মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
রাশিয়ায় কোভিড-১৯ টিকার যে ট্রায়াল বা পরীক্ষামূলক প্রয়োগের কাজ চলছিল তা ৯২% সফল বলে প্রাথমিক ফলাফলে দেখা গেছে। বিবিসির স্বাস্থ্য বিষয়ক সংবাদদাতা ফিলিপ্পা রক্সবি জানাচ্ছেন, ১৬ হাজার মানুষ স্বেচ্ছায় এই ট্রায়ালে অংশ নিয়েছিলেন। তাদের এক অংশকে স্পুটনিক ফাইভ নামের এ টিকা দেয়া হয়েছিল এবং বাকিদের যে ইঞ্জেকশন দেয়া হয়েছিল তাতে কোন ভ্যাকসিনের ওষুধ ছিল না। এদের মধ্যে ২০ জনের শরীরে এ টিকা ৯২% সফলতা দেখিয়েছে। কোন কোন বিজ্ঞানী এ খবরকে স্বাগত জানিয়েছেন। আবার কেউ কেউ মত দিয়েছেন, এ পরীক্ষার তথ্য খুব দ্রুত প্রকাশ করা হয়েছে।
কয়েকদিন আগেই ফাইজার এবং বায়োএনটেক কোম্পানি জানায়, তাদের উদ্ভাবিত ভ্যাকসিন কোভিড-১৯ প্রতিরোধে ৯০% সাফল্য দেখিয়েছে। তারা ৪৩ হাজার ৫শ’ মানুষের ওপর তাদের টিকা পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করেছিল। স্পুটনিক ভ্যাকসিন তুলনামূলকভাবে কম মানুষের ওপর প্রয়োগ করা হয়েছে, ফলে এর তথ্যউপাত্তও কম সংখ্যক পরীক্ষার ওপর নির্ভর করে দেয়া এবং পরীক্ষার আওতায় কম মানুষকে রাখার কারণে ট্রায়ালের সময় কোভিড সংক্রমণের কেসও তুলনামূলকভাবে কম ছিল। কিন্তু তারপরও প্রাথমিক এ গবেষণার ফলাফল নিশ্চিতভাবে ইতিবাচক। স্পুটনিক ফাইভ টিকা তৈরি করা হয়েছে মস্কোর এপিডেমিওলজি ও মাইক্রোবায়োলজি বিষয়ক জাতীয় গবেষণা কেন্দ্রে। এ মুহ‚র্তে বেলারুস, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ভারত এবং ভেনেজুয়েলায় তাদের উদ্ভাবিত টিকার তৃতীয় পর্যায়ের ক্লিনিকাল ট্রায়াল চলছে।
এখনও পর্যন্ত এ টিকা নিরাপদ বলেই মনে করা হচ্ছে, কারণ এর কোনওরকম অনিরাপদ প্রতিক্রিয়া এখনও পর্যন্ত দেখা যায়নি। রুশ গবেষকরা বলছেন, এ টিকা দুটি ডোজে প্রয়োগ করার প্রয়োজন হবে এবং যারা স্বেচ্ছায় এ ট্রায়ালে অংশ নিচ্ছে তাদের মধ্যে প্রথম ডোজটি দেবার ২১ দিন পরেও ‘অপ্রত্যাশিত কোন নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি’।
এখনও যেসব প্রশ্নের উত্তরের অপেক্ষায় : এখনও অনেক দূর যেতে হবে। এটা অন্তর্বর্তীকালীন তথ্যউপাত্ত। ফাইজার এবং বায়োএনটেকের ভ্যাকসিন ট্রায়ালের মত স্পুটনিক ভাইভ ট্রায়ালও এখন আরও তথ্য সংগ্রহ করছে। পূর্ণাঙ্গ এবং চ‚ড়ান্ত রিপোর্ট এখনও প্রকাশ করা বা বিশ্লেষণ করা হয়নি।
ফাইজার এবং স্পুটনিক দুটো ভ্যাকসিনেরই পরীক্ষা থেকে এখনও কিছু প্রশ্নের উত্তর জানা যায়নি। যেমন, এক- কোভিড-১৯ সংক্রমণ যার সবচেয়ে বড় ঝুঁকিতে রয়েছে বয়স্ক জনগোষ্ঠী এ দুটি সংস্থার উদ্ভাবিত ভ্যাকসিন তাদের জন্য কতটা কার্যকর। দুই- সাফল্যের দাবিদার এ দুই ভ্যাকসিন কতদিনের জন্য মানুষকে সুরক্ষা দিতে পারবে অর্থাৎ টিকা দেবার ফলে যে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হবে তার মেয়াদ কতদিন হবে?
রুশ গবেষকরা বলছেন: ‘আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন শীর্ষস্থানীয় চিকিৎসা সাময়িকী যেখানে বিশেষজ্ঞ চিৎিসকরা গবেষণার পর্যালোচনা করেন সেরকম একটি জার্নালে তাদের তথ্যউপাত্ত প্রকাশ করা হবে’। এ ভ্যাকসিন যদি ইতিবাচক প্রমাণিত হয়, তার অর্থ হবে এ ভাইরাসের বিরুদ্ধে মানুষের প্রতিরোধের জন্য কার্যকর একাধিক ভ্যাকিসন প্রায় নিশ্চিতভাবে বাজারে থাকবে। বিশ্ব জুড়ে কোভিড প্রতিরোধে কয়েকশ টিকা উদ্ভাবনের জন্য গবেষণা চলছে এবং এগুলোর মধ্যে যে তিনটি এখন পরীক্ষার চ‚ড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে সেগুলো হলো- স্পুটনিক, ফাইজার এবং অক্সেফার্ড-এর ভ্যাকসিন।
ফাইজারের ভ্যাকসিনে করোনাভাইরাস জিনের সঙ্কেতবাহী অংশ মানুষের শরীরে ইনজেকশনের মাধ্যমে প্রবেশ করানো হবে যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে এ ভাইরাস ঠেকানোর জন্য তৈরি করবে। অন্য দুটি ভ্যাকসিন কাজ করবে ভিন্ন উপায়ে। স্পুটনিক ফাইভ আর অক্সফোর্ড ভ্যাকসিনের মাধ্যমে শরীরে যে ভাইরাস প্রবেশ করানো হবে সেটি তৈরি করা হচ্ছে ঠিক করোনাভাইরাসের গঠন ও আচরণ নকল করে হুবহু একই জিন অনুকরণ করে ক্ষতিকর নয় এমনভাবে সৃষ্ট ভাইরাস। স্পুটনিকেও করোনা প্রতিরোধের জন্য দুই ডোজ ইঞ্জেকশান প্রয়োজন হবে। তবে স্পুটনিকের ক্ষেত্রে একটা বাড়তি সুবিধা হবে যে, সেটি খুবই ঠান্ডায় সংরক্ষণের প্রয়োজন হবে না। ফাইজার বায়োএনটিক ভ্যাকসিনকে মজুত রাখতে হবে হিমাঙ্কের ৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াস নিচে।
‘প্রতিযোগিতা নয়’: মস্কোর গামালেয়া রিসার্চ সেন্টারের পরিচালক আলেকজান্ডার গিন্টসবার্গ বলেছেন স্পুটনিক ফাইভ খুব শিগগিরিই ব্যাপকভাবে ব্যবহারের জন্য বাজারে পাওয়া যাবে এবং ‘এ টিকা প্রথমে রাশিয়ায় এবং পরে বিশ্বের অন্যান্য দেশেও কোভিড-১৯ সংক্রমণের হার কমিয়ে আনতে পারবে’। লন্ডনে ইম্পিরিয়াল কলেজের ইমিউনোলজির প্রধান অধ্যাপক চার্লস ব্যাংহাম বলেছেন, এ ফলাফল ‘বিজ্ঞানীদের নতুন করে আশ্বস্ত করেছে যে, কোভিড-১৯ মোকাবেলায় কার্যকর টিকা উদ্ভাবন সম্ভব’।
তবে তিনি আরও বলেন যে, রাশিয়ার উদ্ভাবিত এ টিকা এবং ফাইজার/বায়োএনটেক-এর টিকাও কতটা নিরাপদ এবং কতটা কার্যকর, তাদের ট্রায়ালের পূর্ণাঙ্গ তথ্যউপাত্ত প্রকাশ করার পর সেটার যথাযথ মূল্যায়ন জরুরি। এডিনবারা ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক এলেনার রাইলি বলেছেন, তার মতে এসব তথ্য নিয়ে খুবই তাড়াহুড়ো করা হচ্ছে। ‘এটা কোন প্রতিযোগিতা নয়। আমাদের যেটা প্রয়োজন সেটা হলো সর্বোচ্চ মান বজায় রেখে সবগুলো ট্রায়াল পরিচালনা করা’ - বলেন তিনি।
রুশ গবেষকরা বলছেন, ৫০টির বেশি দেশ থেকে তাদের কাছে ১২০ কোটি ডোজের বেশি স্পুটনিক ভ্যাকসিন সরবরাহের অনুরোধ এসেছে।
তারা দাবি করছেন, বিশ্ব বাজারের চাহিদা মেটাতে তারা প্রতি বছর ৫০ কোটি ভ্যাকিসন উৎপাদন করতে পারবেন। সূত্র : বিবিসি বাংলা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।