বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণের মধ্যেই আসন্ন পৌর নির্বাচনকে সামনে রেখে ব্যাপক দৌড় ঝাঁপ শুরু করেছে রাজশাহীর প্রথম শ্রেণীর গোদাগাড়ী পৌরসভার সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীরা। তফসিল ঘোষণা না হলেও
সরকারী দলের প্রার্থীর ছড়াছড়ি। নতুন নতুন প্রার্থী বেরিযে আসছে এ দল থেকে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা তাদের নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করতে নির্বাচনী এলাকায় সম্ভাব্য প্রার্থীদের প্রচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে পৌর এলাকার বাজার, হোটেল, ক্লাব ও পাড়া মহল্লা গুলো।
দলের টিকিট পেতে ব্যাপক লবিং-গ্রুপিং শুরু করেছে। কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথেও যোগাযোগ করছেন। একজন অন্যজনের বিরুদ্ধে অপপ্রচারও চালাচ্ছেন। বড় দুই দল আ’লীগ ও বিএনপির মেয়র প্রার্থীরা কেন্দ্রের নির্দেশনার দিকে তীর্থের কাকের ন্যয় চেয়ে থাকলেও থেমে নেই প্রচার প্রচারণা। এবারে গোদাগাড়ী পৌরসভায় আওয়ামীলীগের সম্ভাব্য মেয়র তালিকায় আওয়ামীলীগ থেকে যাদের নাম শুনা যাচ্ছে, এমন কি ফেসবুকে নিজেদের প্রচারনার ছবি পোস্ট করছেন, তাদের মধ্যে রয়েছেন বর্তমান মেয়র মনিরুল ইসলাম বাবু,
গোদাগাড়ী পৌরসভার আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব অয়েজ উদ্দিন বিশ্বাস, সাধারন সম্পাদক, জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান, বিশিষ্ঠ ব্যবসায়ী, রবিউল আলম, গোদাগাড়ী পৌরসভা যুবলীগের সভাপতি, মাটিকাটা আর্দশ মহাবিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মোঃ আকবর আলী, গোদাগাড়ী উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল মালেক, রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের এককালের সাড়া সাধারণ সম্পাদক মহাবুবুর আলম মুক্তি, পৌর আওয়ামী লীগ এর মহিলা সম্পাদিকা ও পিরিজপুর উচ্চ বিদ্যালয় সহকারি প্রধান শিক্ষক মোসাঃ শাহনাজ আখতার ইতি বিশ্বাস
এবং গোদাগাড়ী সরকারী স্কুল এন্ড কলেজের সাবেক অধ্যাক্ষ, বিশিষ্ট সমাজ সেবক মোঃ এনামুল হক। বিএনপি থেকে গোদাগাড়ী পৌরসভা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আহম্মদ কুরিয়ার সার্ভিসের মালিক বিশিষ্ট সমাজ সেবক গরীব দু:খীসহ পৌরবাসীর নিকট পরিচিয় এক নাম প্রতি ঈদে সেমাই চিনি, ও বিভিন্ন সময় ত্রাণ বিতরণকারী গোলাম কিবরিয়া রুলু, সাবেক ছাত্রদল নেতা, কাউন্সিলর মোঃ মাহাবুবুর রহমান বিপ্লব, তবে নেতা কর্মীরা বলছেন গোলাম কিবিরবয়া রুলুকে ৫ বছর আগে থেকে প্রার্থী ঠিক করা আছে। তার জনপ্রিয়তাও রয়েছে।
গতবার অনুষ্ঠিত প্রথম দলীয় প্রতীকের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াত অংশগ্রহণ করে। তবে আওয়ামীলীগের প্রার্থী মোঃ মনিরুল ইসলাম বাবু জয়ী হন। তার নিকটতম প্রার্থী ছিলেন বিএনপির আনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী। চলতি বছরের ডিসেম্বর, জানুয়ারীর মধ্যে মেয়াদ শেষ হবে প্রায় আড়াই শতাধিক পৌরসভার। এগুলোতে সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে। ফলে এগুলোর মেয়াদও প্রায় শেষের দিকে। পৌরসভা নির্বাচনের ভোট গ্রহণের ৪০ থেকে ৪৫ দিন আগেই তফিসিল ঘোষণা করতে হয়। তাই মাঠ পর্যায় থেকে তালিকা সংগ্রহ করা, সীমানাসংক্রান্ত জটিলতা ও নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রতিবন্ধকতা খতিয়ে দেখার জন্য মাঠ কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছে ইসি। তবে করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই নির্বাচন আয়োজন করা হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন সূত্র। এর পর থেকে রাজশাহীর গোদাগাড়ী পৌরসভার সম্ভাব্য মেয়র, কাউন্সিলর প্রার্থীরা বেশ তোড়জোর শুরু করেছেন। কাঁকডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত গোটা পৌর চুষে বাড়াচ্ছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। এবার নতুন নতুন প্রার্থী আনাগোনা দেখা যাচ্ছে। অনেকে দলীয়ভাবে মনোনায়ন পেতে বেশ মরিয়া হয়ে উঠেছে। স্থানীয় নেতা কর্মীদের সাথে সুসম্পর্ক রাখছেন। কেন্দ্রীয় নেতা মন্ত্রী এমপিদের সাথে লবিং গ্রুপিং শুরু করেছেন। বিয়ে, সুন্নাতে খাতনা, জন্ম দিন, ধর্মীয় অনুষ্ঠান বিভিন্ন ভাল ভাল উপহার সামগ্রী নিয়ে উপস্থিত হচ্ছেন। মসজিদ, মন্দির, জানাজার নামাজে, ইয়াতিমখানায় যাচ্ছে সালাম কালাম বেশী বেশী করছেন। নিজ উদোগ্যে চা চক্রের আয়োজন করছেন। গত কোরবানির ঈদে নির্বাচন সামনে রেখে সম্ভাব্য প্রার্থীদের কেউ কেউ একাধিক গরু খাসি ভেড়া জবাই করে মাংশ বিল্লি করেছেন এলাকার ভোটারদের মধ্যে। নানা সমীকরণে ভোটের মাঠে প্রভাব-প্রতিপত্তি থাকে এমন ভোটারদের বাড়িতে কেউ কেউ সেমাই চিনি, আটা, চাউল, আলুসহ বিভিন্ন ত্রান সামগ্রী বিতরণ করে এলাকার ভোটারদের আকৃষ্ট করেছেন। এখানেই থেমে থাকছেন না সম্ভাব্য প্রার্থীরা। তাদের তৎপরতা দেখলে মনে হতে পারে, আর কদিন পরেই যেন ভোট।
জামায়াত পৌরসভার নির্বাচনে অংশগ্রহন করবেন বলে তারা এখনও নিরবতা পালন করছেন। গোদাগাড়ী পৌরসভায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপিরসহ অন্য দলীয় প্রার্থীরা তৎপরতা শুরু করেছেন। আওয়ামীলীগ থেকে যাদের নাম শুনা যাচ্ছে তাদের মধ্যে গোদাগাড়ী পৌরসভার আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব অয়েজ উদ্দিন বিশ্বাস, সাধারন সম্পাদক, জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান, বিশিষ্ঠ ব্যবসায়ী, রবিউল আলম, গোদাগাড়ী পৌরসভা যুবলীগের সভাপতি, মাটিকাটা আর্দশ মহাবিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মোঃ আকবর আলী, গোদাগাড়ী উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল মালেক, বর্তমান মেয়র মনিরুল ইসলাম বাবু এবং গোদাগাড়ী সরকারী স্কুল এন্ড কলেজের সাবেক অধ্যাক্ষ, বিশিষ্ট সমাজ সেবক মোঃ এনামুল হক।
বিএনপি থেকে গোদাগাড়ী পৌরসভা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আহম্মদ কুরিয়ার সার্ভিসের মালিক বিশিষ্ট সমাজ সেবক গরীব দু:খীসহ পৌরবাসীর নিকট পরিচিয় এক নাম প্রতি ঈদে সেমাই চিনি, ও বিভিন্ন সময় ত্রাণ বিতরণকারী গোলাম কিবরিয়া রুলু, তিন বারের নির্বাচিত কাউন্সিলর যুবদল নেতা মোঃ মাহাবুবুর রহমান বিপ্লব,
রাজশাহী পশ্চিম জেলা আমির আব্দুল খালেক বলেন, নির্বাচনী পরিবেশ না থাকায় এ সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনে জামায়াত অংশগ্রহন করছেন না। দলীয় সিদ্ধান্ত পৌরসভা নির্বাচন থেকে বিরত থাকবে জামায়াত।
বিগত ২০১৫ ইং সালে ডিসেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আওয়মীলীগ মনোনীত প্রার্থী মনিরুল ইসলাম বাবু ভোট পেয়ে ছিলেন ১০ হাজার ২শ ২৭ ভোট, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির মনোনীত প্রার্থী আনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী পেয়েছিলেন ৬ হাজার ৬শ ১৬ ভোট।
এ ব্যপারে গোদাগাড়ী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আওয়ামীলীগ একটি বড় দল এখানে প্রার্থীর সংখ্যা বেশী হবে এটাই স্বাভাবিক। আমি যখন উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে মনোনায়ন চেয়েছিলাম তখন ৯ জন প্রার্থী ছিলাম, আমাকে প্রধান মন্ত্রী নৌকা প্রতীক দিয়েছেলেন আমি প্রার্থী হয়ে নেতা কর্মী সমর্থকদের সাথে নিয়ে পরিশ্রম করে জনগনের ভোট পেয়ে জয়লাভ করেছিলাম। তিনি আরও বলেন, স্থানীয় নেতা কর্মীরা চাচ্ছেন এবারে গোদাগাড়ী পৌরসভায় দলীয় প্রার্থী নৌকার মাঝি হিসেবে আলহাজ্ব অয়েজউদ্দিন বিশ্বাসকে। তিনি অনেক খানি এগিয়ে রয়েছেন। এ ছাড়া রয়েছেন পৌরযুবলীগের সভাপতি আকবর আলী, বর্তমান মেয়র মনিরুল ইসলাম বাবু, ফেসবুকে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল মালেকও ছবি দেখতে পাচ্ছি। যারা ত্যাগি, মূলধারার রাজনীতির সাথে রয়েছেন তাদের মধ্য থেকে প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা বেশী। প্রধানমন্ত্রীর টিকিট যিনি পাবেন, তিনিই আমাদের প্রার্থী হবেন।
পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক এ. এম শাহীন বলেন,‘ বর্তমান মেয়র মনিরুল ইসলাম বাবু, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্জ অয়েজউদ্দীন বিশ্বাস, আকবর আলী, মাহাবুবুল আলম মুক্তি, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল মালেকসহ অনেকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে তারা মেয়র পদে প্রার্থীর মনোনায়ন পাওয়ার ব্যপারে শতভাগ নিশ্চিত বলে প্রচার চালাচ্ছেন। কিন্তু আমার মতে, প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা যার হতে নৌকা প্রতীক তুলে দিবেন তিনি আমাদের প্রার্থী, তার জন্য আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবো, ইনশাআল্লাহ।’
উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক আব্দুস সালাম শাওয়াল বলেন, ‘গোলাম কিবরিয়া রুলু আমাদের দলীয় প্রার্থী ঠিক হয়ে আছে অনেক আগে থেকে। ব্যরিষ্টার আমিনুল হক জীবিত থাকাকালীন সময়ে ওইবার আনোয়ারুল চৌধুরীকে ছাড় দেয়া হয়েছিল এবং পরবর্তী নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হিসেবে গোলাম কিবরিয়া রুলুকে মেয়র প্রার্থী হিসেবে ঘোষনা করা হয়েছিল। বিএনপির মেয়র প্রার্থী রুলু, মাঠে আছেন, কাজ করছেন, তার জনপ্রিয়তাও ভাল রয়েছে। নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে জয়লাভের সম্ভাবনাও বেশী রয়েছে।’
গোদাগাড়ী পৌর বিএনপির আহ্বায়ক মেসের আলী মাস্টার একই মত প্রকাশ করে বলেন, রুলু ও বিপ্লব করবো করবো করছে, তবে বিগত ঘোষনা অনুযায়ী গোলাম কিবরিয়া রুলুরই বিএনপি মেয়র প্রার্থী। তবে নির্বাচনের ব্যপারে কেন্দ্রের নির্দেশনার অপেক্ষায় আছি। পৌরসভার ৩ নং বিএনপির সাবেক সভাপতি নেতা আব্দুল হান্নান ও পৌরসভা জিয়া পরিষদের সহ- সাধারন সম্পাদক জিয়াউর রহমান বলেন, ‘বরাবরের মতো গোদাগাড়ী পৌরসভায় বিএনপির অবস্থান ভাল আছে, বিগত দিনে পৌরসভায় একাধিকবার মেয়র পদে বিএনপির প্রার্থী বিশাল ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হয়েছেন। নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে বিএনপির প্রার্থী জয়লাভ করবে, ইনশাআল্লাহ। তারা আরো বলেন, বিএনপি বড় দল এখানে একাধিক প্রার্থী থাকা স্বাভাবিক তবে বিগত পৌরসভা নির্বাচনের কয়েকদিন পূর্বে দলীয় কার্যালয়ে এক আলোচনা সভায় একাধিক মেয়র প্রার্থীর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছিল । ওই সময় বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরীকে মেয়র মনোনয়ন দেয়া হয়েছিল। ওই সময় আরো বলা হয়েছিল পৌর বিএনপির সহ সভাপতি বিশিষ্ঠ সমাজসেবক গোলাম কিবরিয়া রুলুকে পরবর্তী পৌরনির্বাচনে মেয়র প্রার্থী ঘোষনা দেয়া হয়েছিল। সে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গোলাম কিবরিয়া রুলু এবার বিএনপির একক মেয়র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন। সে অনুযায়ী তিনি দীর্ঘ কয়েক বছর হতে মাঠে সক্রিয় রয়েছেন, তিনি জনপ্রিয়তায় শীর্ষে অবস্থান করছেন। একই মন্তব্য করেন বিএনপি নেতা মোজাম্মেল হক, মজিবুর রহমান, হানিফ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।