Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দিল্লির চোখে বাংলাদেশকে দেখে না মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

যুক্তরাষ্ট্র মিয়ানমারের ওপর চাপ বাড়াতে কাজ করছে : যৌথ সংবাদ সম্মেলনে স্টিফেন ই বাইগান

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৬ অক্টোবর, ২০২০, ১২:০১ এএম

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, বাংলাদেশ নিজের অবস্থানই গুরুত্বপূর্ণ। ঢাকাকে যুক্তরাষ্ট্রের দিল্লির চোখে দেখার প্রশ্নই আসে না। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ। যুক্তরাষ্ট্র দিল্লির চোখ দিয়ে বাংলাদেশকে দেখেÑ এটি আমাদের মিডিয়া বলে। আসলে তারা (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) দিল্লির চোখে বাংলাদেশকে দেখে না। গতকাল বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় ঢাকা সফরতর মার্কিন উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্টিফেন ই বাইগানের সঙ্গে বৈঠকের পর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় মার্কিন উপমন্ত্রী জানান, ইন্দো-প্যাসিফিকে সেন্টার পিস বা কেন্দ্রবিন্দুতেই বাংলাদেশের অবস্থান। আর এ কারণেই বাংলাদেশ সফরে এসেছেন। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সঙ্কটের শুরু থেকেই যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের পাশে রয়েছে। রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে মিয়ানমারের ওপর চাপ বাড়াতে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র।

উল্লেখ্য, মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদধারী বাইগানের সফরটি চার বছরের মধ্যে ক্ষমতাসীন ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের সর্বোচ্চ কোন প্রতিনিধির ঢাকা সফর।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, আমাদের দুই দেশের যে সলিড বা খাঁটি সম্পর্ক রয়েছে এটি আরও বিস্তৃত এবং গভীরতর করার মধ্যে বন্ধু বিগানের সঙ্গে অনেক আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকা এবং এ দেশের ভ‚রাজনৈতিক অবস্থান এবং যে সম্ভাবনা রয়েছে তার কারণে যুক্তরাষ্ট্রসহ দুনিয়ার দৃষ্টি এখন বাংলাদেশের দিকে নিবদ্ধ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন নির্বাচনের ক্যাম্পেইনের এই চরম ব্যস্ততম মুহূর্তে স্টেট ডিপার্টমেন্টের নাম্বার টুর বাংলাদেশ সফরের তাৎপর্য কি এবং কেন তিনি ভারত হয়ে বাংলাদেশে এলেনÑ এমনযুক্ত প্রশ্নের জবাবে আলাদা ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পারসেপশন যাই হোক, যুক্তরাষ্ট্র কখনোই বাংলাদেশকে দিল্লির চোখে দেখে না। দেখলে আমাদের এখানে তারা আসতেন না। বাংলাদেশকে স্বাধীন, সার্বভৌম রাষ্ট্র এবং এ দেশের স্বকীয়তার কারণে যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্য রাষ্ট্রগুলো বাংলাদেশের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক ও বন্ধুত্ব করে।

মন্ত্রী মোমেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বৈঠকে দেশটিতে অবস্থানরত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনি রাশেদ চৌধুরীকে ফেরতের বিষয়ে কথা হয়েছে। মন্ত্রী বিগান জানিয়েছেন, বিষয়টি তাদের অ্যাটর্নি জেনারেল দেখছেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি দাবি করে বলেন, বৈঠকে ইন্দো-প্যাসিফিক নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। ডিফেন্স কো-অপারেশন বা মার্কিন অস্ত্র বিক্রির প্রস্তাব সংক্রান্ত মন্ত্রীর নিজের বক্তব্যের সূত্র ধরে গত ক’দিন ধরে গণমাধ্যমে লেখালেখি চলছে তা নিয়ে তার সঙ্গে বৈঠকে কোনো কথাই হয়নি। তার ভাষ্যমতে, ডিফেন্স কো-অপারেশন বা অন্য বিষয়ে আপনারা কয়েকদিন ধরে যেটা লিখেছেন, তা নিয়ে কোনো আলোচনাই হয়নি।

মার্কিন উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্টিফেন ই বাইগান বলেন, বৈঠকে করোনাভাইরাসের টিকা আবিষ্কার হলে তা কীভাবে বাংলাদেশ পেতে পারে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। করোনাভাইরাসের টিকা পাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবে যুক্তরাষ্ট্র।

ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার উল্লেখ করে বাইগান বলেন, স্বাধীন, অবাধ, অন্তর্ভুক্তিমূলক, শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল গড়ে তোলা হবে। পাশাপাশি কোভিড-১৯ মোকাবিলা ও অর্থনীতি পুনরুদ্ধার এবং টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রচেষ্টায় যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের অংশীদারিত্ব ও যৌথ সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

যৌথ সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন এবং মার্কিন উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাইগান উভয়ে জানান, ঢাকার সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করার বিশেষত বড় মার্কিন বিনিয়োগ নিয়ে তাদের মধ্যে বিস্তৃত আলোচনা চলছে। গত ৩০ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের নেতৃত্বে একটি টিম এ নিয়ে কাজ করছে। যুক্তরাষ্ট্রের আন্ডার সেক্রেটারি কিথ কাউথ দেশটির প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তাদের আলোচনায় বিনিয়োগের খুঁটিনাটি ঠিক হবে এবং এটি এগিয়ে যাবে বলে বাইগান-মোমেন উভয়ে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এর আগে ধানমন্ডিস্থ বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিবদর্শন করে জাতির জনকের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। সেখানে মার্কিন উপ-পররাষ্ট্র লিখেছেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর এবং শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকী পালনে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের বন্ধু ও অংশীদার হতে পেরে গর্বিত। বাংলাদেশকে শক্তিশালী, স্বাধীন ও সমৃদ্ধ অর্জনে আগামী ৫০ বছর দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করার দিকে তাকিয়ে আছি যা বঙ্গবন্ধুকে গর্বিত করবে।
গত বুধবার তিনদিনের সফরে ঢাকায় আসেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডেপুটি সেক্রেটারি অব স্টেট (উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী) স্টিফেন ই বাইগান। ঢাকা সফরের প্রথমদিন তিনি পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে বৈঠক করেন। গতকাল বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠক ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

 

 



 

Show all comments
  • Zahirul Samir ১৬ অক্টোবর, ২০২০, ৩:১৮ এএম says : 0
    thank you Amarica,, thanks for your perfect decision, we hope it Won't be just End here, God bless Amarica and long live My Bangladesh
    Total Reply(0) Reply
  • Desh Nill ১৬ অক্টোবর, ২০২০, ৩:১৮ এএম says : 0
    সুন্দর কথা বলেছেন ।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Omar Faruk ১৬ অক্টোবর, ২০২০, ৩:১৯ এএম says : 0
    সব সত্য বেরিয়ে এসেছে
    Total Reply(0) Reply
  • Ali Liton ১৬ অক্টোবর, ২০২০, ৩:১৯ এএম says : 0
    খাল কেটে কুমির আনলো বাংলাদেশ রেজাল্ট খুব তাড়াতাড়ি পাবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Umme Islam ১৬ অক্টোবর, ২০২০, ৩:১৯ এএম says : 0
    রোহিঙ্গাদের মায়ানমারে না পাঠালে আমাদের দেশে এক সময় হুমকি হয়ে দাড়াবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Azizul Molla ১৬ অক্টোবর, ২০২০, ৩:২১ এএম says : 0
    আমি দেখতে পাচ্ছি বর্তমানে বাংলাদেশের উন্নতি আগের থেকে অনেক এগিয়ে গিয়েছে। তুরস্কের সংগে আমেরিকার সংগে চিনের বন্ধুত যে ভাবে বিস্তার হচ্ছে। বাংলাদেশ একটি শক্তিশালী দেশে পরিনত হতে বেশি সময় লাগবে না। কিন্তু একটা দুখ‍্যের বিষয়। আমার অনুরোধ মানোনিয় শেখ হাসিনার কাছে আপনার মোনত্রিদের উপরে নজর দিতে হবে।কমবেশি দুর্নীতিবাজদের। দূর্নীতি বন্ধ কোরতে হবে।তাহলেই সামনের দিকে বাংলাদেশের উন্নতি কেউ ধোরে রাখতে পারবেনা ইনশাআল্লাহ।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: যুক্তরাষ্ট্র


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ