবে। সেই সঙ্গে ওপেনার সাফ হাসানকে কোন পজিশনে তারা খেলাবে, এটাও কৌত‚হলের বিষয়।

ঘরোয়া পারফর্মার
ঘরোয়া পারফর্মার হিসেবে সেরা একজনকেই নিয়েছে বরিশাল। দারুণ ছন্দে থাকা ইরফান শুক্কুর হতে পারেন দলের ট্রাম্পকার্ড। তবে এই জায়গায় স্পিন আক্রমণে ভুগতে হতে পারে তাদের। সেরা অবস্থায় না থাকা সোহরাওয়ার্দি শুভর জায়গায় এনামুল হক জুনিয়রের মতো কাউকে বিবেচনায় আনা যেত কিনা সেই প্রশ্ন ওঠার সুযোগ আছে। অবশ্য সে ঘাটতি পুষিয়ে দিতে অফ স্পিনে মেহেদী হাসান মিরাজ আর লেগ স্পিনে আমিনুল ইসলাম বিপ্লব থাকছেন।

এক্স-ফ্যাক্টর
আগ্রাসী ব্যাটিং, কার্যকর স্পিন আর দুর্ধর্ষ ফিল্ডিং মিলিয়ে আফিফ হোসেন দারুণ একটি প্যাকেজ। এই দলের এক্স-ফ্যাক্টর হতে পারেন তিনি।

প্রত্যাশা-লক্ষ্য
অধিনায়ক তামিম স্পষ্টই বলেছেন, দল নিয়ে তার খচখচানি আছে। সেজন্য ভিন্ন চিন্তায় চমকে দেওয়ার আশায় আছেন তিনি, ‘যে দলটা আছে, আমাদের সফল হতে হলে আউট অব দ্য বক্স ক্রিকেট খেলতে হবে। স্বাভাবিক যেভাবে পরিকল্পনা বানিয়ে খেলা হয়, সেভাবে করলে জেতাটা কঠিন হবে আমাদের জন্য। যদি আউট অব দ্য বক্স চিন্তা করি, অন্য দলকে চমকে দিতে পারি, তাহলে সম্ভব। আমার এখানে দুই-তিনজন যাদের নিয়ে কেউ আশা করছে না, তারা ভালো করলে যেকোনো কিছুই সম্ভব।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ