নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
অনেকটা অনুমিতই ছিল। সময় গড়ানোর সঙ্গে বাড়ছিল সফর না হওয়ার শঙ্কা। শেষ পর্যন্ত সেটিই সত্যি হলো। দুই সপ্তাহ টানাপোড়েনের পর এলো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। দু-পক্ষের টানাপোড়েনে কাটা পড়ল আরেকটি ক্রিকেটীয় সফর। বাংলাদেশের চাহিদা অনুযায়ী কোয়ারেন্টিনের শর্ত নিয়ে আগের অবস্থান বদলায়নি শ্রীলঙ্কার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। বিসিবিও তাই শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটকে (এসএলসি) জানিয়ে দিয়েছে, পরে সুবিধাজনক সময়ে নতুন স‚চিতে সিরিজ আয়োজন করতে। মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৪তম জন্মদিন উপলক্ষে বিসিবি আয়োজিত অনুষ্ঠান শেষে গণমাধ্যমকে এ কথা জানান তিনি।
যদি সবকিছু ঠিকঠাক থাকত হবে এই মুহূর্তে শ্রীলঙ্কায় থাকার কথা ছিল মুশফিক-তামিম-মুমিনুলদের। চলতি মাসে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ হিসেবে তিন টেস্টের সিরিজ খেলতে দ্বীপ দেশটিতে যাওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশের। সেখানেই মাসখানেক অনুশীলন শেষে সিরিজ খেলার কথা ছিল মুমিনুল হকের দলের। তবে শ্রীলঙ্কার কোভিড-১৯ টাস্কফোর্সের কঠোর কোয়ারেন্টাইন বিধির মেনে সফর করতে রাজী হয়নি বিসিবি। বাংলাদেশের চাওয়া বিবেচনা করে লঙ্কান ক্রিকেট বোর্ড একাধিক সভা করেছে তাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে। কিন্তু তাতেও ফল আসেনি। কোয়ারেন্টিনের সময় না কমানোয় তাই আর সফরটি করছে না বাংলাদেশ।
শ্রীলঙ্কা সফর করতে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের সেখানে গিয়েই ১৪ দিনের কঠোর কোয়ারেন্টিনের নিয়ম দিয়েছিল দেশটি। কোয়ারেন্টিনে রাজী হলেও বিসিবি চেয়েছিল, এই সময় সুযোগ দেওয়া হোক অনুশীলনের। কিন্তু কোয়ারেন্টিনের সময়কালে হোটেল কক্ষ থেকে বের না হওয়ার নিয়ম রয়েছে তাদের কোভিড-১৯ বিধিমালায়। তবে পরবর্তীতে পরিস্থিতি ঠিক হলে এ সফর নিয়ে চিন্তা করবেন বলে জানান বিসিবি প্রধান, ‘শ্রীলংকা আমাদেরকে সফরের বিধি-নিষেধ নিয়ে একটি শর্ত পাঠিয়েছিল। আমরা আমরা সেটি পর্যালোচনা করে দেখেছি ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থেকে সফর করা সম্ভব না। ওদের জানানোর পর তারা সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে। কিন্তু ওদের সরকারের নিয়ম অনুযায়ী ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইন বাধ্যতামূলক। এটা মানতেই হবে। এই মুহূর্তে ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থেকে সফর করা সম্ভব না। ক্রিকেটারদের মানসিক অবস্থা থাকবে না ক্রিকেট খেলার। এজন্য আমরা সফরে যেতে রাজি নই। পরিস্থিতি যখন ভালো হবে তখন আমরা নতুন করে সফর নিয়ে ভাববো।’
নতুন স‚চিতে বাংলাদেশের রওনা হওয়ার কথা ছিল গত রোববার। কিন্তু শ্রীলঙ্কার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন নিয়ম নিয়ে বাধে গোল। গত ১৪ সেপ্টেম্বর বিসিবি প্রধান জানান, এত লম্বা সময় কোয়ারেন্টাইন করে টেস্ট সিরিজের প্রস্তুতি সম্ভব নয়। বিসিবি তাই লঙ্কান বোর্ডকে অনুরোধ করে কোয়ারেন্টিনের সময় কমাতে। এরপর এসএলসি ও শ্রীলঙ্কার ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের নানা তৎপরতার খবর এসেছে শ্রীলঙ্কার সংবাদমাধ্যমে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাতে কাজ হয়নি বলেই জানালেন বিসিবি সভাপতি, ‘ওদের ক্রিকেট বোর্ড, ওদের ক্রীড়া মন্ত্রণালয় অনেক চেষ্টা করেছে। আমাদের মিনিমাম চাহিদা আমরা পাঠিয়েছিলাম। একটা ছাড়া বাকি সবগুলোতেই ওরা রাজি বলে আশ্বস্ত করেছে। কিন্তু ওই একটাই আসল। যেটা হচ্ছে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন। এটা শুধু আমাদের জন্য যে, যে কোনো টুরিস্টের জন্যই একই নিয়ম। এই জায়গায় ওরা বলেছে যে কিছুই করতে পারেনি। কালকেই (পরশু) এটা পেয়েছি, আজকে (গতকাল) ওদেরকে জানিয়ে দিয়েছি যে পরে সূচি আবার ঠিক করতে। যখন এই ধরনের শর্ত থাকবে না, তখন আমরা যাব।’
দেশ থেকে চার দফায় করোনাভাইরাস পরীক্ষা করিয়েই শ্রীলঙ্কায় যাওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশ দলের। ওখানে গিয়ে পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল আরেক দফা। তাই বিসিবির চাওয়া ছিল, কোয়ারেন্টাইন যেন সর্বোচ্চ সাত দিনের হয় এবং তিন দিনের পর থেকে যেন আলাদা থেকে অনুশীলনের সুযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু শ্রীলঙ্কার কতৃপক্ষ এখানে কোনো ছাড় দেয়নি, জানালেন নাজমুল হাসান। কেন এই কোয়ারেন্টাইন মেনে সফর করা সম্ভব না তাও ব্যাখ্যা করেছেন বোর্ড প্রধান, ‘সাধারণত কোয়ারেন্টাইন ও আইসোলেশন, দুইটা দুই জিনিস বলে আমরা ধরি। ওদের ওখানে ১৪ দিন আসলে আইসোলেশন। অন্যান্য জায়গায় যেটা কোয়ারেন্টাইন আছে, সেটার সঙ্গে এটার পার্থক্য আছে। এটা পূর্ণ আইসোলেশন, ঘর থেকেই বের হতে পারবে না। এই অবস্থায় ১৪ দিন ঘরে থাকলে একজন ক্রিকেটারের শারীরিক অবস্থা তো পরে, মানসিক যে অবস্থা হবে, সেটি ফিরে পেতেই অনেক সময় লাগবে। এই অবস্থায় তাই আর সুযোগ নেই সফরের। আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে দিয়েছি। ওদের কিছু করার থাকলে আগেই করত, অনেক সময় নিয়েছে এমনিতেই। আর কিছু হবে না।’
তবে শ্রীলঙ্কা সফর বাতিল হলেও ক্রিকেটারদের অনুশীলন চলতে থাকবে বলে জানালেন বিসিবি সভাপতি। জাতীয় দলের বিদেশি কোচিং স্টাফরাও থেকে যাবেন এখানে। ঘরোয়া ক্রিকেট শুরুর সম্ভাবনা এখন বেশ জোরালো। তার আগে হতে পারে ক্রিকেটারদের ছোট ছোট দলে ভাগ করে নতুন আঙ্গিকে কোনো টুর্নামেন্ট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।