বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার-টেবলাই ব্রিটিশ সড়কে গাড়িতে চলা তো দূরের কথা, পায়ে হেটে চলাই দায়। নাভিশ্বাস উঠেছে ওই রাস্তা ব্যবহারকারীদের। সংষ্কারে ধীরগতির কারণে রাস্তাটি এখন জনগণের কাছে বিষফোঁড়া। হতাশ ও ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী রাস্তাটির কাজ দ্রæত সম্পন্ন দাবি করেছেন।
২০১৬-১৭ অর্থ বছরে সড়কের সংষ্কারের কাজ পায় স্থানীয় এক ঠিকাদার। কিন্তু বড় বাজেটের প্রকল্পের কাজ করতে স্থানীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান অনাগ্রহী হলে পুনরায় টেন্ডার হয়। পরবর্তীতে ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে দোয়ারাবাজার-ব্রিটিশ পয়েন্ট হয়ে বালিউড়া বাজার পর্যন্ত ১০ হাজার ৬শ’ মিটার সড়কের সংষ্কার কাজ পায় মাদারীপুরের সালেহ এন্ড ব্রাদাস নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ব্যয় ধরা হয় ২২ কোটি টাকা। ২০১৮ সালের ২০ অক্টোবর সংষ্কার কাজের ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক।
দীর্ঘ ভোগান্তির পর চলাচল অনুপযোগী এ সড়কটির সংষ্কার কাজ শুরু হলে আশার সঞ্চার হয় এলাকাবাসীর মনে। কিন্তু শুরু থেকেই সড়কটির সংষ্কার কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠে। নিম্নমানের পাথর, বালু, সিমেন্ট ও ইট কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্তাধিকারী সালেহ ইসলাম নিজে না এসে তার নিযুক্ত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে কাজ করাচ্ছেন। সংষ্কার কাজে অনিয়মের কারণে ইতোমধ্যেই একবার কাজ বন্ধ করে দেয় উপজেলা এলজিইডি। পরে নানান অজুহাতে দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ থাকার পর স¤প্রতি আবারও সংষ্কার কাজ শুরু হয়। কাজের ধীরগতি ও সময়ক্ষেপনে হতাশ এ অঞ্চলের মানুষ।
স্থানীয়রা বলেন, সড়কের বেহাল অবস্থার কারণে আমরা পায়ে হেঁটে চলাচল করছি বহু আগ থেকে। সড়কে যে পরিমাণের গর্ত তাতে এখন পায়ে হাঁটাও মুশকিল। যাদের নৌকা আছে তারা নৌকা দিয়ে দোয়ারাবাজার আসা যাওয়া করে। টেবলাইয়ের শফিকুল ইসলাম জানান, অত্যন্ত নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে শুরু থেকে সংষ্কার কাজ চলছে। গাডওয়াল ও আরসিসি কাজে পর্যাপ্ত সিমেন্ট দেয়া হয়নি, পাথরেও ভেজাল।
ছাতক-দোয়ারা সড়কের মাঝেরগাঁও পয়েন্ট থেকে নির্মানাধীন সড়কে যাত্রীবহনকারী মোটরসাইকেল চালকরা জানান, সড়কটি বহুদিন ধরে সংষ্কারের কাজ চলছে। কখন যে কাজ শেষ হবে আল্লাই ভাল জানেন। কিন্তু দ্রæত সংষ্কার কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় চরম দুভোর্গে পড়েছেন এ অঞ্চলের মানুষ। সড়ক যানচলাচলের উপযোগি না হওয়ায় তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন মোটরসাইকেল দিয়ে যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছে দিচ্ছেন। মাঝে মধ্যে তারা রোগী বহন করে হাসপাতালে নিতে হয়। ভাঙা রাস্তায় যাত্রী নিয়ে একবার যাতায়াত করলে পরের বার শরীর আর মানে না।
দোয়ারাবাজার সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল বারী বলেন, উপজেলার মাসিক সমন্বয় সভায় সড়কের কাজের গুণগত মানের বিষয় নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়। তার পরও কাজের অগ্রগতি নেই। তিনি আরও বলেন, ছাতকের নোয়ারাই ইউনিয়নের আংশিক, দোয়ারাবাজার উপজেলার নরসিংপুর ইউনিয়ন ও দোয়ারা সদর এবং বোগলা ইউনিয়নের আংশিক এলাকার প্রায় লাখো মানুষ এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে থাকেন। সড়কে কাজের অগ্রগতি না থাকায় কষ্ট করে চলাচল করছে মানুষ।
প্রকল্প সুপার ভাইজার পরিচয় দিয়ে সাইফুল ইসলাম বলেন, কাজে কোন অনিয়ম হচ্ছে না। এলসি পাথর, ফ্রেস বালু ও উন্নতমানের ইট দিয়ে কাজ হচ্ছে। সালেহ এন্ড ব্রাদার্স ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সত্ত¡াধিকারী সালেহ ইসলাম জানান, করোনা, বন্যা ও পাথর সঙ্কটের কারণে কাজের সামন্য ব্যাঘাতের সৃষ্টি হলেও এখন পুরোদমে কাজ চলছে। ১০হাজার ৬শ’ মিটারের মধ্যে এ পর্যন্ত সড়কে ৪০ভাগ সংষ্কার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকী কাজ দ্রæত সম্পন্নের দিকে। নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার তিনি অস্বীকার করেন। তিনি জানান, ৪দফা বন্যার পানির প্রবল স্্েরাতে সড়কের বিভিন্ন স্থান থেকে মাটি সরে গেছে, গাইডওয়ালেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলার এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী দেবতোষ পাল জানান, প্রকল্পটি প্রায় ২২ কোটি টাকার। সড়কে এ পর্যন্ত প্রায় ৩৫ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি কাজ চলমান রয়েছে। প্রত্যেহ এ কাজের তদারকি করা হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।