পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে রাজধানীর শাহবাগে সড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে। গতকাল সোমবার বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতৃত্বে সারাদিনব্যাপী আন্দোলন সংগ্রামে উত্তাল ছিলো শাহবাগ। নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন ও সিলেট এমসি কলেজে নববধূকে গণধর্ষণসহ সারাদেশে সংঘটিত ধর্ষণ-নিপীড়নের প্রতিবাদে শাহবাগ মোড় অবরোধ করে সম্মিলিত ছাত্র-জনতা। বিচার দাবিতে পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে ছাত্রদল। বিকেলে ঢাবি ক্যাম্পাস থেকে শাহবাগ পর্যন্ত লাঠি মিছিল করে ছাত্র ইউনিয়ন। প্রগতিশীল ছাত্রজোটসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের পক্ষ থেকেও জানানো হয় প্রতিবাদ।
বেলা ১১টায় ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূরের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা শাহবাগ মোড়ে বিক্ষোভ করেন। দুপুর ১২টার দিকে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এসে তারা সমাবেশ করেন তারা। প্রগতিশীল ছাত্রজোটের ব্যানারে মিছিল নিয়ে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা। এদিকে রাজধানীর উত্তরা ও নারায়ণগঞ্জসহ সারাদেশেই বিক্ষোভ কর্মসূচির খবর পাওয়া গেছে।শাহবাগে বিক্ষোভ সমাবেশে শ্রমিক অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক আব্দুর রহমান বলেন, আমরা ধর্ষিত হয়েছি ২০১৮ সালের নির্বাচনেও। সে সময় সুবর্ণচরে নারী ধর্ষণের ঘটনার বিচার হয়নি। দীর্ঘদিনের বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণে এই রাষ্ট্রে ধর্ষণ-শ্লীলতাহানির বিচার হয় না।
ছাত্র অধিকার পরিষদ নেতা শহীদুল হক বলেন, প্রতিবারই আমরা বিচারের দাবিতে রাস্তায় নামি, তারপর টনক নড়ে। এবার নোয়াখালীর নারী ধর্ষণচেষ্টার ঘটনা ৩২ দিন আগের। এতদিন কিছুই হয়নি জড়িতদের। যখন বিষয়টি সোশ্যাল মিডিয়ায় আসে, প্রতিবাদ শুরু হলো তখন টনক নড়ল। ধর্ষক গ্রেফতার হলো।
বেলা সাড়ে ১১টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। ঢাবি শাখা ছাত্রদলের আহবায়ক মো. রাকিবুল ইসলাম রাকিবের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব মো. আমানউল্লাহ আমানের সঞ্চালনায় সমাবেশে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল, সিনিয়র সহসভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, আশরাফুল আলম ফকির লিংকন, মামুন খান, মাজেদুল ইসলাম রুমন, মোস্তাফিজুর রহমান, কেএম মুসাব্বির সাফি, পার্থদেব মন্ডল, মোক্তাদির হোসাইন তরু, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক আমিনুর রহমান আমিন, তবিবুর রহমান সাগর, এবিএম মাহমুদ সরদার, আরিফুল হক, নিজামুদ্দীন রিপন, শ্যামল মালুম, মারুফ এলাহী রনি, মাহবুব মিয়া, সহসাধারণ সম্পাদক, মাইনুদ্দিন নিলয়, সুলতানা জেসমিন জুঁই, শাহাদাত হোসেন, ঢাবি যুগ্ম আহবায়ক আকতার হোসেন, নাছিরউদ্দীন নাছির, আশরাফুল ইসলাম আনিকসহ অন্যান্য যুগ্ম আহবায়ক, আহবায়ক কমিটির সদস্য, বিভিন্ন হলের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা অংশ নেয়। এসময় ছাত্রদলের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ, সরকারি বাঙলা কলেজ, তেজগাঁও কলেজ, কবি নজরুল কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজসহ বিভিন্ন ইউনিটের পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
ছাত্রদল নেতারা নোয়াখালীতে গৃহবধুকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন ও ধর্ষণচেষ্টায় আওয়ামী যুবলীগ নেতাকর্মীরা জড়িত দাবি করে দোষীদের দ্রæত গ্রেফকতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। ছাত্রদল সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন বলেন, বাংলাদেশে যত ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে সবগুলোতেই আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সংগঠন জড়িত। এর আগে সিলেটের এমসি কলেজে ছাত্রলীগ ধর্ষণ করেছে। এই ধর্ষণ তাদের কাছে এখন স্বাভাবিক হয়ে গেছে। তারা এই কর্মের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখেছে। নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের ঘটনার মাধ্যমে সেটা বোঝা যায়। তিনি বলেন, ছাত্রলীগের ধর্ষণের বিরুদ্ধে ছাত্রদলের প্রতিবাদ সমাবেশে সমাবেশে ছাত্রলীগের হামলায় আহত হয়েছে অনেক নেতাকর্মী। আমরা হামলাকারীদের বিচার দাবি করছি।
ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের আহ্বান: শাহবাগের সমাবেশে নুর বলেন, ৩১ ডিসেম্বর নোয়াখালীতে চার সন্তানের জননীকে ধর্ষণের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে। আর ধর্ষকরাই আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রেখেছে। তিনি বলেন, আওয়ামীলীগ দীর্ঘদিন অগণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতায় থাকার ফলে সারাদেশে একটি দুর্বৃত্তায়নের শ্রেণী তৈরী হয়েছে। আমাদের দুর্বলতার কারণেই ধর্ষকদের পৃষ্ঠপোষক দুর্নীতিবাজ সরকার ক্ষমতায় ঠিকে আছে। এখন ঐক্যবদ্ধ লড়াই প্রয়োজন এ রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য।
এদিকে ধর্ষকের সর্বচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ডের দাবিতে ঢাবির সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাষ্কর্যে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছে ৬ শিক্ষার্থী। তারা হলেন, ইমাম হাসান, শাকিবুল ইসলাম, সোয়েব আহমেদ সজিব, লিমন শিকদার, মেহেদী হাসান, মাসুম বিল্লাহ। তারা সবাই ছাত্রলীগকর্মী বলে পরিচিত।
উত্তরায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ
সিলেটে এমসি কলেজে নববধূকে গণধর্ষণ ও নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে এক নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনার প্রতিবাদে রাজধানীর উত্তরায় বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা। ধর্ষকদের বিচার দাবিতে সোমবার দুপুরে হাউজ বিল্ডিং চৌরাস্তা এলাকায় তারা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন। এসময় ছাত্র-ছাত্রীরা ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগান দেন। এদিকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে মহাসড়কের দুই পাশে যান চলাচলে ধীরগতি লক্ষ্য করা গেছে। এতে প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে যানজট তৈরি হয়েছে। কয়েক ঘন্টা পর যানজট মুক্ত হয় ওই এলাকা।
উত্তরা ইউনিভার্সিটির ছাত্র শৈবাল বলেন, সিলেটে এমসি কলেজে নববধূকে গণধর্ষণ ও নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে এক নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে আমরা আন্দোলনে নেমেছি।
এশিয়ান ইউনিভার্সিটির ছাত্রী রত্মা বলেন, ধর্ষক ও নির্যাতনকারীদের শাস্তির দাবিতে আমরা রাজপথে নেমেছি। তাদের শাস্তি নিশ্চিত করেই ঘরে ফিরব ইনশাআল্লাহ।
উত্তরা জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার শচীন মৌলিক বলেন, মহাসড়ক ছেড়ে দিতে ছাত্র-ছাত্রীদের অনুরোধ করছি। তবে বিশৃঙ্খলা করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আজ গণঅবস্থান; নোয়াখালিতে গণধর্ষণের সাথে জড়িত সকল অপরাধীর গ্রেফতার ও বিচারের দাবীতে নিয়ে যৌন নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থীজোট আজ মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় শাহবাগে এক গণঅবস্থানের ডাক দিয়েছে। সাংবাদিকদের কাছে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটির আহ্বায়ক শিবলী হাসান এতথ্য জানান।
রাবি সংবাদদাতা জানান, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে ধর্ষণ চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে মধ্যযুগীয় কায়দায় বর্বর নির্যাতন ও শ্লীলতাহানির ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের দাবিতে মানববন্ধন করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা। গতকাল ১১টা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ফেস্টুন ও প্লাকার্ড নিয়ে নারীর প্রতি সহিংসতা ও ধর্ষণের প্রতিবাদ জানান তারা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।