Inqilab Logo

মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল অবহেলায় নবজাতকের মৃত্যু

নোয়াখালী ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ২৮ অক্টোবর, ২০২০, ১২:০০ এএম

 ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভুল চিকিৎসা ও দায়িত্বরতদের অবহেলায় এক নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। ঘটনায় মৃত নবজাতকের দাদি তাহের বেগম নয়ন বাদী হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। আদালতের বিচারিক হাকিম সোয়েব উদ্দিন খান মামলাটি আমলে নিয়ে নির্দেশ পাওয়ার এক কর্মদিবসের মধ্যে লিখিত প্রতিবেদন দিতে হাসপাতালের আরএমও কে নির্দেশ দিয়েছেন।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে নোয়াখালী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৯ জনকে আসামি করে এ মামলাটি দায়ের করেন তিনি। মামলায় হাসপাতালের গাইনি বিভাগের ২নং ওয়ার্ডের ইনচার্জ ও সিনিয়র স্টাফ নার্স বিথীকা রাণী হাওলাদার, গাইনী বিভাগের প্রধান ডা. লাইনুন নাহার, ডা. নাছির (ইন্টার্নি), সিনিয়র নার্স সামছুন নাহার, মমতাজ বেগম, ম্যাটস ছাত্র নাঈম, আয়া পুতুল রানী, জুহুরা বেগম ও সারজাহানকে আসামি করা হয়েছে। নিহত নবজাতক জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড সরোয়ার মেম্বার বাড়ির জীবন উদ্দিন ও আসমা আক্তার দম্পতির সন্তান।
জানা গেছে, গত ২১ অক্টোবর ভোর ৫টার দিকে আসমা আক্তারের প্রসব ব্যাথা উঠলে তার শাশুড়ি তাহেরা বেগম নয়ন আসমাকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসেন। হাসপাতালের গাইনী বিভাগের ২নং ওয়ার্ডে তাকে ভর্তি করেন। ভর্তির পর গৃহবধূর শাশুড়ি নয়ন হাসপাতালের ওই ওয়ার্ডের ইনচার্জ ও সিনিয়র স্টাফ নার্স বিথীকা রাণী হাওলাদারকে বার বার ডাকা সত্তে¡ও তিনি ঘুম থেকে উঠেন নি। কিছুক্ষণ পর নার্স বিথীকা ঘুম থেকে উঠে ইন্টার্নি ডা. নাছির ও আয়া মারজাহানের যোগসাজশে বলেন টাকা দিলে তারা বাচ্চা নরমাল ডেলিভারী করার চেষ্টা করবেন। আর টাকা না দিলে প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে সিজার করতে হবে। এসময় তাদের সাথে থাকা ম্যাটস ছাত্র নাঈম অন্তস্বত্তার লজ্জা স্থানের ভিডিও চিত্র ধারণ করেন। শাশুড়ি নয়ন প্রতিবাদ করলে নাঈম বলে এ ভিডিও আমাদের ট্রেনিং এর জন্য লাগবে। নিরুপায় হয়ে শাশুড়ি নয়ন গাইনী বিভাগের প্রধান ডা. লাইনুর নাহারের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তিনি হাসপাতালে আসেননি।
অভিযোগ থেকে আরও জানা যায়, হাসপাতালে ওইসময় সিনিয়র চিকিৎসক নার্স চার্জে থাকা সত্তে¡ও গৃহবধূকে আয়া ও ম্যাটসের ছাত্র দিয়ে ডেলিভারী করায়। ওই সময় তারা নবজাতকের ঘাড় ধরে জোরপূর্বক টেনে ডেলিভারী করানোর কারণে নবজাতকের মুখসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ কালো হয়ে রক্ত জমাট বেধে যায়। টানা হিঁচড়ার কারণে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে জীবিত নবজাতক প্রসব হওয়ার মাত্র ২-৩ মিনিটের মধ্যে মারা যায়। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার পর ভুক্তভোগীদের মুখিক অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার পর দিনি ২২অক্টোবর হাসপাতালের তত্ত¡াবধায়ক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. নুরুল আফসার, গাইনী বিশেষজ্ঞ ডা. হেমা সানজিদা ও নাসিং সুপারেন্টেডেন্ট বেবী সুলতানা নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কিন্তু গতকাল পর্যন্ত ওই তদন্ত কমিটি কোন লিখিত প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি। হাসপাতালের তত্ত¡াবধায়ক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী ও আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. সৈয়দ মো. আব্দুল আজিমের ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করলেও তারা কেউই কল রিসিভ করেন নি।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নবজাতক

২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ