Inqilab Logo

মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পাপুল পরিবারের ৬১৩টি ব্যাংক হিসাব জব্দ হচ্ছে

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৪ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম

অবৈধ সম্পদ অর্জন ও কোটি কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে লক্ষীপুর-২ আসনের কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল এমপি ও তার স্ত্রী সংরক্ষিত আসনের এমপি সেলিনা ইসলাম, শ্যালিকা জেসমিন প্রধান ও মেয়ে ওয়াফা ইসলামের সব ব্যাংক হিসাব জব্দ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দেশের ৮টি ব্যাংকে এই চার জনের মোট ৬১৩টি ব্যাংক হিসাব পেয়েছে দুদক। দুদক সংশ্লিষ্ট সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। দুদক স‚ত্র জানায়, ব্যাংক হিসাবের পাশাপাশি পাপুল, তার স্ত্রী, শ্যালিকা ও মেয়ের নামে দেশের বিভিন্ন স্থানের মোট ৩০ দশমিক ২৭ একর জমি এবং গুলশানে একটি ফ্ল্যাটের সন্ধান পাওয়া গেছে। এসব সম্পত্তিও জব্দ তালিকায় যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক। ব্যাংক হিসাবগুলোর মধ্যে এনআরবিসি ব্যাংকে ৫৯০টি, প্রাইম ব্যাংকে ১৩টি, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকে চারটি, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে দুটি এবং সিটি ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক ও ট্রাস্ট ব্যাংকে একটি করে হিসাব পাওয়া গেছে।

এছাড়া ভূ-সম্পত্তির মধ্যে কুমিল্লার মেঘনা উপজেলায় ২২ একর, হোমনায় সাড়ে ৭ একর ও সিলেটে ৪৯ শতাংশ জমির সন্ধান পাওয়া গেছে। গুলশান-২ এর ৯৫ নম্বর সড়কের সিইএন ডি-২ বাড়ির ৮/এ ও বি ঠিকানায় একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাটের সন্ধান পেয়েছে দুদক।
অবৈধ সম্পদ অর্জন ও ১৪৮ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল ও তার স্ত্রী সেলিনা ইসলাম, শ্যালিকা জেসমিন প্রধান ও মেয়ে ওয়াফা ইসলামের বিরুদ্ধে গত ১১ নভেম্বর একটি মামলা দায়ের করে দুদক। দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দিন বাদী হয়ে এই মামলা করেন।
মামলায় অভিযোগে বলা হয়েছে, পাপুলের শ্যালিকা জেসমিন প্রধান দুই কোটি ৩১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৮ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। তিনি শিক্ষার্থী থাকা অবস্থায় পাপুল-সেলিনা দম্পতির অবৈধ অর্জিত অর্থ মানিলন্ডারিং করে বৈধতার রূপ দিতে সহযোগিতা করেন। এজন্য ‘লিলাবালি’ নামে একটি নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানও গড়ে তুলেছিলেন। মূলত এই প্রতিষ্ঠানের আড়ালেই জেসমিন প্রধান পাঁচটি ব্যাংকের মাধ্যমে ২০১২ সাল থেকে ২০২০ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ১৪৮ কোটি টাকা হস্তান্তর, রূপান্তর ও স্থানান্তরের মাধ্যমে মানিলন্ডারিং করেছেন।

এছাড়া জেসমিন প্রধানের নামে বিভিন্ন ব্যাংকে প্রায় ৪৪টি হিসাব পাওয়া গেছে। এর মধ্যে শুধু এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকেই রয়েছে ৩৪টি এফডিআর হিসাব। তার বোনের স্বামী এমপি শহিদ ইসলাম পাপুল এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের পরিচালক ছিলেন।

চলতি বছরের ৬ জুন এমপি শহিদ ইসলাম পাপুলকে কুয়েতে গ্রেফতার করে সে দেশের পুলিশ। কুয়েত আদালতে তার বিরুদ্ধে মানব ও অর্থ পাচার অভিযোগে বিচার চলছে।

এদিকে গত ১৭ জুন পাপুলের স্ত্রী, শ্যালিকা ও মেয়ের দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা, ২২ জুন সব ব্যাংক হিসাব স্থগিত ও ২২ জুলাই জেসমিন ও সেলিনাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। দুদকের বাইরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি পাপুল ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে ২২ ডিসেম্বর মানিলন্ডারিং আইনে একটি মামলা দায়ের করেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ