নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
লম্বা সময় পর জাতীয় দলের জার্সিতে খেলতে নেমে কাক্সিক্ষত পারফরম্যান্স দেখাতে পারলেন না দুদলের খেলোয়াড়রা। ভুগলেন ছন্দের অভাবে। তারপরও লিওনেল মেসির দুর্দান্ত স্পট কিকে ইকুয়েডরের বিপক্ষে জয় তুলে নিয়ে ২০২২ কাতার বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে শুভ সূচনা করল আর্জেন্টিনা। গতকাল ভোরে বুয়েন্স এইরেসে নিজেদের মাঠে ইকুয়েডরকে ১-০ গোলে হারিয়েছে আর্জেন্টিনা। ম্যাচের প্রথমার্ধে স্পট-কিক থেকে জয়সূচক গোলটি করলেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক।
ম্যাচজুড়ে ফুটবলারদের মধ্যে বোঝাপড়ার ঘাটতি ছিল স্পষ্ট। ফলে আক্রমণ দানা বেঁধেছে অল্পসল্প। আর্জেন্টিনা মোট আটটি শট নেয়, যার মাত্র দুটি ছিল লক্ষ্যে। আর অতিথি ইকুয়েডর একবারের জন্য পরীক্ষায় ফেলতে পারেনি স্বাগতিক গোলরক্ষক ফ্রাঙ্কো আরমানিকে। কারণ তাদের একটি শটও লক্ষ্যে ছিল না।
শুরুতে সফরকারীদের চেপে ধরা লিওনেল স্কালোনির দল এগিয়ে যায় ম্যাচের ১৩তম মিনিটে। ডি-বক্সে সেভিয়া ফরোয়ার্ড লুকাস ওকাম্পোসকে বাজেভাবে ফাউল করে বসেন ডিফেন্ডার পের্ভিস এস্তুপিনা। সঙ্গে সঙ্গে রেফারি বাজান পেনাল্টির বাঁশি। স্পট-কিকে জোরালো শটে লক্ষ্যভেদ করেন আর্জেন্টাইন দলনেতা মেসি। এরপর খেই হারিয়ে ফেলে আর্জেন্টিনা। ইকুয়েডর অবশ্য সুযোগটা নিতে পারেনি। গোলপোস্টের কাছাকাছি গিয়ে এলোমেলো হয়ে পড়ছিল তারাও। ফলে প্রথমার্ধে আর কোনো উল্লেখযোগ্য আক্রমণ বা সুযোগ তৈরি করতে পারেনি কেউ।
দ্বিতীয়ার্ধের তৃতীয় মিনিটে ব্যবধান বাড়ানোর সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করেন ওকাম্পোস। ইন্টার মিলান ফরোয়ার্ড লাউতারো মার্তিনেজের হেড ডি-বক্সের ভেতরে খুঁজে নিয়েছিল তাকে। কিন্তু ফাঁকায় থেকেও নিশানা ভেদ করতে পারেননি তিনি। তার শট ঝাঁপিয়ে পড়ে রক্ষা করেন ইকুয়েডর গোলরক্ষক আলেক্সসান্দার দমিঙ্গেজ। এই আক্রমণের পর প্রথমার্ধের মতো ছন্দ হারান মেসি-মার্তিনেজরা। ইকুয়েডরও পারেনি ঘুরে দাঁড়াতে। ফলে ম্যাচের স্কোরলাইনে আসেনি কোনো পরিবর্তন।
৬৭তম মিনিটে বাঁ প্রান্ত থেকে এস্তুপিনার ক্রস দ্বিতীয়বারের চেষ্টায় লুফে নেন আরমানি। এরপর যোগ করা সময়ের শেষ মিনিটে মেসির কাছ থেকে বল পেয়ে ২০ গজ দ‚র থেকে শট নেন রদ্রিগো দে পল। তবে তা অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
কাক্সিক্ষত জয় মিলেছে, কিন্তু প্রত্যাশা অনুযায়ী হয়নি পারফরম্যান্স। কাতার বিশ্বকাপ বাছাইয়ের শুরুতে পুরো তিন পয়েন্ট মিললেও তাই পুরোপুরি সন্তুষ্ট হতে পারছেন না মেসি। মাঠে নিজেদের পুরোপুরি মেলে ধরতে না পারার জন্য আর্জেন্টিনা অধিনায়ক বললেন, করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে লম্বা বিরতি আর উদ্বেগের কথা।
লাতিন আমেরিকা অঞ্চলের বাছাইপর্ব শুরু হওয়ার কথা ছিল গত মার্চে। কিন্তু বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে তা পিছিয়ে যায় দুই দফা। দুই দলই এদিন ম্যাচ খেলতে নেমেছিল প্রায় এক বছর পর। ম্যাচ শেষের প্রতিক্রিয়ায় মেসি জানান, দীর্ঘদিন পর ম্যাচ হওয়ায় তাদের মাঝে এক ধরনের উদ্বেগ কাজ করছিল, ‘আমরা আশা করেছিলাম, খেলা অন্যরকম হবে। তবে এটা স্বাভাবিক। কারণ, দীর্ঘ সময় আমরা একসঙ্গে খেলিনি। প্রায় এক বছর পর খেললাম আমরা। উদ্বেগ প্রভাব ফেলেছে আমাদের খেলায়।’
গত বিশ্বকাপের বাছাই পেরুতে ঘাম ছুটে গিয়েছিল আর্জেন্টিনার। শেষ ম্যাচে মেসির অসাধারণ হ্যাটট্রিকে একুয়েডরকে ৩-১ ব্যবধানে হারিয়ে রাশিয়ার টিকেট পেয়েছিল তারা। এবারও বাছাইয়ের পথচলা কঠিন হবে বলে মনে করছেন মেসি, ‘জয় দিয়ে বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব শুরু করা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কারণ, আমরা জানি, বাছাইপর্ব কতটা কঠিন। সামনের সব ম্যাচই এই ম্যাচের মতো কঠিন হবে।’
তবে ফুটবলকে ধ্যানজ্ঞান করা মেসির ফুটবলে থাকাটাই আনন্দ- আরো অনেকবারের মতো এবারও জানিয়েছিলেন ম্যাচের আগে, ‘আমার থেকে সবকিছু নিন, তবে যদি পারেন ফুটবল ছেড়ে দিন। কারণ, ফুটবল আশা, ফুটবল আনন্দ। ফুটবল আমাদের একসঙ্গে উৎসব করার সুযোগ করে দেয়। আর্জেন্টিনা সবসময়ই ফুটবলের সমার্থক...আমরা ফুটবল ভালোবাসি। আমাদের আর্জেন্টাইনদের জীবনে যদি খারাপ কিছু ঘটে, আমরা সবসময় ঘুরে দাঁড়ানোর পথ খুঁজি, আরও উদ্যমী হয়ে ফেরার চেষ্টা করি। এখন আমার ফেরার সময় এসেছে।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।