বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
সিলেট নগরের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে রায়হান আহমদ হত্যার মূলহোতা বরখাস্ত এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে আটকের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। হাত-পা বাঁধা অবস্থায় জনতার হাতে আটকের একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। দেশব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি হওয়া এই হত্যাকাণ্ডের মূলহোতাকে আটক নিয়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন নেট দুনিয়ার বাসিন্দারা।
ভাইরাল ভিডিওতে আকবরকে ক্রন্দনরত অবস্থায় করজোড় করে জনতার কাছে ক্ষমা চাইতে দেখা যায়। গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, সোমবার (৯ নভেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে কানাইঘাট উপজেলার ডনা সীমান্ত এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে জেলা পুলিশ।
ফেসবুকে মজিবুর রহমান লিখেছেন, ‘‘ইচ্ছে করলে, পুলিশ পারেনা এমন কোন কাজ নেই। আকবর, সাহেদ এর বাস্তব উদাহরণ| ধন্যবাদ পুলিশ ভাইদেরকে| একটু ভেবে দেখেন, রায়হানের কান্না, নখ উপড়ে ফেলা আর রায়হানের বাচ্চার কান্নার শব্দ এখনো কানে ভাসে।’’
সাব্বির আহমাদ লিখেছেন, ‘‘ঘটনার আগে এবং পরে, একটা মানুষের দুই রকম চেহারা। চিনতেই কষ্ট হচ্ছে। চিপায় পরলে মানুষ হিরো থেকে জিরো হয়ে যায়। এই পরিনতি শুধু আকবরে একার হবেনা। সকল জুলুমবাজদেরই খারাপ পরিনতি হবে। জাস্ট ওয়েট!! একদিন আগে আর পরে।’’
সাইফ তালুকদার লিখেছেন, ‘‘আকবর চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া তোমার কিছুই করার নাই, ক্ষমতার দাপটে তুমি অন্ধছিলা! পাপ কখনো কাউকে ক্ষমা করেনা।’’
বিল্লাহ মিয়াহ লিখেছেন, ‘‘গ্ৰেফতার করে কি লাভ, বিচার তো হচ্ছে না, সবাই তো আইনের ফাঁকে বেড়িয়ে যাচ্ছে। ধর্ষন, খুনের প্রমানাধি থাকা সত্ত্বেও দেশে কিছু ছেচরা, উকিল আছে এরা পয়সা খাইয়া অন্যায়কারীদের বাঁচানোর জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে।’’
বায়াজিদ সানি লিখেছেন, ‘‘আহা! যখন পোশাক ছিল তখন ক্ষমতার দাপটে অন্ধ হয়ে গেছিলো। আজ আল্লাহ সেই ক্ষমতা ধুলায় মিশিয়ে দিয়েছে। আগে অপরাধী তার কাছে হাতজোড় করে থাকতো আজ তার এই অবস্থা। আল্লাহ তুমি সত্যিই মহান ও ধৈর্যশীল।’’
হোসাইন মোহাম্মাদ লিখেছেন, ‘‘একজন ক্ষমাবান ব্যক্তিরর অসহায়ত্ব দেখে নিজের কাছেও খারাপ লাগছে।বাট তোদের প্রতি মায়া লাগাও একটা অপরাধ। ক্ষমতার দাপটে যখন যা খুসি করেছিস।আজ তোদের চেহারা দেখে ১৮ কোটি মানুষ তথা নিজে পরিবারেও তোকে ঘৃনা করে।’’
উল্লেখ্য, গত ১১ অক্টোবর বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতন করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে রায়হানের মৃত্যু হয়। রায়হান সিলেট নগরের আখালিয়ার নেহারিপাড়ার বিডিআরের হাবিলদার মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে। তিনি নগরের রিকাবিবাজার স্টেডিয়াম মার্কেটে এক চিকিৎসকের চেম্বারে চাকরি করতেন।
এ ঘটনায় গত ১২ অক্টোবর রাতে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু আইনে নগরীর কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেন রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি।
১৪ অক্টোবর মামলাটি পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশে পিবিআইতে স্থানান্তর হয়। তদন্তভার পাওয়ার পর পিবিআইর টিম ঘটনাস্থল বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ি, নগরের কাস্টঘর, নিহতের বাড়ি পরিদর্শন করে। সর্বোপরি মরদেহ কবর থেকে তোলার পর পুনরায় ময়নাতদন্ত করা হয়।
নিহত রায়হানের মরদেহে ১১১টি আঘাতের চিহ্ন উঠে এসেছে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে। এসব আঘাতের ৯৭টি ফোলা আঘাত ও ১৪টি ছিল গুরুতর জখমের চিহ্ন। এসব আঘাত লাঠি দ্বারাই করা হয়েছে। অসংখ্য আঘাতের কারণে হাইপোভলিউমিক শক ও নিউরোজেনিক শকে মস্তিষ্ক, হৃৎপিণ্ড, ফুসফুস, কিডনিসহ গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলো কর্মক্ষমতা হারানোর কারণে রায়হানের মৃত্যু হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।