পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশ্বমঞ্চে ভারতের বর্তমান নড়বড়ে অবস্থান সম্পর্কে দেশটির রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং শীর্ষ আমলাদের উপলব্ধি বাস্তবতা থেকে অনেক দূরে অবস্থান করছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। প্রখ্যাত আন্তর্জাতিক চিন্তাবিদ এবং গণমাধ্যমের করা ৩টি প্রতিবেদনে বিশ^ দরবারে ভারতের বর্তমান চিত্র উঠে এসেছে। প্রথমটি, ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (আইএফপিআরআই) সূচক ব্যবহার করে কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইড এবং ওয়েলথুঙ্গারহিলফে যৌথভাবে গত ১৬ অক্টোবর প্রকাশিত গেøাবাল হাঙ্গার ইনডেক্স (জিএইচআই)।
ভারতীয় কৌশলবিদরা তাদের দেশকে একটি উচ্চাকাক্সক্ষী বৈশ্বিক শক্তি হিসেবে দাবি করলেও জিএইচআই র্যাঙ্কিংয়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তান বাদে দক্ষিণ এশিয়ায় তালিকার সর্বনিম্নে অবস্থান করছে ভারত। জিএইচআই’র প্রতিবেদনে তালিকাভুক্ত ১০৪টি দেশের মধ্যে ভারত ৯৪তম স্থানে রয়েছে। ভারত রেড জোনে সুদানের সমান র্যাঙ্ক ভাগ করে নিয়েছে। তার মানে ভারতের ক্ষুধার পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। দেশটির দক্ষিণ এশীয় প্রতিবেশিদের মধ্যে শ্রীলঙ্কা ৬৪, নেপাল ৭৩, বাংলাদেশ ৭৫ এবং পাকিস্তান ৮৮তম অবস্থানে রয়েছে। ভারত তার শিশুদের খাদ্য নিরাপত্তা দিতে পারছে না, কিন্তু বিশ্বরাজনীতির কৌশলগত খেলোয়াড় হওয়ার স্বপ্ন দেখছে। দ্বিতীয়টি বøুমবার্গ বিজনেসে ১৭ অক্টোবর তারিখের অ্যান্ডি মুখার্জির একটি প্রতিবেদন। শিরোনামটি আকর্ষণীয় ‘পরবর্তী চীন? ভারতকে অবশ্যই প্রথমে বাংলাদেশকে পরাজিত করতে হবে।’ মুখার্জি লিখেছেন, ‘১৯৯০’র দশকে অর্থনীতি প্রসারিত করার শুরু থেকেই ভারতের স্বপ্ন ছিল চীনের দ্রæত সম্প্রসারণ অনুকরণ করা। তিন দশক ধরে এ প্রচারণা চালিয়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশের পিছনে চলে যাওয়ায় বিশ্বব্যাপী তার ভাবমর্যাদা ক্ষুণœ হয়েছে। পাশ্চাত্য চীনের বিপরীতে অর্থবহ ভারী প্রতিপক্ষ চায়, তবে ভারত নিম্ন-মধ্যম আয়ের জালে আটকা না পড়লেই কেবল সেই অংশীদারিত্ব কার্যকর হবে।’
তৃতীয় প্রতিবেদনটি গত বছর প্রকাশিত হলেও এখনো প্রাসঙ্গিক। দাভোস-ভিত্তিক ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডবিøউইএফ) আইডিআই’র ২০১৮ র্যাঙ্কিং অনুযায়ী, ভারত আবারো নীচের দিকে রয়েছে। প্রসারমান অর্থনীতি বিভাগের ৭৪টি দেশের আইডিআই র্যাঙ্কিংয়ে নেপাল ২২তম, বাংলাদেশ ৩৪, শ্রীলঙ্কা ৪০, পাকিস্তান ৪৭ এবং ভারত ৬২ নম্বরে রয়েছে। এছাড়া বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ ভারত দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের জন্য এমনকি মানবাধিকার প্রশ্নেও রোল মডেল নয়। ভারতের অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের কার্যক্রম বন্ধ করার বিষয়টি এটির সত্যতা নিশ্চিত করে।
এ প্রতিবেদনগুলো থেকে প্রতীয়মান যে, ভারত শীর্ষ পরাশক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা উদীয়মান পরাশক্তি চীনের সাথে তুলনীয় নয়। ভারত জাপান বা জার্মানির মতো মধ্যশক্তির দেশের সমানও নয়। এমনকি এটি অনেকগুলি উন্নয়ন সূচকে তার আশেপাশের প্রতিবেশী বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা এবং নেপালের সমতুল্যও নয়। বিভিন্ন সূচকে ভারত তার দক্ষিণ এশীয় প্রতিবেশিদের অনেক পেছনে অবস্থান করছে। ভারতের এ দুর্বল ভাবমর্যাদার ফলস্বরূপ সাম্পতিককালে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলি ভারতকে পাশ কাটিয়ে চীনের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। অর্থনীতিবীদরা বলছেন যে, আর্থ-সামাজিক র্যাঙ্কের নিম্নে অবস্থান করা একটি দেশ উচ্চ র্যাঙ্কযুক্ত দেশ বা অন্যদের জন্য রোল মডেল হতে পারে না। ভারতীয় নেতারা এবং আমলারা বিষয়টি অস্বীকার করলেও ভারতের পক্ষে তা কাজে দেবে না। ভারত যত তাড়াতাড়ি মেনে নেবে যে, সে পরাশক্তি ও মধ্য-শক্তির দেশগুলির থেকে, এমনকি তার আশেপাশের প্রতিবেশীদের তুলনায়ও অনেক পিছিয়ে রয়েছে, তত তাড়াতাড়িই তার অর্থনীতি ঠিক হতে শুরু করবে। ভারতীয় নেতৃবৃন্দ ও কর্মকর্তাদের গেøাবাল প্লেয়ার হওয়ার মিথ্যা দম্ভ দেশটির জনগণের কোনও উপকারে আসবে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।