Inqilab Logo

সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শেষ দেখার ঘোষণা আজেরি প্রেসিডেন্টের

৩ যুদ্ধবিমান হারিয়েছে আর্মেনিয়া

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৪ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

ছয় সপ্তাহেও থামলো না যুদ্ধ। নাগরনো-কারাবাখ নিয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো সমাধান স‚ত্রে পৌঁছতে পারলো না আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজান। তারই মধ্যে রোববার আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট জানিয়ে দিয়েছেন, আর্মেনিয়া অস্ত্র না ছাড়লে শেষ পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাবে আজেরি ফৌজ। নাগরনো-কারাবাখ থেকে আর্মেনিয়া সরে গেলেই একমাত্র এই যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটতে পারে বলে রোববার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। এদিকে রাশিয়া জানিয়েছে, নাগরনো-কারাবাখ থেকে যুদ্ধ যদি আর্মেনিয়ার সীমান্তের ভিতরে ঢুকে পড়ে, তা হলে রাশিয়া বাধ্য হবে সামরিক হস্তক্ষেপ করতে। এখনো পর্যন্ত তিনবার আলোচনায় বসেছেন আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। মস্কোর মধ্যস্থতায় দুই বার শান্তি বৈঠক হয়েছে। সাময়িক যুদ্ধবিরতি চুক্তি সই হয়েছে। কিন্তু যুদ্ধ থামেনি। এরপর ওয়াশিংটনের মধ্যস্থতায় ফের একবার যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব মেনে নেয় দুই দেশ। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। নাগরনো-কারাবাখ নিয়ে আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজানের যুদ্ধ অব্যাহত। প্রতিদিনই নিহতের সংখ্যা বাড়ছে। ধ্বংস হচ্ছে একের পর এক শহর। সাধারণ মানুষ ঘর ছেড়ে পালাচ্ছেন। রোববার যুদ্ধ বন্ধের জন্য ফের আজারবাইজানের সঙ্গে একান্ত বৈঠক করে মস্কো। তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুট কাভুসোগøুর সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন আজেরি প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ। সেখানে প্রেসিডেন্ট স্পষ্টই জানিয়ে দেন, যে কোনো সমাধান মেনে নিতে রাজি নয় আজারবাইজান। নাগরনো-কারাবাখ আর্মেনিয়া ছেড়ে দিলে তবেই একমাত্র তারা শান্তি প্রস্তাব গ্রহণ করবেন। নইলে যুদ্ধ চলবে। বিষয়টির শেষ দেখে ছাড়বে আজারবাইজান, এমনই হুমকি দিয়েছেন তিনি। এদিকে যুদ্ধবিমানে মুহুর্মুহু হামলা চালিয়ে নামিয়েছে আজারবাইজান। এবার সু-২৫ যুদ্ধবিমানে আঘাত হেনেছে আজারবাইজান। সোমবার আজারবাইজানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এই নিয়ে গত চার দিনে আর্মেনিয়ার তিনটি যুদ্ধবিমানকে নামিয়েছে এই দেশ। বিবৃতিতে বলা হয়, রবিবার আজারবাইজানের ভ‚খÐে হামলা চালাতে গেলে এসইউ-২৫ বিমানটিকে ভ‚পাতিত করা হয়। ১৯৮০-এর দশকের শেষের দিকে অঞ্চলটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে সংঘাত শুরু হয়। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের মুহ‚র্তে সংঘর্ষ চ‚ড়ান্ত আকার ধারণ করে। ১৯৯৪ সালে দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার আগ পর্যন্ত এই সংঘর্ষে ৩০ হাজার মানুষ নিহত হয়। পরে ২০১৬ সালের শুরুতেও সংঘাতে জড়ায় দুই পক্ষ। এই যুদ্ধে আজারবাইজানকে সমর্থন করছে তুরস্ক। প্রথম দিকে তুরস্কের সামরিক বাহিনীও নাগরনো-কারাবাখে আক্রমণ চালিয়েছিল বলে আর্মেনিয়া অভিযোগ করেছিল। অন্য দিকে প্রথম থেকেই রাশিয়ার কাছ থেকে সাহায্য চাইছে আর্মেনিয়া। পুরনো এই সোভিয়েত দেশ দেশটি রাশিয়ার সঙ্গে সামরিক চুক্তিতে আবদ্ধ। আর্মেনিয়া আক্রান্ত হলে রাশিয়া সাহায্য করতে বাধ্য। রাশিয়া অবশ্য গত সপ্তাহেও জানিয়েছে, এই যুদ্ধে তারা কোনো পক্ষকেই সমর্থন করছে না। কীভাবে সংঘাত বন্ধ করা যায়, সে চেষ্টাই তারা চালাচ্ছে। তবে শনিবার আর্মেনিয়ার সংবাদসংস্থা দাবি করেছে, অবস্থান সামান্য হলেও কড়া হয়েছে রাশিয়ার। শনিবার তারা জানিয়েছে, যুদ্ধ যদি নাগরনো-কারাবাখ থেকে আর্মেনিয়ার সীমান্তে ঢুকে পড়ে, তা হলে আর্মেনিয়াকে সামরিক সাহায্য দেবে রাশিয়া। কিছুদিন আগে ইরানও ঠিক এই একই আশঙ্কা করেছিল। তারা বলেছিল, যেকোনো সময় আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজানের এই যুদ্ধ গোটা অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়তে পারে। তুরস্ক, ইরান, সকলে জড়িয়ে পড়তে পারে। সে কারণে দ্রæত সমাধান স‚ত্র খোঁজার আবেদন জানিয়েছিল ইরান। কিন্তু আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজান সে পথে হাঁটতে চাইছে না। নাগরনো-কারাবাখে নিজেদের অধিকার ছাড়তে চাইছে না আর্মেনিয়া। নাগরনো-কারাবাখ হাতছাড়া করতে রাজি হচ্ছে না আজারবাইজান। কয়েক বছর বিরতির পর এ বছর নতুন করে আবারও সংঘাতে জড়ায় দুই দেশ। স¤প্রতি, আর্মেনিয়ার দখল থেকে ১৯৩ টি বাড়ি দখলমুক্ত করেছে আজারবাইজানের সেনাবাহিনী। ডয়চে ভেলে, কে২৪।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আর্মেনিয়া


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ