পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সরকারি বরাদ্দের খাবারই খেলেন ইরফান : হাজী সেলিমের দখলকৃত জায়গা মুক্ত করার দাবিতে মানববন্ধন
ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিমকে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। রিমান্ডে থাকায় তাকে থানা থেকেই সরকারি বরাদ্দের খাবার দেয়া হচ্ছে। এছাড়া ইতোমধ্যে ইরফান সেলিম ও ওই মামলার গ্রেফতার হওয়া বাকি আসামিদের মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এ সময় ইফরানের সহযোগীরা এই ঘটনার দায় নিজের ওপর নেয়ার চেষ্টা করেন। জিজ্ঞাসাবাদে তারা বলে, ইরফানের কোনো নির্দেশনা ছাড়াই তারা গাড়ি থেকে নামে এবং মারধর করে। গোয়েন্দা পুলিশ সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। এদিকে, নৌবাহিনীর কর্মকর্তাকে মারধর ও হত্যাচেষ্টার ঘটনায় ইরফান সেলিমের বিরুদ্ধে ধানমন্ডি থানায় দায়ের হওয়া মামলাটি তদন্ত করছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদের উদ্দেশ্যে গতকাল দুপুরে ধানমন্ডি মডেল থানার হাজতখানা থেকে মিন্টো রোডে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে নেওয়া হয় ইরফান ও তার সহযোগীদের।
সংশ্লিষ্ট পুলিশ সূত্র জানায়, রিমান্ডে থাকা আসামিদের মুখোমুখি বসিয়ে সেদিনের ঘটনা জানতে চাওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা বলে, ইরফানের কোনো নির্দেশনা ছাড়াই তারা গাড়ি থেকে নামে এবং মারধর করে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ধানমন্ডি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আশফাক রাজীর হাসান জানান, রিমান্ডে নিয়ে আসার পর তাদের থানা হাজতে রাখা হয়। তবে ইরফানের কোনো স্বজন থানায় তার খোঁজখবর নিতে আসেনি। থানা থেকে বরাদ্দকৃত খাবারই তাকে দেওয়া হয়। এর পর তাদের কয়েক দফা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
ধানমন্ডি থানার ওসি একরাম আলী মিয়া জানান, থানার হাজতখানায় আসামিদের খাবারের জন্য সরকার থেকে কিছু বরাদ্দ আছে। সেই বরাদ্দকৃত থেকে ইরফান ও তার দেহরক্ষীকে খাবার দেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত বুধবার নৌবাহিনীর কর্মকর্তাকে মারধর ও হত্যাচেষ্টা মামলায় ইরফান সেলিম এবং তার দেহরক্ষী জাহিদের তিনদিনের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। আদালত দুই আসামির তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এরপর তাদের রিমান্ডে নেয়া হয়।
উল্লেখ্য, গত ২৫ অক্টোবর রাতে ধানমন্ডিতে সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের গাড়ির সাথে নৌবাহিনীর কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট ওয়াসিম আহমেদ খানের মোটরসাইকেলের ঘষা লাগায় তাকে বেধড়ক মারধর করেছেন ইরফান ও তার দেহরক্ষী। এ ঘটনায় পরদিন ২৬ অক্টোবর ভুক্তভোগী নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিম মারধর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ধানমন্ডি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
এ মামলার আসামিরা হলেন- সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিম (৩৭), তার দেহরক্ষী মোহাম্মদ জাহিদ (৩৫), হাজী সেলিমের মালিকানাধীন মদীনা গ্রæপের প্রটোকল অফিসার এবি সিদ্দিক দিপু (৪৫), গাড়িচালক মিজানুর রহমান (৩০) ও অজ্ঞাতপরিচয় আরও দুই-তিনজন।
ওই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ইরফান সেলিমের অবস্থান শনাক্ত করে তার বাসায় অভিযান পরিচালনা করে র্যাব। পরে র্যাব ইরফান ও তার দেহরক্ষী মো. জাহিদকে গ্রেফতার করে। এ সময় র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত মাদক রাখার দায়ে ইরফানকে এক বছর কারাদÐ ও অবৈধ ওয়াকিটকি রাখার কারণে ছয় মাসের কারাদÐ দেন। ইরফানের দেহরক্ষী জাহিদকে ওয়াকিটকি বহন করার দায়ে ছয় মাস সাজা দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
এদিকে, গতকাল ব্যবসায়িক ঐক্য ফোরাম নামের একটি সংগঠনের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে হাজী সেলিমের মালিকানাধীন মর্কেটগুলোর ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলেনে লিখিত বক্তবে ব্যবসায়িক ঐক্য ফোরামের সাধারণ সম্পাদক আবু মোতালেব জানান, হাজী মো. সেলিম তিনবারের নির্বাচিত এমপি। এই সময়ে তিনি পুরান ঢাকার সব ধরনের ব্যবসায়ীদের পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন। বিভিন্ন গণমাধ্যমে তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির প্রতিবেদন প্রকাশে, হাজী সেলিমের মালিকানাধীন মদিনা গ্রæপের প্রায় সাড়ে তিন হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী আতঙ্কে আছেন। এ সময় তার বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে চাঁদাবাজির সংবাদ প্রকাশ করায়, পুরান ঢাকার ব্যবসা বাণিজ্যে সমস্যা হচ্ছে বলেও জানান আবু মোতালেব।
অপরদিকে, সংসদ সদস্য হাজী সেলিম কর্তৃক দখলকৃত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের তিব্বত হলসহ সকল হল দখলমুক্ত করার দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। গতকাল বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেন।
এ সময় শিক্ষার্থীরা বলেন, বারবার হল উদ্ধারের জন্য কমিটি গঠনের মাধ্যমে কালক্ষেপণ করছে প্রশাসন। আগামী এক যুগের মধ্যে নতুন ক্যাম্পাসে হল পাওয়া আর রূপকথার গল্প দুটোই সমার্থক। অথচ হল তো দুরের কথা পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্লাসরুমই নেই আমাদের। প্রশাসনের যদি সদিচ্ছা এবং শিক্ষার্থীবান্ধব হয় আমরা মনে করি দ্রæতই হল উদ্ধারে পদক্ষেপ নিবে। হাজী সেলিমের লাঠিয়াল বাহিনীকে যে জবি প্রশাসন ভয় পায়না তার প্রমাণ হবে উদ্ধারের মাধ্যমে এই আশায় আছি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।