পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
আজারবাইজানের সেনাবাহিনী রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে শত্রæদের হাত থেকে নাগার্নো কারাবাখের টের্টার জেলার তালিশ গ্রাম, জাব্রাইল জেলার মেহদিলি, চক্সিরলি, আশাগি ম্যারালিয়ান, শেবি, গাইজাগ ও ফিজুলি জেলার আশাগি আবদুররহমানিয়ালি গ্রাম মুক্ত করেছে বলে দাবি করেছে। টানা এক সপ্তাহের সংঘর্ষের পর আর্মেনিয়ার দখল থেকে মাদাগিজ শহরের পর নিজেদের আরো সাতটি এলাকা মুক্ত করেছে আজারবাইজানের সেনাবাহিনী। শনিবার আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম অ্যালিয়েভ এই ঘোষণা দেন। দক্ষিণ ককেশাসের বিরোধপ‚র্ণ এলাকা নগরনো-কারাবাখকে কেন্দ্র করে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে কয়েক দিন ধরে তীব্র লড়াই চলছে। এই অঞ্চল নিয়ে দুটি দেশের মধ্যে এর আগেও থেকে থেকে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে, সামরিক সংঘাতও হয়েছে, কিন্তু সেগুলো সবই ছিল সীমিত পরিসরে। এর আগে প্রেসিডেন্ট অ্যালিয়েভ ঘোষণা করেছিলেন যে, (শত্রæদের হাত থেকে মুক্ত করে) মাদাগিজ শহরে পতাকা উত্তোলন করেছে আজারবাইজানের সেনারা। টুইটারে তিনি লেখেন, আজ আজারবাইজানের সেনাবাহিনী মাদাগিজের ওপরে আমাদের পতাকা উত্তোলন করেছে। মাদাগিজ এখন আমাদের। গত ২৭ সেপ্টেম্বর নাগার্নো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে ফের সংঘর্ষে জড়ায় আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজানের সশস্ত্র বাহিনী। এদিকে আর্মেনিয়া জানিয়েছে, তাদের আরো ৫১ জন সেনা নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে দেশটির মোট ২০৭ জন সেনা নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ডয়চে ভেলের খবরে বলা হয়, যুদ্ধবিরতির আহŸান উপেক্ষা করে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান। বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা। হামলা নিয়ে দুই পক্ষের পালটা দাবিতে সংকট আরো বাড়ছে। সপ্তাহ পেরুতে চললেও বিতর্কিত নাগার্নো-কারাবাখ নিয়ে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে লড়াই অব্যাহত রয়েছে। এরইমধ্যে ২৩০ জনের বেশি প্রাণ হারিয়েছেন। রোববার আজারবাইজান তাদের দ্বিতীয় বৃহৎ শহর গানজাতে আর্মেনিয়ার সেনাবাহিনী হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছে। পাশপাশি নগরনো-কারাবাখের সীমান্তবর্তী তাদের আরো দুটি শহরে গোলা বর্ষণের অভিযোগ করেছেন আজেরি প্রতিরক্ষামন্ত্রী। এতে দুই দেশের যুদ্ধ পরিস্থিতি আরো খারাপ দিকে মোড় নেয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আজারবাইজানের এই দাবি অস্বীকার করেছে আর্মেনিয়া। তবে নাগার্নো-কারাবাখে তাদের সমর্থিত আর্মেনিয়ানদের প্রধান আরাইক হারুতিউনইয়ান গানজা শহরেতে একটি বিমান ঘাঁটিতে হামলার কথা স্বীকার করেছেন। আজারবাইজানের সামরিক বাহিনী নাগার্নো-কারাবাখের প্রধান শহর স্টেপানকার্টে বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে রকেট হামলা চালিয়েছে বলে পালটা অভিযোগ করেন তিনি। এর আগে বিতর্কিত অঞ্চলটির একটি শহর ও সাতটি গ্রাম দখলে নেয়ার দাবি করে আজারবাইজন। অন্যদিকে নাগার্নো-কারাবাখে বসবাসরত আর্মেনিয়দের সুরক্ষায় সব ধরনের উপায় ব্যবহার করা হবে বলে জানিয়েছে আর্মেনিয়া। আজারবাইজানের তিনটি বিমান ভ‚পাতিত করার দাবিও করেছেন দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সুশান স্টেপানিয়ান, যদিও এই তথ্য অস্বীকার করেছে বাকু। এদিকে যুদ্ধবিরতির জন্য ফ্রান্স মধ্যস্থতার উদ্যোগ নিলেও তাতে কাজ হয়নি। দুই পক্ষই লড়াই চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছে। বিতর্কিত অঞ্চল নগরনো-কারাবাখ নিয়ে গত রোববার দুই প্রতিবেশি রাষ্ট্রের মধ্যে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে। সোভিয়েত ইউনিয়ন পতনের পর থেকেই এই অঞ্চলে দুই দেশের বিরোধ চলছে। ১৯৯০ এর দশকে আর্মেনিয়ান নৃগোষ্ঠী আজারবাইজানের কাছ থেকে কারাবাখ দখল করে। এ নিয়ে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে সেসময়ই। শুরু হয় যুদ্ধ, যাতে প্রাণ হারিয়েছেন ৩০ হাজার মানুষ। ১৯৯৪ সালে দুই পক্ষের মধ্য যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সরাসরি সংঘাতের ইতি ঘটলেও এ নিয়ে দুইদেশের বিবাদ অব্যাহত ছিল। নিজেদের অঞ্চল পুনরায় দখলে বেশ কয়েকবারই হুমকি দিয়েছে আজারবাইজান। গত রোববার নতুন করে শুরু হওয়া সংঘাতে তুরস্ক ও রাশিয়ার মতো আঞ্চলিক শক্তি জড়িয়ে পড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এরইমধ্যে তুরস্ক সরাসরি আজারবাইজানের পক্ষ নিয়েছে। ডেইলি সাবাহ, ডয়চে ভেলে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।