Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জনগণের নিরাপত্তা দিলেও নিজেরাই অনিরাপদ

ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে কাজ করছে পুলিশ সদস্যরা

কামাল আতাতুর্ক মিসেল | প্রকাশের সময় : ১৯ অক্টোবর, ২০২০, ১২:০০ এএম

লক্ষীপুরের ঝুঁকিপূর্ণ দুটি ভবনে চলছে পুলিশ ফাঁড়ির কার্যক্রম। অথচ ৩০ বছর আগে ভবন দুটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করার পরও ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা। লক্ষীপুরের রায়পুর উপজেলার হাজিমারা এবং হায়দরগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির ভবন দুটি বর্তমানে মৃতুক‚পে পরিণতি হয়েছে। তারা জণগণের নিরাপত্তা দিলেও নিজেরাই থাকছে অনিরাপদে।

পুলিশ ফাঁড়ি সূত্রে জানা যায়, ১৯৭৬ সালে মেঘনা উপক‚লীয় অঞ্চলবাসীর নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে-পানি উন্নয়ন বোর্ডের ভেতরে দুটি ভবনে পুলিশের কার্যক্রম শুরু হয়। ৪ বছর থাকার পর ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ১৯৮০ সালে পাউবোর কর্তৃপক্ষ ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করলেও এখনও চলছে পুলিশ ফাঁড়ির কার্যক্রম। ভবন দুটি এতোই জরাজীর্ণ যে প্রায়ই খসে পড়ছে ছাদ ও দেয়ালের পলেস্তার। বেরিয়ে গেছে রড। ফলে মৃত্যুর ঝুঁকি মাথায় নিয়ে নিয়মিত কাজ করছেন পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা। যে কোনো সময় ভবন দুটি ধসে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

গতকাল সরেজমিনে দেখা গেছে, পাকা ভবন দুটি একেবারেই জরাজীর্ণ ও নাজুক। ভবনগুলোর ছাদসহ বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। ফলে ভবনগুলোর রডগুলো বের হয়ে তাতে মরিচা ধরেছে। বিভিন্ন স্থানের পলেস্তার খসে পড়েছে। ভবনগুলোর বাইরে ও ভেতরের দেয়ালের অনেক স্থানে বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। দরজা-জানালা ভেঙে গেছে। কক্ষের ভেতর বাঁশের খুঁটি দিয়ে ছাদ ঠেকা দিয়ে রাখা হয়েছে। ভবনগুলোর কোনো সীমানা প্রাচীরও নেই। প্রতিদিনই ফাঁড়ির কর্ত্যবরত পুলিশ কর্মকর্তারা মৃত্যুক‚প ভবনে দুর্ঘটনার আতঙ্কে থাকতে হয়।
পুলিশ ফাঁড়িগুলোতে সেবা নিতে আসা কয়েকজন ব্যক্তি দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, থানায় তাদের বসার কোনো ব্যবস্থা নেই। নেই শৌচাগারের ব্যবস্থাও। ঝড়-বৃষ্টির সময় তাদের আশ্রয় নিতে হয় আশপাশের হোটেল ও দোকানে। পার্কিংয়ের ব্যবস্থা না থাকায় গাড়ি নিয়ে এসে বিপাকে পড়েন অনেকেই। হাজিমারা পুলিশ ফাঁড়িতে আসা স্থানীয় ব্যবসায়ী ইসমাইল হোসেন দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, এ ফাঁড়ি ভবনটি যেন মৃত্যুর ফাঁদ। তাই দ্রæত কাজ সেরে চলে যেতে হয়।

পুলিশ ফাঁড়িটিতে কর্মরত পুলিশ পরিদর্শক আকবর হোসেন বলেন, বৃষ্টি এলে অফিসের কাগজপত্র ও বিছানাপত্র পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখতে হয়। ঝড় হলে তো বিপদ বেশি। মাথার উপর জরাজীর্ণ ভবন। কখন পলেস্তার খসে পড়ে এ আতঙ্ক নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। এ বিষয়ে হাজিমারা ফাঁড়ির পরিদর্শক আবু ইউসুফ দৈনিক ইনকিলাকে বলেন, পুলিশ ফাঁড়ি ভবনটির এমন বেহাল দশা, সবাই এর ভেতরে ঢুকতেই ভয় পান। পুলিশ সদস্যরা এখানে থাকতে চান না, বদলি হয়ে অন্যত্র চলে যেতে চান। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটির বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপারের বরাবর আবেদন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে হায়দরগঞ্জ ফাঁড়ির পরিদর্শক মো. জাহাঙ্গির বলেন, পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা যে ভবনগুলোতে থাকেন, সেগুলোর অবস্থা খুবই খারাপ। যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তবে আশার বাণী হলো, সম্প্রতি জেলার সহকারি পুলিশ সুপার ইস্পিনা রানী প্রামানিক মহোদয় আমাদের পুলিশ ফাঁড়ি ভবনটি পরিদর্শন করে গেছেন। আশাকরছি শিগগিরই এ ফাঁড়ির ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ব্যাপারে লক্ষীপুর সহকারি পুলিশ সুপার ইস্পিনা রানী প্রামানিক দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যদের ঝুঁকির বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। নতুন ভবন নির্মাণে প্রয়োজনীয় বরাদ্দের জন্য দাফতরিক কাজ চলছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পুলিশ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ