ঠাকুরগাঁওয়ে জামাতা পশিরুলকে পৈশাচিক কায়দায় হত্যার দায়ে শ্বশুর নুরুল হক (৬০) কে আমৃত্যু ফাঁসিতে ঝুঁলিয়ে মৃত্যুদন্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ বিএম তারিকুল কবীর এই রায় প্রদান করেন। সেই সাথে মামলার অপর আসামি শ্বাশুড়ি মাজেদা বেগম, স্ত্রী নার্গিস বেগম, শ্যালক মাজেদুল হককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরোও ৬ মাসের সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত হয়েছেন। অপর আসামী শাপলা বেগমের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া থানার উত্তর ফরিদপুর গ্রামের নুরুল হকের বড় মেয়ে সাহেরা খাতুন নির্জন বাড়িতে খুন হলে ওই মামলায় ছোট জামাতা পশিরুল ও তার পরিবারের কয়েকজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। সেই মামলায় পশিরুল ৬ মাস হাজতে থাকার পর আদালত থেকে জামিনে মুক্ত হয়ে বাসায় যান।

এ ঘটনার জেরে ২০১১ সালের ১২ আগস্ট সন্ধ্যায় স্ত্রী নার্গিস বেগম তার স্বামী পশিরুল ইসলাম (২৮) কে বাড়িতে ডেকে নিয়ে যান। পরিবারের লোকজন পরিকল্পিতভাবে পশিরুলকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে ঘরের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে পৈশাচিক কায়দায় গলা, হাত, পা ইত্যাদি ছুরি দিয়ে কেটে কেটে হত্যা করে। এই ঘটনায় পশিরুলের বাবা লেদা মোহাম্মদ বাদী হয়ে পর দিন মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত আসামী নুরুল হকসহ ৬ জনের নামে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে সরকারী কৌশলী পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ বলেন, পৈশাচিক হত্যাকান্ডের বিরুদ্ধে এ রায় একটা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। অন্যদিকে আসামি পক্ষে স্টেট ডিফেন্স সূত্রে নিয়োজিত আইনজীবী অ্যাডভোকেট ড. জয়নাল আবেদিন জয় তার প্রতিক্রিয়ায় জানান, আসামিপক্ষ হতদরিদ্র এবং সামাজিকভাবে নানা অবিচারের মুখোমুখি ছিলো। যার মৃত্যুদন্ড হলো তার কন্যাকেই হত্যা করা হয় এবং মানসিক বিকারগস্ত হয়ে তিনি আদালতে স্বীকারোক্তি প্রদান করেন। তাই এই রায়ে বাস্তব অবস্থার প্রতিফলন ঘটেনি, সেকারণে আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করবো।