Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নভেম্বরে করোনা সংক্রমণের আরো বড় ঢেউ দেখবে ভারত

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২২ অক্টোবর, ২০২০, ৪:৪০ পিএম

ভারতে এখন পর্যন্ত প্রায় ৭৬ লাখ মানুষ করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছে। সংক্রমণের সংখ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের পরই দেশটির অবস্থান। তবে কিছুদিন ধরে দেশটিতে দৈনিক সংক্রমণ কমছে। দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে গঠিত বিশেষজ্ঞ প্যানেল সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে, সেপ্টেম্বরে কভিড-১৯ সংক্রমণের চূড়া অতিক্রমের সময় ভারতে প্রায় ১০ লাখ সক্রিয় সংক্রমণ ছিল।

তারা সতর্ক করেছেন, যদি মাস্ক ব্যবহার, হাত ধোয়া ও সামাজিক দূরত্বের মতো বর্তমান পদক্ষেপগুলো অব্যাহত রাখা না হয়, তবে নভেম্বর মাসের দিকে ভারত আরো বড় সংক্রমণের চূড়া বা পিকে উঠতে পারে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে সক্রিয় সংক্রমণগুলো এক মাসের মধ্যেই ২৫ লাখে উন্নীত হতে পারে এবং ফেব্রুয়ারির মধ্যেই মৃত্যুর হার তিন গুণ বেশি হতে পারে। ভাইরোলজিস্ট, বিজ্ঞানী ও অন্য বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত এ প্যানেলের অনুমান, সব সতর্কতা অবলম্বন করা অব্যাহত রাখা হলে ফেব্রুয়ারির মধ্যে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হতে পারে।

ভারতে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ১ লাখ ১৫ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। দেশটিতে মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫ শতাংশ। একজন সরকারি কর্মকর্তা দ্য প্রিন্টকে বলেন, বিস্তারিত প্রতিবেদনে ওই কমিটি বিভিন্ন পরিস্থিতি তুলে ধরেছে। এখন থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সব ধরনের কভিড প্রটোকল শতভাগ মেনে চললে দেশে মোট সংক্রমণের সংখ্যা ২০ হাজারে নেমে আসবে। তবে অন্য পরিস্থিতিতে স্বাভাবিকভাবেই সংখ্যাটি অনেক বেশি হতো।

ওই কমিটির সদস্য ও কানপুরের ইন্ডিয়ানা ইনস্টিটিউট ফর টেকনোলজির অধ্যাপক মনীন্দ্র আগরওয়াল বলেন, বিদ্যমান ব্যক্তিগত সুরক্ষা প্রটোকলগুলো যদি পুরোপুরি মেনে চলা না হয়, তবে আমরা নভেম্বরে সংক্রমণের আরো একটি চূড়া দেখতে পাব এবং সেটা এখনকার চেয়ে আরো বড় হতে পারে। আমাদের গাণিতিক মডেলের অনুমান অনুযায়ী, এ পদক্ষেপগুলো অব্যাহত না রাখলে সক্রিয় সংক্রমণ এক মাসের মধ্যে ২৫ লাখে উন্নীত হতে পারে। আর এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়বে মৃত্যুর ওপর। এ সতর্কতাগুলো বাতাসে ছুঁড়ে ফেললে আমরা ফেব্রুয়ারির মধ্যে এখনকার থেকে তিন গুণ মৃত্যু দেখব।

তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩০ শতাংশ করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছে। আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যেই এটা ৫০ শতাংশ হয়ে যেতে পারে। কমিটির অনুমান ভাইরাসের বর্তমান সংক্রমণ কেন্দ্রীয় সরকারের সেরোলজিক্যাল জরিপের তুলনায় অনেক বেশি। ওই জরিপ অনুযায়ী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জনসংখ্যার মাত্র ১৪ শতাংশ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিল। সেরোলজিক্যাল জরিপে নমুনা অনেক কম হওয়ায় সঠিকভাবে ফলাফল নাও পাওয়া যেতে পারে। পরিবর্তে আমরা একটি নতুন মডেল তৈরি করেছি এবং মডেলটি স্পষ্টভাবে শনাক্ত না হওয়া সংক্রমণগুলোও বিবেচনায় নেয়। আমাদের অনুমান বর্তমান মুহূর্তে শনাক্ত হওয়া প্রতিটি পজিটিভ সংক্রমণের বিপরীতে ৬০-৬৫ জন অপরিক্ষীত লক্ষণহীন পজিটিভ রয়েছে। কারণ আমাদের পরীক্ষা সক্ষমতা খুব সীমিত।

মডেলটিতে কভিডের মৃত্যুর ঘটনা গণনা থেকে বাদ পড়েছে কিনা সে সম্পর্কে কোনো অনুমান সরবরাহ করেনি। তিনি বলেন, আমি যেমনটা বলেছি, মডেলটি ভাইরাসটির বিস্তার সম্পর্কে অনুমান করতে শনাক্ত হওয়া সংক্রমণগুলো বিবেচনায় নিয়েছিল। তবে মৃত্যুর জন্য এমন কিছু সম্ভব নয়। তাছাড়া আমার নিজস্ব মূল্যায়ন হলো আমাদের মতো দেশে বিপুলসংখ্যক মৃত্যু মিস করা সম্ভব নয়। মডেলটির সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে আগরওয়াল বলেন, সব গাণিতিক মডেলের মতো এটাও বাস্তবতার কাছাকাছি। আপনি এটা দিয়ে প্রকৃত সংখ্যা অনুমান করতে পারবেন না। এটা দিয়ে আপনাকে প্রবণতাটি বুঝতে হবে।

দ্য প্রিন্ট

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ