Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নতুন ধানে নবান্ন উৎসব

এস এম উমেদ আলী, মৌলভীবাজার ও মো. মনসুর আলী, আদমদীঘি (বগুড়া) থেকে | প্রকাশের সময় : ১৭ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম

বাঙালির চিরায়ত ঐতিহ্যকে লালন করার পাশপাশি নতুন প্রজন্মকে এ ধারাবাহিকতার অংশ করে তুলতেই মৌলভীবাজারে পালিত হলো নবান্ন উৎসব। গতকাল পহেলা অগ্রহায়ণ নবান্ন উৎসব উপলক্ষে আয়োজিত ধান কাটার মাধ্যমে নবান্নের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান।
জেলা প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের আয়োজনে সদর উপজেলার পূর্ব হিলারপুর গ্রামে নবান্ন উৎসবের এই আয়োজন করা হয়। নবান্ন উৎসবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মল্লিকা দে, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরিফুল ইসলাম, জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা সামছুদ্দিন আহমদ, সদর উপজেলা কৃষি অফিসার সুব্রত কান্তি দত্তসহ অন্যরা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের চেয়ে এ বছরে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ হাজার ২৮০ হেক্টর বেশি চাষ হয়েছে। ২০ হাজার মেট্রিক টন চাল বেশি হওয়ার আশা করা হচ্ছে। এ বছর জেলায় এক লাখ ১ হাজার ৪৮০ হেক্টরে আমন ধানের চাষ হয়েছে। ২ লাখ ৯০ হাজার মেট্রিক টন চাল উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে, বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলা সদরসহ এলাকার প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে প্রতি বছর নবান্ন উৎসব পালন করা হয়। এবার দেশে চলছে মহামারি করোনা। এরপরও এলাকায় কয়েকদিন আগে থেকে নবান্ন উৎসবের আমেজ দেখা দেয়। ব্যাপক উৎসবমূখর পরিবেশের মধ্যে দিয়ে এই নবান্ন উৎসব পালন করা হয়।
এ দিনটি পালনে কৃষকদের ঘরে ঘরে আনন্দের যেন কোন কমতি থাকে না। জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সকল ধর্মের পরিবারের মানুষ এই নবান্ন উৎসব করে থাকে। যুগ যুগ ধরে চলে আসা আনন্দের এ দিনটি পালনে এবারও কোন ব্যতিক্রম দেখ যায়নি। দিনটি উপলক্ষে এলাকার কৃষকরা মৌসুমের আগাম জাতের নতুন ধান কেটে ঘরে তুলেছেন। পাশাপাশি পাড়া মহল্লায় গরু মহিষ খাসি জবাই করে গোশত ভাগাভাগি করে নেন। নতুন ধানের চাল দিয়ে পিঠাপুলি পায়েশ-পোলাও এবং নতুন চালের আটা, গুড় ও কলা দিয়ে শিরনি তৈরি করে আত্মীয়স্বজন পাড়া প্রতিবেশীদের নিয়ে খাবার ধুম পরে যায় গ্রামে গ্রামে। নবান্ন ছাড়া এই উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকার অনেক কৃষক নতুন চালের ভাত খান না। এরমধ্যে যেসব কৃষকের ধান পাকতে দেরি হয়ে তারা পরে নবান্ন করেন। আবার অনেকে স্থানীয় মসজিদে পোলাও পায়েশ দেয়ার পর নতুন চালের ভাত খান।
উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন চাপাপু, কুন্দুগ্রাম, নশরৎপুর, সান্তাহার, উপজেলা সদর ছাতিয়ানগ্রামসহ সান্তাহার পৌর এলাকার হাটে বাজারে গুরু-খাসি জবাই করা হয়। এর মধ্যে ছাতিয়ানগ্রাম ইউনিয়নের, শালগ্রাম, কোমারপুর, কালাইকুড়ি, কাল্লাগাড়ী, সাগরপুর, নিমাই দীঘি, বাগবাড়ি, অন্তাহার, দুর্গপুর পোওতা বশিপুর গ্রামে নবান্ন উৎসব চলে তিন চার দিন ধরে। কায়েত পাড়া গ্রামের কৃষক শফির উদ্দীন বলেন নবান্ন উপলক্ষে আগাম জাতের ধান কাটা শুরু করেছি এবং নতুন ধানের চাল দিয়ে নবান্ন করে পরিবার এবং প্রতিবেশীদের নিয়ে নতুন ধানের চালের পোলাও শিরনি খাওয়া হবে। উপজেলার শাল গ্রামের মাহমুদ হোসেন ভোলা জানান, তার বাড়িতে গত তিন দিন আগে থেকে আত্মীয়স্বজন আসতে শুরু করেছে পরিবারে ছোট বড় এবং প্রতিবেশী আত্মীয়স্বজন নিয়ে এক সাথে নবান্ন উৎসব পালন করে আনন্দ ভাগাভাগি করে নিব।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নতুন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ