Inqilab Logo

সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

পাহাড় কাটা-বালু উত্তোলন থামছে না

জাকের উল্লাহ চকোরী, কক্সবাজার থেকে : | প্রকাশের সময় : ১৯ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০২ এএম

কক্সবাজারের চকরিয়া ও রামুতে কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না পাহাড় কাটা। সমান তালে চলছে নদী থেকে বালু উত্তোলন। রেলের রাস্তা নির্মাণের নাম ব্যবহার করে এবং চলমান ভরাট কাজে ২০-২৫টি ডাম্পার লাগিয়ে রামুর বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে হরদম মাটি বিক্রি করছে প্রভাবশালী বিশাল সিন্ডিকেট। সরকার দলের সাইনবোর্ড ব্যবহার করে পাহাড়ের মাটি কোটি টাকায় বিক্রি করছে এ সিন্ডিকেটটি।
রামুর দক্ষিণের ২ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং উত্তরের ১ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে পাহাড় কাটা চলছে নির্বিচারে। উন্নয়ন প্রকল্পের নামে চলছে এ মাটি ও বালু বাণিজ্য। সেই সাথে যোগ হয়েছে জোয়ারিয়ানালা বাজারের পাশে ড্রেজার মেশিনে বালু উত্তোলনের হিড়িক। প্রশাসনের অভিযান কাজে আসছে না।
সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা পরির্দশনে মাটি কেটে বিরাণ ভূমি হওয়ার মত অবস্থা দেখা গেছে রামুর ৩টি ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকায়। উক্ত সিন্ডিকেটের কারণে রামুর অর্ধশত সবুজ পাহাড় বিরাণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে। উন্নয়ন প্রকল্পে মাটি ভরাটের নাম করে জোয়ারিয়ানালা, রশিদ নগর চাকমারকুল, রাজারকুল, ফতেখারকুল ইউনিয়ন যেন বিরাণভ‚মি। প্রতিদিন ২৫-৩০টির মত ডাম্পার অর্ধশত স্পট থেকে মাটি কেটে পরিবেশ ধ্বংস করছে যার নেতৃত্বে রয়েছে শক্তিশালী সিন্ডিকেট।
সরেজমিনে দেখা যায়, জোয়ারিয়ানালার সিকদারপাড়া, আশকরখিল, মহিষকুম, মোরাপাড়া, ফরেস্ট রোড, মাদরাসা গেইট, ছাগইল্ল্যাকাটায় পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি করছে ৭ জন প্রভাবশালী। তারা সকলে দলের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতা পরিচয় দিয়ে পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি করছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। তাদের সামনে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না। ফলে তারা নির্বিচারে পাহাড় কাটছে বিনা বাধায়। মাটি বিক্রির কারণে পাহাড়ে বসবাসরত অনেক অসহায় পরিবার হুমকির মুখে পড়েছে। রশিদ নগর ইউনিয়নে ৮ জনের একটি সিন্ডিকেট পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি করছে রশিদ নগরের কানচিরাঘোনা ও লুইল্যাঘোনা পাহাড় এলাকায়।
এছাড়াও দিনে রাতে জেয়ারিয়ানালার মহিষকুম, আশকরখিল, রশিদগগরের কানচিরাঘোনা, লাইল্যাঘোনা, কালিরছড়া, মোরাপাড়া, চাকমারকুল, রাজারকুল এবং ফতেখারকুল ইউনিয়নের কলঘর বাজারের উত্তরে নতুন ব্রিজের পশ্চিমে বাঁকখালীর প্রায় ১ কিলোমিটার নদীর পাড়, নতুন চরপাড়া, শ্রীমুরা, শাহমদের পাড়া, মোহাম্মদপুরা, রউর ঘোনা, রাজারকুল সিকদারপাড়া, পশ্চিম মেরংলোয়াসহ ৫০টি স্পট থেকে নির্বিচারে মাটি কেটে বিক্রি করা হচ্ছে। রামু উপজেলা নিবার্হী অফিসার প্রণয় চাকমা বলেন, জোয়ারিয়ানালায় বালু উত্তোলনের বিষয়ে আমার কাছে অভিযোগ আছে। এ ব্যাপারে শিগগিরই ব্যবস্থা নেব।
যারা ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করছে তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে রাজারকুলে যারা বালু বিক্রি করছে তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসক স্যারের নেতৃত্বে একটি কমিটি আছে। উক্ত কমিটি ব্যবস্থা নিতে পারবে।
কক্সবাজার পরিবেশ অধিদফতরের উপ-পরিচালক নাজমুল হুদা বলেন, পাহাড় কাটতে আমরা কাউকে অনুমতি দেয়নি এবং দেয়ার প্রশ্নই আসেনা। যারা পাহাড় কাটছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ ইতোপূর্বে প্রেরণ করেছেন বলেও তিনি জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বালু-উত্তোলন

২১ সেপ্টেম্বর, ২০২০

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ