Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দুর্ভোগে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ করোনা সঙ্কট-নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি

বরিশাল ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৪ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

করোনাকালের অর্থনৈতিক মন্দা ও নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগ আরো বাড়িয়েছে। চাল, পেঁয়াজ, আদা, গোল আলু, ভোজ্যতেল, ডাল ছাড়াও দু’দফার অতিবর্ষণে শাক-সবজির দামও আকাশচুম্বি। পেঁয়াজ সঙ্কট ও মূল্য নিয়ন্ত্রণে টিসিবির সীমিত উদ্যোগও ধারাবাহিকতা হারাচ্ছে। বরিশালে টিসিবির গুদামে পেঁয়াজ সঙ্কটের কারণে ডিলারদের সরবরাহ কমানো হয়েছে। আজ পেঁয়াজ না পৌঁছালে কাল থেকে সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাবার আশঙ্কা রয়েছে।

নিত্যপণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারি উদ্যোগ এখন আর দৃশ্যমান নয়। টিসিবি মাসখানেক ধরে মাথাপিছু ১ কেজি পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করলেও তা বাজারে প্রভাব ফেলেনি। গত সপ্তাহখানেক ধরে প্রতিষ্ঠানটির বরিশাল গুদামে পেঁয়াজের মজুদ ফুরিয়ে আসছে। ইতোপূর্বে প্রতি ডিলারকে ৮শ’ কেজি থেকে ১ টন পর্যন্ত পেঁয়াজ দেয়া হত। গতকাল দেয়া হয়েছে মাত্র সাড়ে ৩শ’ কেজি।

এদিকে গতকাল দক্ষিণাঞ্চলের বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৮৫-৯০ টাকায়। আমদানিকৃত চীনা ও তুরস্কের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭৫-৮০ টাকায়। চীনা আদা এখনো ২৩০ টাকা কেজি। ভারতীয় নিম্নমানের আদা বিক্রি হচ্ছে ১শ’ টাকায়। আলুর কেজি ৫০ থেকে গত সপ্তাহখানেক ধরে ৪৫-৪৮ টাকা বিক্রি হচ্ছে। তবে প্রায়ই বাজার থেকে আলু উধাও হয়ে যাচ্ছে। সয়াবিন, সুপার সয়াবিনসহ সব ভোজ্য তেলের দামই মাসখানেক ধরে ঊর্ধ্বমুখী। ৯০ টাকা লিটারের সয়াবিন ১১০ টাকায় উঠেছে। এর সঠিক কারণ পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতাদের জানা নেই বলে জানিয়েছেন। তাদের মতে, ঢাকা-চট্টগ্রামের মিল মালিক ও আমদানিকারক পর্যায়ে দাম বাড়ানোর ফলেই খোলা বাজারে ভোজ্য তেলের দাম বেড়েছে।
মুগ, মসুর ও খেসারি ডালের দামও বেড়েছে। মুগ ও মসুর ডাল ১৩০ টাকা কেজি। গত দু’মাসে এসব ডালের দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ১৫-২০ টাকা পর্যন্ত। অন্যসব ডালের মূল্যবৃদ্ধির রেশ ধরে বেড়েছে খেসারি ডালের দামও। দেশে খেসারি ডালের ৭০ ভাগই দক্ষিণাঞ্চলে উৎপাদিত হয়ে থাকে। মুগ ডালেরও ৬০ ভাগ উৎপাদন হয় দক্ষিণাঞ্চলে। কিন্তু এবার দু’দফার অকাল অতিবর্ষণে খেসারি ডালের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ফলে আসন্ন শীতে খেসারির উৎপাদনে মারাত্মক সঙ্কট তৈরির আশঙ্কা রয়েছে। মুগ নিয়ে এখনো আশা থাকলেও তা নির্ভর করবে আগামী দু’মাসের বৃষ্টিপাত ও জোয়ারের উচ্চতার ওপর।

এদিকে দু’দফার প্রবল বর্ষণে শাক-সবজির পুরোটাই বিনষ্ট হয়েছে। ফলে বাজারে এখন ৬০ টাকা কেজির নিচে কোন সবজি নেই। চলতি রবি মৌসুমে ৬ জেলার ৫২ হাজার হেক্টর জমিতে প্রায় ১১ লাখ টন শীতকালীন সবজি উৎপাদনের লক্ষে কৃষকরা মাঠে নামলেও গত অক্টোবরের বর্ষণে প্রায় পুরোটাই বিনষ্ট হয়েছে। ফলে বাজারে এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে।
এদিকে বাজারে গত কয়েক মাস ধরে সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ১০-১২ টাকা। এখন চালের সর্বনিম্ন দাম কেজি প্রতি ৩৮-৪২ টাকা। আর মধ্যম মানের মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৫৬ টাকা কেজিতে। আমনের ভরা মৌসুম আসন্ন হলেও চালের দাম কমার লক্ষণ নেই।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর-ডিএই’র মতে, গত রবি মৌসুমে দেশে প্রায় ২ কোটি টন বোরো চাল উৎপাদন হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় আউশ ও বোরো চাল উৎপাদনের পরিমাণ ছিল প্রায় ৯ লাখ টন। চলতি আমন মৌসুমে এ অঞ্চলে আরো ১৮ লাখ টন চাল উৎপাদনের আশা করছে ডিএই। এছাড়া গত মৌসুমে আরো প্রায় ৩০ হাজর টন গম উৎপাদন হয়েছে দক্ষিণাঞ্চলে।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: দক্ষিণাঞ্চল


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ