Inqilab Logo

রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ০৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

গাইবান্ধার চার গ্রাম নদীগর্ভে বিলীন

ব্রহ্মপুত্রের তীব্র ভাঙনে পাল্টে গেছে মানচিত্র

মো. আবেদুর রহমান স্বপন, গাইবান্ধা থেকে | প্রকাশের সময় : ১০ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম

গাইবান্ধা সদর উপজেলার মোল্লারচর ইউনিয়ন জুড়ে শুরু হয়েছে ব্রহ্মপুত্র নদের ব্যাপক ভাঙন। এ ইউনিয়নের ৭০ ভাগ এলাকা নদী গর্ভে। ৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৬টি ওয়ার্ডই নদীগর্ভে বিলীন। বিভিন্ন চর নিয়ে ৬টি ওয়ার্ড গঠিত। ফলে ইউনিয়নের মানচিত্র পাল্টে গেছে। গত বর্ষা মৌসুমে এ ইউনিয়নে ৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ৬টি মসজিদ, ২টি কমিউনিটি ক্লিনিকসহ ৩শ’ বসতবাড়ি ও ১ হাজার হেক্টর একর আবাদি জমি নদীর ভাঙনে হারিয়ে গেছে। ইউনিয়নটি চরাঞ্চল হওয়ায় নদীভাঙন প্রতিরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও উপজেলা পরিষদসহ সংশ্লিষ্ট অধিদফতরে একাধিকবার আবেদন করেও কার্যকর কোনো ফল পাওয়া যায়নি। নদী ভাঙনে সব হারিয়ে ওই কৃষিজীবী পরিবারগুলো এখন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে।
এছাড়াও ওই ইউনিয়নের বাজে চিথুলিয়া, চিথুলিয়া দিগর, মাইজবাড়ী, সিধাই, কাচির চর, উত্তর মোল্লার চর, দক্ষিণ মোল্লারচর এবং মৌলভীরচর এলাকা জুড়ে চলছে তীব্র ভাঙন। এছাড়া সদ্য নির্মিত ৩টি কালভার্ট ও কমিউনিটি ক্লিনিক এবং চিথুলিয়ার চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চিথুলিয়া দিগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মৌলভীরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ২টি এবতেদায়ী মাদরাসা, ৫টি টিকাদান কেন্দ্র ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলুপ্ত হয়েছে।
বাজে চিথুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক যুধিষ্টীর বর্মণ বলেন, তার বিদ্যালয়ে মোট ৭৭ জন শিক্ষার্থী পড়ালেখা করতো। নদী ভাঙনে পরিবারগুলো অন্যত্র চলে যাওয়ায় শিক্ষার্র্থী সংখ্যা কমতে থাকে। গত জুলাই মাসের ২৪ তারিখে বন্যায় তার বিদ্যালয়ের ভবনটি নদী গর্ভে চলে যায়। বর্তমানে বিদ্যালয়টি পাশের একটি চরে অর্থাৎ এক কিলোমিটার দূরে স্থানান্তর করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, করোনার কারণে বর্তমানে স্কুল বন্ধ থাকায় কতজন শিক্ষার্থীর পরিবার অন্যত্র স্থানান্তরিত হয়েছে নিশ্চিত করে সে সংখ্যা বলা যাচ্ছে না।
এ ব্যাপারে মোল্লারচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল হাই মন্ডল বলেন, ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে বিভিন্ন গ্রামের প্রায় ৮শ’ পরিবারের ঘর-বাড়ি বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ওইসব পরিবার এখন পাশের জামালপুর জেলা দেওয়ানগঞ্জ, পশ্চিমে সদরের কামারজানি ইউনিয়ন, উত্তরে কুড়িগ্রাম জেলার রাজিবপুরের মোহনগঞ্জ ইউনিয়ন এবং দক্ষিণে ফুলছড়ি উপজেলার এরেন্ডাবাড়ী ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকায় চলে গেছে। অনেকে আশপাশে অবস্থান নিয়ে অতিকষ্টে জীবন যাপন করছে। তিনি আরও জানান, বন্যা শুরু হওয়ার পর থেকে এ ইউনিয়নের বিভিন্ন পয়েন্টে ভাঙন শুরু হয়েছে। পানি কমার পর এখনও ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। অথচ ভাঙন রোধে কোন পদক্ষেপই গ্রহণ করা হচ্ছে না।
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, মোল্লারচর ইউনিয়ন পুরোটাই নদী বেষ্টিত হওয়ায় সেখানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাজের কোন সুযোগ নেই। তবে সরকারিভাবে নদী খননের কাজ শুরু হলে তখন ভাঙন কিছুটা কমে আসবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ব্রহ্মপুত্র


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ