পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অস্বাভাবিকভাবে মারা যাওয়া ৫ নারীর বিষয়ে তদন্ত করতে গিয়ে সিআইডি ময়নাতদন্ত রিপোর্টে দেখতে পান পাঁচ নারীর মৃতদেহে একই ব্যক্তির শুক্রাণু। সিআইডির কর্মকর্তাদের ধারণা ছিল এসব নারীর মৃত্যুর পেছনে কোনো সিরিয়াল রেপিস্ট অথবা সিরিয়াল কিলারদের সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে। কিন্তু সুরতহাল কিংবা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে মৃতদেহে আঘাতের চিহ্ন না পাওয়ায় তদন্তে নতুন মোড় নেয়। মর্গেই মৃত নারীদের ধর্ষণ করা হতে পারে সন্দেহে শুরু হয় সিআইডির তদন্ত। সিআইডির তদন্তে উঠে আসে সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজের মর্গেই মৃত নারীদের ধর্ষণ করা হতো। আর এর সঙ্গে জড়িত ওই মর্গের সহকারী ডোম মুন্না ভগত (২০)। গত বৃহস্পতিবার তাকে গ্রেফতার করে সিআইডি। গতকাল শুক্রবার সিআইডির পক্ষ থেকে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। মৃত নারীদের ধর্ষণ করার অভিযোগে গ্রেফতার মুন্না ভগত আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। গতকাল শুক্রবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশিদ জবানবন্দি গ্রহণ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
আদালতের সংশ্লিষ্ট থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক মনির আসাদ বলেন, গতকাল মুন্না ভগতকে আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। একইসঙ্গে মুন্না স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে রাজি হওয়ায় তা রেকর্ড করার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক জবানবন্দি রেকর্ড করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি রেজাউল হায়দার বলেন, বিকৃত মানসিকতা থেকে এরকম কাজ করেছে মুন্না ভগত। সে এ সব নোংরা কাজ করার কথা স্বীকারও করেছে। আর কেউ জড়িত রয়েছে কি না-তা জানতে তদন্ত চলছে।
সিআইডির একজন কর্মকর্তা জানান, সহকারী ডোম মুন্না ভগত সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজের মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য আসা কমবয়সী নারীদের ধর্ষণ করত। সে ডোম জতন কুমার লালের সহযোগী হিসেবে কাজ করত। দুই-তিন বছর ধরে সে মর্গে থাকা মৃত নারীদের ধর্ষণ করে আসছিল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মুন্না শতাধিক মৃত নারীকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে।
সিআইডি সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন কারণে মৃত বা হত্যার পর সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ মর্গে আসা নারীর মৃতদেহে শুক্রাণুর উপস্থিতি পায় ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগ। পরীক্ষার জন্য কয়েকটি এইচভিএস (হাই ভ্যাজাইনাল সোয়াব) ফরেনসিক ডিএনএ ল্যাবে পাঠানো হয়। সেখানে আলামতসমূহের পূর্ণাঙ্গ ডিএনএ প্রোফাইল তৈরি করা হয়। কয়েকটি নারীর মৃতদহে পাওয়া শুক্রাণু একই ব্যক্তির বলে ডিএনএ পরীক্ষায় উঠে আসে। নড়েচড়ে উঠে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সিআইডির ঢাকা মেট্রো-পশ্চিম বিভাগের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, পরবর্তীতে সিআইডি কর্মকর্তারা প্রাপ্ত আলামত ও প্রতিটি অপরাধ সংগঠনের প্রক্রিয়া বা মোডাস অপরেন্ডি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিশ্লেষণপূর্বক এ সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে, মর্গের ভেতর থেকে কেউ না কেউ মৃতদেহে যৌন লালসা চরিতার্থ করেছে। সিআইডি গোয়েন্দাদের অনুসন্ধানে নতুন ইঙ্গিত বা ক্লু পাওয়ায় প্রত্যেকটি মৃতদেহ মর্গে আনার পর তার কার্যধারা বিশ্লেষণ করা হয়।
এতে দেখা যায়, সবগুলো ক্ষেত্রেই ময়নাতদন্তের জন্য আনা লাশসমূহ পরবর্তী দিনে লাশ কাটার অপেক্ষায় মর্গে রেখে দেয়া হতো। এ পরিপ্রেক্ষিতে সিআইডি কর্মকর্তারা মর্গে কর্মরত ডোমদের ওই মামলার ময়নাতদন্তকালীন গতিবিধি পর্যালোচনা করে দেখেন যে, হাসপাতালের ডোম মুন্না ভগত আলোচ্য পাঁচটি ঘটনার সময় রাত্রীকালীন লাশ পাহারা দেয়াসহ মর্গে অবস্থান করে। সিআইডি’র অনুসন্ধানে ডোম মুন্না ভগত এ অপরাধে জড়িত আছে মর্মে প্রমাণ পায়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা দায়ের করে সিআইডি। তদন্তকারী কর্মকর্তার নেতৃত্বে একটি দল গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে মুন্নাকে গ্রেফতার করে। ডিএনএ ল্যাবে পরীক্ষায় যাদের শরীরে শুক্রাণুর আলামত মিলেছে তাদের বয়স ১২ থেকে ২০ বছর। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছে মুন্না।
সিআইডি সূত্রে জানা গেছে, গ্রেফতার মুন্না সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গে ৪ বছর ধরে ডোম জতন কুমার লালের সহকারী হিসেবে কাজ করছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।