মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
আগামী মাসের শুরুতেই যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এখন পর্যন্ত অধিকাংশ সমীক্ষায় এগিয়ে জো বাইডেন। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেও বোধহয় হারের আশঙ্কা করছেন। এই প্রথম তার মুখে শোনা গেল হারের কথা। বলে বসলেন, হেরে গেলে তাকে দেশ ছাড়তে হতে পারে। এদিকে, নির্বাচনে হেরে গেলে ২৬ নারী কেলেংকারি, ট্যাক্স রিটার্নসহ নানা অভিযোগে ট্রাম্প বেকায়দায় পড়বেন বলে জানা গেছে।
আমেরিকার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, সাবেক কলামিস্ট ই জিন ক্যারলসহ ২৬জন নারী আগে থেকেই ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি, ধর্ষণ ও মানহানির মামলা দায়ের করে রেখেছেন। এর সাথে রয়েছে ব্যবসা সংক্রান্ত লেনদেনে প্রতারণা ও ব্যক্তিগত লাভের উদ্দেশ্যে হোয়াইট হাউজকে ব্যবহারের অভিযোগ। প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতার দাপটে বেশ কিছু অভিযোগের তদন্ত ও মামলার কার্যক্রম ট্রাম্প আটকে রেখেছেন বা বিলম্বিত করছেন। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, আয়কর বিবরণীর দাখিল না করা। প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়মুক্তির সুযোগকে তিনি কাজে লাগিয়ে এর থেকে কংগ্রেসকেও ঠেকিয়ে রাখছেন। ট্রাম্পকে সবচেয়ে গুরুতর যে আইনি হুমকি মোকাবিলা করতে হতে পারে সেটি হচ্ছে তার প্রতিষ্ঠানগুলোর আর্থিক অনিয়মের বিরুদ্ধে ম্যানহাটন জেলা অ্যাটর্নি বোর্ডের ফৌজদারি তদন্ত। আদালতে দাখিল করা নথিতে প্রসিকিউটররা জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট ও তার প্রতিষ্ঠান ব্যাংকিং প্রতারণা, ইন্স্যুরেন্স প্রতারণা, ফৌজদারি কর অপরাধ এবং মিথ্যা ব্যবসা তথ্য রেকর্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিনা তা তদন্তে খতিয়ে দেখা যেতে পারে। তার ট্যাক্স রিটার্ন নিয়ে তদন্তের বিষয়টিও তিনি চাপা দিতে বা বিলম্ব করতে পেরেছেন প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা থাকার কারণে। আসন্ন নির্বাচনে হেরে গেলে এসব নিয়ে নড়াচড়া শুরু হবে বেশ জোরেশোরেই।
এদিকে, ‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ইতিহাসে সবচেয়ে খারাপ’ প্রার্থী বলে বাইডেনকে উল্লেখ করে অবশ্য আক্রমণের ঝাঁঝ বিন্দুমাত্র কমাননি ট্রাম্প। প্রতিপক্ষের প্রার্থী বাইডেন যদিও প্রচারে হাতিয়ার করেছেন করোনা রোধে সরকারের ব্যর্থতাকেই। শনিবার ট্রাম্পের প্রচার কর্মসূচি ছিল ফ্লোরিডা এবং জর্জিয়াতে। কয়েক দিন আগে ট্রাম্পের সঙ্গে সামনাসামনি বিতর্কে তাঁকে ডাহা মিথ্যুক বলে কটাক্ষ করেছিলেন বাইডেন। জবাবে ট্রাম্প এ দিন বাইডেনকে ‘অপরাধী’ বলে পাল্টা খোঁচা দিয়েছেন। ‘অপরাধী’ বলে বাইডেনের পুরো পরিবারকেই অভিযুক্ত করেছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এ বার অন্যতম ইস্যু অভিবাসী সঙ্কট। ট্রাম্প যে ভাবে অভিবাসীদের আটকাতে উঠে পড়ে লেগেছেন, নির্বাচনী প্রচারে তাকে হাতিয়ার করেছেন বাইডেন। তাতেও অবশ্য দমেননি ট্রাম্প। উল্টে আক্রমণ করেছেন, ডেমোক্র্যাটরা ক্ষমতায় এলে কমিউনিজম আমদানি করবেন। সেই সূত্রেই হেরে যাওয়া এবং দেশ ছাড়ার কথা বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, ‘বাইডেন কমিউনিজম এবং অপরাধী অভিবাসীদের বন্যা বইয়ে দেবেন দেশে।’ কিন্তু তার পরেও সব কিছু তার পক্ষে নাও যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে ট্রাম্প বলেন, ‘মার্কিন নির্বাচনের ইতিহাসে সবচেয়ে খারাপ প্রতিদ্ব›দ্বীর বিরুদ্ধে লড়াইয়েও চাপে পড়ে যাচ্ছি। আমি যদি হেরে যাই আপনারা কল্পনাও করতে পারবেন না, কি হতে পারে।’ ট্রাম্প আরও যোগ করেন, ‘আমি কি করব? আমার মোটেই ভাল লাগবে না। আমাকে দেশ ছাড়তে হতে পারে।’ জর্জ ফ্লয়েডের হত্যা ঘিরে উত্তাল হয়ে উঠেছিল গোটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। বর্ণবিদ্বেষের আগুন জ্বলেছিল গোটা দেশে। তার পরেও সেই বিষয়টি নিয়ে নমনীয় মনোভাব দেখা যায়নি এ দিনের ট্রাম্পের প্রচারে। তার বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানানোর তালিকায় উপরের দিকে থাকা সোমালি-মার্কিন ডেমোক্র্যাট মহিলা সদস্য ইলহান ওমরকে নিশানা করে বলেন, ‘উনি আমাদের দেশকে ঘৃণা করেন। উনি এমন একটা দেশ থেকে এসেছেন, যেখানে কোনও সরকারই নেই।’
প্রতিদ্ব›দ্বী বাইডেন অবশ্য এ দিনও তার প্রচারে করোনাভাইরাস নিয়েই সরকারের সমালোচনা করেছেন। মিশিগানে একটি গাড়ি শোভাযাত্রায় অংশ নিয়ে ট্রাম্পকে নিশানা করে তিনি বলেন, ‘উনি শুধু বলছেন, করোনা ভাইরাস কোনও মিরাক্ল-এর মতো গায়েব হয়ে যাবে। কিন্তু তা নয়। এত সহজে অদৃশ্য হবে না ভাইরাস। এমনকি, এখনও প্রতিদিন সংক্রমণ বাড়ছে। পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে ভবিষ্যদ্বাণী করছেন বিজ্ঞানী-বিশেষজ্ঞরা।’ বর্ণবিদ্বেষ নিয়ে খোঁচা দিয়ে বাইডেনের মন্তব্য, ‘আমরা ভয়ের পরিবর্তে আশা, বিভাজনের পরিবর্তে ঐক্য এবং গল্পগাথার বদলে বিজ্ঞান এবং সর্বোপরি মিথ্যার পরিবর্তে সত্যকে বেছে নিয়েছি।’ সূত্র : সিএনএন, ডেইলি মেইল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।