Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নবান্ন অভিযান ঘিরে কলকাতায় বিজেপি-পুলিশ রণক্ষেত্র

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৮ অক্টোবর, ২০২০, ৯:২৯ পিএম

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে রাজ্য সচিবালয় ‘নবান্ন’ ঘেরাও কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বিজেপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। বিশেষ করে কলকাতা ও হাওড়ায় পথে পথে বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ হয়েছে পুলিশের। পুলিশের ব্যাপক লাঠিপেটা, কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ ও জলকামানের আঘাতে বহু বিজেপি নেতা-কর্মী আহত হয়।
বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) রাজ্য সচিবালয় নবান্ন ঘেরাওয়ের কর্মসূচি আগেই ঘোষণা করেছিল বিজেপি। সেই লক্ষ্য নিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় কলকাতা ও হাওড়ার চারটি প্রান্ত থেকে বিজেপির মিছিল বের হয়। চারটি মিছিলেরই গন্তব্য নবান্ন। রাজ্য সরকার এই অভিযান ব্যর্থ করার জন্য ৪ হাজার পুলিশ নিয়োগ করে। আনা হয় পুলিশের বিশেষ বাহিনী র‌্যাফও। কাঁদানে গ্যাস ছোড়ার পুলিশের বিশেষ বাহিনীকেও আনা হয়। রাখা হয় জলকামান। ফলে সকাল থেকে কলকাতা এবং হাওড়া কার্যত এক যুদ্ধ ক্ষেত্রের রূপ নেয়।
২০২১ সালের শুরুতে পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন। যত দিন এগিয়ে আসছে, রাজনীতির পারদও তত চড়ছে। দিকে দিকে বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষ হচ্ছে। একাধিক বিজেপি কর্মী খুন হয়েছেন। রাজ্য বিজেপির হিসেব অনুযায়ী গত কয়েক বছরে একশরও বেশি বিজেপি কর্মী রাজ্যে খুন হয়েছেন। সম্প্রতি টিটাগড়ে খুন হয়েছেন যুব বিজেপির বাহুবলী নেতা মনীশ শুক্ল। সামনে থেকে ১৪টি গুলি ছুড়ে হত্যা করা হয়েছে তাঁকে। সেই ঘটনায় সিআইডি দুইজনকে এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার করেছে। বিজেপির অভিযোগ তারা তৃণমূল আশ্রিত গুন্ডা।
বিজেপির আরও অভিযোগ, প্রশাসন এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের মদতেই একের পর এক খুন হচ্ছে। অন্যদিকে তৃণমূলের অভিযোগ, বিজেপি রাজ্যে সাম্প্রদায়িক অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে। অভিযোগ পাল্টা অভিযোগের মধ্যেই বৃহস্পতিবার রাজ্যের প্রশাসনিক সদরদপ্তর নবান্নে অভিযানের সিদ্ধান্ত নেয় বিজেপি।
এদিকে বুধবার বিকেলেই নোটিশ দিয়ে দুই দিন নবান্ন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত জানায় সরকার। নোটিশে বলা হয় স্যানিটাইজ করা হবে বলে নবান্ন বন্ধ রাখা হচ্ছে। সপ্তাহের মাঝখানে এভাবে নবান্ন বন্ধের সিদ্ধান্ত নজিরবিহীন। বিজেপির দাবি, ভয় পেয়েই সরকার নবান্ন বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিজেপির সর্বভারতীয় নেতা মুকুল রায় ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, “যুব মোর্চার মিছিলের ভয়েই মমতা নবান্ন বন্ধ করে দিয়েছেন। এমন ঘটনা রাজ্যের ইতিহাসে কখনও ঘটেনি।”
পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, হাওড়ার সাঁতরাগাছিতে পুলিশের সঙ্গে বিজেপি নেতা-কর্মীদের ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশ লাঠিপেটা করে বিজেপির মিছিল ছত্রভঙ্গ করতে চাইলে পুলিশ কেমিক্যাল মিশ্রিত বেগুনি রঙের পানি ছোড়ে জলকামান দিয়ে। এতে গুরুতর আহত হয় বিজেপি নেতা রাজু মুখোপাধ্যায়। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এতেও পুলিশ বিজেপি কর্মীদের থামাতে না পারলে ছোড়ে কাঁদানে গ্যাস। কাঁদানে গ্যাসের শেলে বহু বিজেপি কর্মী আহত হয়। একই চিত্র দেখা যায় হাওড়া ময়দান ও হেস্টিংস মোড়ে। এই দুই স্থানেও পুলিশ বিজেপি কর্মীদের খণ্ডযুদ্ধ চলে। কলকাতার বড় বাজার এবং সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ে ব্যাপক খণ্ডযুদ্ধ হয় পুলিশের সঙ্গে বিজেপি কর্মীদের। এ সময় বিজেপি কর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়ে। সূত্র: ডয়েচে ভেলে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পশ্চিম বঙ্গ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ