পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কুয়েতের পার্লামেন্টে সর্বসম্মতিক্রমে অভিবাসী শ্রমিক নিয়ে নতুন একটি আইন পাস হয়েছে। নতুন এই আইনের ফলে দেশটিতে অভিবাসী শ্রমিকের সংখ্যা কমিয়ে আনতে দেশটির সরকারকে এক বছরের সময় দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে দেশটিতে থাকা বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশের লাখ লাখ শ্রমিক বিপাকে পড়েছেন।
এদিকে কুয়েতের আরবি ভাষার দৈনিক আল-আনবার খবর দিয়েছে আজ বৃহস্পতিবার অর্থ ও মানবপাচারের অভিযোগে কুয়েতে গ্রেপ্তার বাংলাদেশের সংসদ সদস্য শহিদ ইসলাম পাপুলকে শুনানির জন্য আদালতে তোলা হবে। লক্ষীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য পাপুলকে গত ৬ জুন গ্রেফতার করা হয়। তখন থেকে সে কুয়েত কারাগারে রয়েছে। তার বিরুদ্ধে মানবপাচার, অর্থপাচার, ঘুষ দেওয়া এবং রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তায় হুমকির অভিযোগ এনেছে কুয়েতের প্রসিকিউশন। ১৭ সেপ্টেম্বর কুয়েতের অপরাধ আদালতের কাউন্সেলর আব্দুল্লাহ আল-ওসমানের আদালতে পাপুলের বিচার শুরু হয়।
বুমবার্গের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন আইনের কারণে অনেক অভিবাসী শ্রমিককেই এখন বাধ্য হয়ে কুয়েত ছেড়ে দেশে পাড়ি জমাতে হবে। বিশ্বে অভিবাসী শ্রমিকনির্ভর দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম কুয়েত। দেশটির বর্তমান জনসংখ্যা ৪৮ লাখ। গত কয়েক দশকে দেশটিতে পাড়ি জমানো দক্ষ ও অদক্ষ অভিবাসী শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ৩৪ লাখ।
কুয়েতের তেলনির্ভর অর্থনীতির গতিশীলতা ধরে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখছেন অভিবাসী শ্রমিকরা। কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারির কারণে তেলের দাম কমে যাওয়ায় কুয়েতের অর্থনীতিতে ধস নেমেছে।
কয়েতের অর্থনীতি সক্রিয় রাখতে এবং দেশে অভিবাসীদের সংখ্যায় ভারসাম্য রাখতেই নতুন আইন জারি করা হয়েছে। অভিবাসীর সংখ্যা ৩০ শতাংশে কমিয়ে আনতে চাইছে কুয়েত সরকার। এছাড়া বিভিন্ন কাজের ক্ষেত্রে কুয়েতের জনগণই যেন বেশি সুযোগ-সুবিধা পান সে বিষয়টিকেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
কুয়েতে অভিবাসী ইস্যু অনেক পুরনো বিষয়। দেশটির আইনপ্রণেতারা স¤প্রতি অভিবাসী শ্রমিক কমানোর জন্য সরকারের ওপর চাপ দিচ্ছিলেন। কোটা ব্যবস্থা চালুর পাশাপাশি সরকারি চাকরিতে কর্মরত অভিবাসীদের কুয়েতিদের দিয়ে প্রতিস্থাপনেরও দাবি তুলেছেন তারা। এমনটি হলে চাকরি হারাবেন অন্তত এক লাখ অভিবাসী।
এর আগে গত জুন মাসে কুয়েতের প্রধানমন্ত্রী শেখ সাবাহ আল খালিদ আল সাবাহ বলেন, দেশে অবস্থানরত অভিবাসীর সংখ্যা ৭০ শতাংশ থেকে ৩০ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে। তার ওই ঘোষণার পরই সরকার নতুন এই অভিবাসী আইন তৈরির পদক্ষেপ নেয়।
গত জুলাই মাসে কুয়েতের জাতীয় সংসদে একটি আইন পাস হয়। ওই আইন অনুযায়ী দেশটিতে ভারতীয় অভিবাসীর সংখ্যা ১৫ শতাংশের বেশি হতে পারবে না। অন্যদিকে মিসর, ফিলিপাইন এবং শ্রীলঙ্কার অভিবাসীর সংখ্যা ১০ শতাংশের বেশি হতে পারবে না। নতুন আইনে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, নেপাল এবং ভিয়েতনাম থেকে আসা অভিবাসীর সংখ্যা ৫ শতাংশের ওপরে যেতে পারবে না।
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে উপসাগরীয় দেশগুলোতে থাকা লাখ লাখ অভিবাসীর জীবনের অনিশ্চয়তা নেমে এসেছে। বিভিন্ন দেশের কঠোর পদক্ষেপের কারণে কাজ হারিয়ে বাধ্য হয়ে নিজের দেশে ফিরতে আসতে হচ্ছে তাদের।
রিয়াদভিত্তিক জাদওয়া ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানির এক প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০২০ সালে সউদী আরব থেকে বাংলাদেশে ফিরতে হতে পারে ১২ লাখ অভিবাসী শ্রমিককে। শুধু সউদী নয়, মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশগুলোর চিত্রও প্রায় একই।
কুয়েতের আরবি ভাষার দৈনিক আল-আনবার পত্রিকা লিখেছে, শুনানির জন্য এর আগে অক্টোবরের শুরুতে পাপুলকে আদালতে তোলার কথা থাকলেও কুয়েতি আমিরের মৃত্যুতে তা পিছিয়ে যায়।
জানা যায়, ১৭ সেপ্টেম্বর কুয়েতের অপরাধ আদালতে বিচার শুরু হলে পাপুলের পক্ষে জামিনের আবেদন করা হয়। সেদিন জামিন আবেদন নাকচ করে পাপুলকে কারাগারে পাঠিয়ে পহেলা অক্টোবর অভিযোগ শুনানির পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করেছিল আদালত।
এর মধ্যে ২৯ সেপ্টেম্বর কুয়েতের আমির শেখ সাবাহ আল-আহমেদ আল-সাবাহ মারা গেলে আদালতের কার্যক্রম স্থগিত হয়।
পাচারের শিকার পাঁচ বাংলাদেশির অভিযোগের ভিত্তিতে লক্ষীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্যপাপুলের বিরুদ্ধে মানবপাচার, অর্থপাচার ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের শোষণের অভিযোগ এনেছে কুয়েতি প্রসিকিউশন। গ্রেপ্তারের পর ১৭ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পাপুলের সঙ্গে অভিযুক্ত হিসাবে রয়েছেন কুয়েতের দুজন সংসদ সদস্য সাদুন হাম্মাদ আল-ওতাইবি ও সালাহ আবদুলরেদা খুরশিদ। বাংলাদেশি এমপির কাছ থেকে ‘ঘুষ নিয়ে’ অবৈধ সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক অ্যাসিসট্যান্ট আন্ডার সেক্রেটারি বরখাস্ত মেজর জেনারেল মাজেন আল-জাররাহও রয়েছেন অভিযুক্তদের মধ্যে।
কুয়েতি আল-কাবাসের খবরে বলা হয় পাপুলের বিষয়ে অভিযোগ তদন্তের সময় অভিযুক্ত হিসাবে ১৩ জনের নাম উঠে আসে। এর মধ্যে থেকে চারজনকে তদন্তকালে বাদ দেওয়া হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।